Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঘুমের মধ্যেই না ফেরার দেশে চলচ্চিত্র নির্মাতা বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
১০ জুন ২০২১ ১৫:২৮

আরও এক মহীরূহের প্রয়াণ। এবার না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র পরিচালক ও সাহিত্যিক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সকাল ৬টার দিকে ঘুমের মধ্যেই দক্ষিণ কলকাতায় নিজের বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৭।

পরিবার সূত্রে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন বুদ্ধদেব বসু। কিডনির সমস্যাও ছিল তার। নিয়মিত ডায়ালিসিস হতো। বৃহস্পতিবার আরও এক দফায় ডায়ালিসিস হওয়ার কথা ছিল। সকালে স্ত্রী ডাকতে গিয়ে দেখেন, সাড়া মিলছে না প্রখ্যাত এই পরিচালকের। পরে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

বিজ্ঞাপন

বুদ্ধদেব বসুর প্রথম ফিচার ফিল্ম ‘দূরত্ব’, মুক্তি পায় ১৯৭৮ সালে। সেই শুরু। তারপর একের পর এক সিনেমা নির্মাণ করে গেছেন। ‘তাহাদের কথা’, ‘উত্তরা’, ‘চরাচর’, ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’, ‘বাঘ বাহাদুর’, ‘গৃহযুদ্ধ’-এর মতো অসামান্য সিনেমার জনক ছিলেন। ‘উত্তরা’, ‘তাহাদের কথা’-র জন্য পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন ও ঋত্বিক ঘটক উত্তর যুগে বাংলা সিনেমাকে বিশ্ব দরবারে যারা নিয়ে গিয়েছিলেন, বুদ্ধদেব তাদের একজন। চলচ্চিত্র সমালোচকদের মতে, ছবির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে ধরেছেন। নির্দিষ্ট, ধরাবাঁধা ছকে এগিয়ে যাননি। বরং ছক ভেঙে এগিয়ে যাওয়াই হয়ে উঠেছিল বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের স্বকীয়তা।

চলচ্চিত্র অঙ্গনই কেবল নয়, সাহিত্য জগতে, বিশেষ করে কবিতাতেও নিজস্ব স্থান ছিল তার। ‘রোবটের গান’, ‘ছাতা কাহিনি’, ‘ভোম্বলের আশ্চর্য কাহিনি ও অন্যান্য কবিতা’, ‘হিমজগ’, ‘কফিন কিংবা সুটকেস’, ‘গভীর আড়ালে’র মতো অসামান্য সব কাব্যগ্রন্থ উপহার দিয়ে গেছেন।

বিজ্ঞাপন

বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের মৃত্যুতে শোকের ছাড়া নেমে এসেছে সাহিত্য-চলচ্চিত্র অনুরাগীদের মধ্যে। শোক জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, সিনেমার ভাষায় গীতিময়তার সঞ্চার ঘটিয়েছেন বুদ্ধদেব। তার মৃত্যু চলচ্চিত্রজগতের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।

চলচ্চিত্রজগতে বুদ্ধদেবেরও অগ্রজ পরিচালক তরুণ মজুমদারও ভেঙে পড়েছেন তার মৃত্যুর সংবাদে। বলেন, ‘বড় ক্ষতি হয়ে গেল। আমি হতবাক।’ আরেক তারকা পরিচালক গৌতম ঘোষ বলেন, এই ভয়ংকর সময়ে এ খবর মর্মান্তিক। আমরা একসঙ্গে স্বপ্ন দেখছিলাম। তার চলচ্চিত্র যেন সংরক্ষিত হয়, সেই অনুরোধ আমার।

বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের দুইটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন টলিউড তারকা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ছোটবেলা থেকে বুদ্ধদার ছবি দেখছি। তার দেশের, তার ভাষার মানুষ হিসেবে গর্বিত। তিনি শিক্ষক ছিলেন, কবি ছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা, তার মতো ভালো মানুষ আমি কম দেখেছি। আমি সৌভাগ্যবান, বুদ্ধদার সঙ্গে দু’বার কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।

বুদ্ধদেবের ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’ চলচ্চিত্রের শিল্পী শ্রীলেখা মিত্র লিখেছেন, স্বল্পভাষী ছিলেন। নায়িকা ও অভিনেতাদের সঙ্গে কথা বলতেন শুধু কাজ নিয়ে। বাকি সময়টা নিজের মতো চুপচাপ থাকতেন। শিক্ষক হিসেবে ভীষণ ভালো ছিলেন। কাজের বিষয়ে ভীষণ খুঁতখুঁতেও ছিলেন। যেটা স্বাভাবিক, সেটাই ক্যামেরাবন্দি করতে ভালোবাসতেন।

সারাবাংলা/এএসজি/টিআর

চলচ্চিত্র নির্মাতা বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর