অসুস্থতার কারণে অনেক দিন ধরে কোন আয় রোজগার নেই সংগীতশিল্পী আকবরের। সে জন্য বাসায় সাবলেট দিয়েছেন। সে ভাড়াটিয়া তার বাসা থেকে চুরি করে পালিয়েছেন।
সারাবাংলাকে ঘটনাটি জানিয়েছেন আকবর। তিনি জানান, এটি সোমবারের (২৫ অক্টোবর) ঘটনা।
আকবর জানান, আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় অক্টোবর মাস থেকে তার বাসার একটি রুম এক দম্পতিকে ভাড়া দেন। শুরু থেকে বাসার টুকটাক জিনিস খোয়া যাচ্ছিলো। এরপরও কোন কিছু বলছিলেন না ভদ্রতার খাতিরে। কিন্তু সোমবার সকালে আকবরের স্ত্রী তার একমাত্র কন্যাকে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার পর ওই দম্পতি বাসার সবকিছু চুরি করে নিয়ে পালিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী সকাল বেলা বাসায় এসে বাসার সবকিছু এলোমেলো। একটা সুতা পর্যন্ত তারা রাখেননি। রান্না করার খুনতিটা পর্যন্ত তারা নিয়ে গেছেন। এখন আমি কীভাবে চলবো বলেন?’
ওই দম্পতির দুজনের মধ্যে পুরুষ ভাড়ায় গাড়ি চালান এবং তার স্ত্রী একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন, বলে তাদের জানিয়েছিলেন। পরবর্তীতে আকবর জানতে পারেন পুরুষটি নেশাখোর। আকবরের ধারণা নেশার টাকা জোগাড় করার জন্যই এ চুরি করেছেন লোকটি। আকবর খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন ওই দম্পতির বিরুদ্ধে আগের বাসায়ও চুরির অভিযোগ ছিল।
আইনি কোনো প্রদক্ষেপ নিয়েছেন কিনা?
‘আমি কয়েকমাস ধরে গ্রামের বাড়িতে। এখনও সুস্থ হয়নি। তাই গ্রামে এসেছিলাম। এ খবর শোনার পর এখন (সোমবার দুপুর) বাসে উঠবো। আমি বাড়িওলাকে জানিয়েছি,’— বলেন আকবর।
তিনি বেশ আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘আমি গত পাঁচ বছর ধরে অসুস্থ। বেশ কয়েকবার দেশ ও দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ দিন আগে সাইকেল থেকে পরে গিয়ে বাম পায়ে ব্যাথা পেয়েছি। আমার কিডনিতে সমস্যা থাকায় ডাক্তারের নিষেধাজ্ঞায় ব্যাথার ওষুধ খেতে পারছি না। আমার মনে হয় পাটা ভেঙ্গে গেছে। এর চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাবো, তখনই এরকম একটা ঘটনা ঘটালো তারা।’
আকবর জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার জন্য মোট ২৪ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দিয়েছিলেন। ওই সঞ্চয়পত্র থেকে মাসে মাসে একটা টাকা পান। সে টাকা ব্যতীত কোনো আয় নেই তার। চুরির ঘটনা তাকে বেশ বড় বিপদে ফেলে দিয়েছে।
২০১৭ সাল থেকে রক্তনালীর ইনফেকশন, ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে সে বছরই হানিফ সংকেতের সহায়তায় কেপিসি হাসপাতালের চিকিৎসায় সুস্থ হন আকবর। বছর দেড়েক পর আবার দেখা দেয় একই সমস্যা। এরপর পিজি থেকে চিকিৎসা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করেন। তবে কিছুদিন যেতে না যেতেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
হানিফ সংকেতের হাত ধরে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান ইত্যাদি’র মাধ্যমে রাতারাতি শিল্পীস্বীকৃতি পান কণ্ঠশিল্পী আকবর। তার কণ্ঠের বেশকিছু গান শ্রোতামহলে বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে ‘তোমার হাত পাখার বাতাসে’ গানটি বেশ জনপ্রিয়।