প্রতিবাদের মুখে অপসারণ ‘ঘটনা সত্য’, দুঃখপ্রকাশ নিশো-মেহজাবীনের
২৫ জুলাই ২০২১ ১৮:৩১
এবারের ঈদুল আজহা উপলক্ষে রুবেল হাসান নির্মিত নাটক ‘ঘটনা সত্য’ বিতর্ক ছড়িয়েছে। নাটকটির কাহিনীতে একপর্যায়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এক সন্তানের জন্ম হয়। সেই সন্তানকে তার মা-বাবার পাপের ফসল হিসেবে অভিহিত করা হয়। আর এই বিষয়টি নিয়েই সমালোচনায় মুখর নেটিজেনরা। ‘ঘটনা সত্য’ নাটকে এমন ভাবনার উপস্থাপনকে তারা মধ্যযুগীয় হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
‘ঘটনা সত্য’ নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন এ প্রজন্মের জনপ্রিয় দুই শিল্পী আফরান নিশো ও মেহজাবীন চৌধুরী। নাটকের গল্পে নিশো একজন ড্রাইভার, মেহজাবীন একজন গৃহকর্মী। তারা দু’জনেই দু’জনের মধ্যে অসততা অবলম্বন করেন। গল্পের এক পর্যায়ে তাদের বিয়ে হয় এবং একটি সন্তানের জন্ম দেন, যে সন্তানটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। এ ঘটনাকে নাটকের প্রধান দুই চরিত্রের ‘পাপের ফল’ হিসেবে দেখানো হয় গল্পে।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এমন ধ্যান-ধারণা তুলে ধরার তীব্র সমালোচনা করছেন নেট দুনিয়ার মানুষরা। এর শুরুটা করেন আমরিন জামান, যিনি নিজে একটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর জননী। নাটকটি দেখে তিনি এর রচয়িতা-নির্মাতাদের উদ্দেশে একটি ভিডিওবার্তা দেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নাটকটি নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, একটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর মা হিসেবে জানি আমাদের কী ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এখন নাটকের মতো শক্তিশালী মাধ্যমে এরকম ভাবনা তুলে ধরলে তা দেখে মানুষ কী শিক্ষা নেবে?
আমরিন জামানের ওই ভিডিওবার্তার পর থেকেই নেটিজেনরাও সরব হয়েছেন ‘ঘটনা সত্য’ নাটক নিয়ে। তাদের প্রতিবাদের মুখে এরই মধ্যে নাটকটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে সরিয়ে নিয়েছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভি। এ ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ও বলছে প্রতিষ্ঠানটি। দুঃখপ্রকাশ ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন আফরান নিশো ও মেহজাবীন। তারা জানিয়েছেন, নাটকটির প্রয়োজনীয় সংশোধনের কাজ চলছে।
নিশো ও মেহজাবীন লিখেছেন, ‘ঘটনা সত্য’ নাটকের নাট্যকার, পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পী ও কলাকুশলীদের পক্ষ থেকে আমরা গভীরভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি। আপনাদের অনেকেই জানিয়েছেন, এ নাটকের মাধ্যমে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগটির সঙ্গে আমরা সহমত পোষণ করছি। বিষয়টি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। যারা আমাদের নাটক ‘ঘটনা সত্য’র এ বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেছেন, সবাইকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানাই।
তারা বলেন, আমরা এটিও জানাতে চাই— প্রথম বার্তা পাওয়ার পরপরই আমরা উপলব্ধি করি, অনবধানতাবশত নাটকে আমরা ভুল একটি বার্তা দিয়েছিলাম। আমরা সঙ্গে সঙ্গেই নাটকটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেই। এখন নাটকটির প্রয়োজনীয় সংশোধনীর কাজ চলছে।
সারাবাংলা/এজেডএস