পলাশ বললেন, পদ্মাপুরাণ আন্তর্জাতিক মানের ছবি
৭ অক্টোবর ২০২১ ১৮:০১
শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সারাদেশে মুক্তি পাচ্ছে ‘পদ্মাপুরাণ’। ছবিটির মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে অভিষেক হচ্ছে রাশিদ পলাশের। আত্মবিশ্বাসী পলাশ ছবিটি নিয়ে কথা বললেন সারাবাংলার সঙ্গে।
প্রথম ছবি মুক্তির প্রাক্কালে ভয় লাগলেও আশাবাদী পলাশ। খুব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বললেন, তার ছবিটি আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে। কথাটি বলার কারণও ব্যাখা করলেন এভাবে, ‘আমাদের ছবির গল্প বলার ধরণ, মেকিং ও অন্যান্য বিষয় আন্তর্জাতিক মানের কোন ছবির চেয়ে কোন অংশে কম নয়। ছবিটি দেখার পর আমার এ কথার প্রমাণ পাবেন সবাই।’
‘পদ্মাপুরাণ’ কথা বলবে পদ্মার পারের মানুষের কথা। ভালোবাসার কথাও রয়েছে এতে। এর প্রধান চরিত্রে আছেন সাদিয়া আফরিন মাহি, প্রসূন আজাদ, সুমিত সেনগুপ্ত ও শম্পা রেজা।
সাদিয়া এ ছবির জন্য চুল বিসর্জন দিয়েছেন। প্রথমে রাজি থাকলেও পরবর্তীতে চুল ফেলতে চাচ্ছিলেন না তিনি। আবার গল্প, চরিত্র শুনে সেটে আসার পর ছবি করতে চাননি প্রসূন। তাদেরকে সামলানোর কৌশলটা কী ছিল?
‘কৌশল বলতে কিছুই না। তাদেরকে চরিত্রের গুরুত্ব বুঝিয়েছি। সাদিয়াকে বুঝিয়েছি শুটিং তো বেশ অনেকদিন হয়ে গেছে। এখন গল্পের প্রয়োজনে তার মাথার চুল ফেলতেই হবে। এছাড়া উপায় নেই। আর প্রসূনের ব্যাপার ছিল, তার চরিত্রে প্রচুর গালিগালাজ আছে। তার কারণে ও কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিল ওর পরিবার বিষয়টা কীভাবে নিবে। শেষ পর্যন্ত দুজনকেই আমরা সুন্দরভাবে বোঝাতে পেরেছিলাম’—বলেন পলাশ।
সাদিয়া ও প্রসূনকে চরিত্রগুলোর জন্য নেওয়ার কারণ জানালেন পলাশ। সাদিয়া পলাশের পরিচালনায় স্বল্পদৈর্ঘ্য ‘কবর’-এ অভিনয় করেছিলেন। ওখান থেকেই পরিচয় ছিল। এছাড়া ‘পদ্মাপুরাণ’-এর গল্পে নতুন মুখ দরকার ছিল। আবার যেহেতু সাদিয়ার সঙ্গে আগে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল, তাই তাকেই নেওয়া হয়। আর প্রসূণের ব্যাপারে বলেন, ‘ওই চরিত্রে ওকেই লাগতো আমাদের।’
ছবির শুটিং অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে জানালেন পদ্মার চরে আটকে পড়ার কথা।
‘পদ্মাপুরাণ’ ছবির প্রথম লটের শুটিং হয় রাজশাহীতে। দ্বিতীয় লট মানিকগঞ্জের কাছাকাছি একটা জায়গায়। মূল স্পট ছিল একটি চরে। যেখানে যেতে হত নৌকায় করে। একদম ভোর ছয়টায় রওনা দিয়ে সারাদিন শুটিং করতে হত। এরপর আবার সূর্য ডোবার সাথে সাথে প্যাকআপ করে আবার ফিরতে হত। এরকমই একদিন ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েছিল পুরো ইউনিট।
পলাশ বর্ণনা করলেন ঘটনাটি, ‘আমাকে ইউনিটের একজন বলেছিল, সেদিন ঘূর্ণিঝড় ফণী আসবে। ব্যস্ততার কারণে খুব একটা বুঝতে পারিনি। কিন্তু শুটিং শুরু করার পর ঝড় আসে। যে ঝড়ে আমাদের সেট পুরো তছনছ হয়ে যায়। আমরা ওই চরে বেশ কিছুক্ষণ আটকে পরি। পরে ট্রলারে করে শহরের একটা জায়গায় গিয়ে ইউনিট নিয়ে থাকি। চার দিন আমরা কোন শুটিং করতে পারিনি।’
তবে ‘ফণী’ ঝামেলা করলেও পুরো ইউনিটের কেউ তার সঙ্গে অসহযোগীতা করেনি। নবাগত সাদিয়া আফরিন মাহি, প্রসূন আজাদ, সুমিত কিংবা শম্পা রেজা সবাই তাকে অনেক সাহায্য করেছেন।
‘আমার সঙ্গে কেন জানি সবার দ্রুতই বোঝাপড়াটা হয়ে যায়। হয়তো আমি তাদের খুব সহজে চরিত্র ও গল্প বর্ণনা করতে পারি। আরেকটা বিষয় আমার সেটে সবাই স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারে’—বলেন রাশিদ পলাশ।
প্রথম ছবি সবাই চায় বেশি হলে মুক্তি দিতে। কিন্তু পলাশ তার ছবিটি শুধু সিনেপ্লেক্সগুলোতে মুক্তি দিচ্ছে। এর কারণ হিসেবে জানালেন, তার ছবি টার্গেট দর্শক হচ্ছে সিনেপ্লেক্সের দর্শক। সাধারণ দর্শক হয়তো তার ছবিটি ওইভাবে গ্রহণ করতে পারবে না। তাই এ সিদ্ধান্ত।
‘পদ্মাপুরাণ’ নয় ‘নাইওর’ প্রথম ছবি হওয়ার কথা ছিল পলাশের। সে ছবিটির সকল শিল্পীর শুটিং শেষ হয়ে গেলেও ছবিটির প্রযোজক এর একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত অংশের শুটিং শেষ করা যায়নি বলেই আপাতত ছবিটি মুক্তি দেওয়া যাচ্ছে না।
তবে পলাশের এ মুহুর্তে ধ্যান জ্ঞান ‘পদ্মাপুরাণ’। এরপর শেষ করবেন ‘প্রীতিলতা’। মাসের শেষ সপ্তাহে ‘প্রীতিলতা’র দ্বিতীয় লটের শুটিং হবে চট্টগ্রামে।
সারাবাংলা/এজেডএস