বাড়লো অনুদানের জন্য চিত্রনাট্য জমা দেওয়ার সময়
২৮ অক্টোবর ২০২১ ১৯:৫৪
২০২১-২২ অর্থ বছরে চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদানের জন্য চিত্রনাট্য ও প্রস্তাবনা জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব মো. সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সময় বাড়ানোর কথা জানানো হয়।
করোনার মহামারীর জন্য বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সময় বাড়ানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর জারি করা প্রজ্ঞাপনে চিত্রনাট্য জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ৩১ অক্টোবর। সে সময় বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩০ নভেম্বর।
সময় বাড়ানো হলেও চিত্রনাট্য ও প্রস্তাবনা জমা দেওয়ার শর্তাবলি অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রস্তাব জমাদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ শর্তগুলো হলো-
শুধু বাংলাদেশের নাগরিকেরা অনুদান প্রাপ্তির জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন। অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের সকল শিল্পী/কলাকুশলীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। তবে বিশেষ ভূমিকায় অংশগ্রহণের জন্য যদি কোনো বিদেশি শিল্পী/কলাকুশলীর প্রয়োজন হয় তাহলে মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রমে ওই শিল্পী/কলাকুশলী চলচ্চিত্রে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
অনুদানপ্রাপ্ত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের নির্মাণ অনুদানের প্রথম চেক প্রাপ্তির ০৯ (নয়) মাসের মধ্যে এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের নির্মাণ অনুদানের প্রথম চেক প্রাপ্তির ০৬ (ছয়) মাসের মধ্যে সমাপ্ত করতে হবে।
নির্মাণাধীন, সমাপ্ত বা মুক্তিপ্রাপ্ত কোনো চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য অনুদানের জন্য বিবেচিত হবে না।
অনুদানে নির্মিত/নির্মিতব্য চলচ্চিত্র মৌলিক নয় বলে প্রমাণিত হলে এবং চুক্তিনামার শর্তাবলি বরখেলাপ করলে প্রযোজক অনুদান হিসেবে গৃহীত সমুদয় অর্থ ও সেবার মূল্য রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্রচলিত সুদসহ ফেরত দিতে বাধ্য থাকবেন মর্মে ৩০০/- (তিন শত) টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারপত্র মূল কপিসহ (১২ সেট ফটোকপি) আবেদনপত্রের সঙ্গে দিতে হবে। শর্ত খেলাপকারী সংশ্লিষ্ট প্রযোজকের বিরুদ্ধে সরকার আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
অনুদান প্রদানের ক্ষেত্রে সাহিত্যনির্ভর গল্প ও চিত্রনাট্যকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
কোনো বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকলে মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র-২ শাখায় যোগাযোগ করা যেতে পারে।
পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান প্রাপ্তির লক্ষ্যে গল্প, চিত্রনাট্য ও চলচ্চিত্র নির্মাণের সার্বিক পরিকল্পনাসহ পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ প্রস্তাবের প্রতিটির ১২ (বারো) সেট ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের জন্য ১০ (দশ) সেট করে জমা দিতে হবে। প্রস্তাবের সাথে নিম্নবর্ণিত তথ্যাদি, কাগজপত্রাদি দাখিল/উল্লেখ করতে হবে:
(ক) প্রস্তাবিত গল্প ও চিত্রনাট্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক, শিশুতোষ, সাধারণ শাখা না-কি প্রামাণ্যচিত্র তা আবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে;
(খ) দেশি গল্প/কাহিনির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট লেখক/সংস্থা/প্রকাশকের লিখিত সম্মতি/অনুমতি নিতে হবে। বিদেশি গল্প বা কাহিনির ক্ষেত্রে কপিরাইট আইনের আওতায় সংশ্লিষ্ট লেখক/সংস্থা/প্রকাশকের অনুমতি নিতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দাখিল করতে হবে;
(গ) প্রযোজকের নাম, মোবাইল নম্বরসহ জীবন-বৃত্তান্ত (পিতা-মাতার নাম, স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানা ও ই-মেইলসহ) সুস্পষ্টভাবে অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে হবে;
(ঘ) প্রযোজকের ব্যাংক প্রত্যয়নপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র, টিআইএন দাখিলে প্রত্যয়নপত্র এবং চলচ্চিত্রবিষয়ক প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনের প্রত্যয়নপত্র (যদি থাকে) দাখিল করতে হবে;
(ঙ) কাহিনি ও চিত্রনাট্যকারের স্পষ্টাক্ষরে পূর্ণ নাম এবং পরিচালকের স্পষ্টাক্ষরে পূর্ণ নাম, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রশিক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞতার বর্ণনা সংবলিত জীবন-বৃত্তান্ত, মোবাইল নম্বর, টেলিফোন নম্বর অবশ্যই প্রস্তাবের সাথে দাখিল করতে হবে;
(চ) পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ প্রস্তাবের সঙ্গে চলচ্চিত্রের প্রস্তাবিত শিল্পী ও কলাকুশলীদের নাম, ঠিকানা, তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞতার বর্ণনা, নির্মাণ সংস্থার কারিগরি, আর্থিক ও অবকাঠামোগত সক্ষমতার বিবরণ, আউটডোর শুটিং স্পটের বিবরণ, পরিচালক নির্মিত একটি চলচ্চিত্রের নমুনা ও নির্মিত বা চলচ্চিত্রের যথার্থ বাজেট বিভাজনসহ নির্মাণ সমাপ্তির শেষ তারিখ উল্লেখ করে দাখিল করতে হবে:
(ছ) প্রস্তাবিত চলচ্চিত্রের কাহিনি সংক্ষেপ দাখিল করতে হবে; এবং
(জ) পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের প্রক্ষেপণ সময় (স্থিতি) ০২ ঘণ্টা এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের প্রক্ষেপণ সময় (স্থিতি) ৩০ মিনিট পর্যন্ত হতে হবে। তবে সরকার এ সময় হ্রাস-বৃদ্ধি করতে পারবে।
অনুদানপ্রাপ্ত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ শেষে সেন্সর সনদপ্রাপ্তি সাপেক্ষে দেশের কমপক্ষে ২০টি সিনেমাহলে মুক্তি দিতে হবে। অনুদানে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো বাংলাদেশ টেলিভিশনের চাহিদা মতে প্রদর্শনের লক্ষ্যে প্রযোজক সরবরাহ করবেন।
কোনো প্রযোজক পরপর ০২ (দুই) বছর অনুদান পাওয়ার যোগ্য হবেন না।
একই প্রযোজক/পরিচালককে সাধারণত দুইবারের বেশি অনুদান প্রদান করা হবে না। তবে একই প্রযোজক দ্বিতীয়বার অনুদান পাওয়ার পর ০৪ (চার) বছর অতিক্রান্ত হলে পুনরায় অনুদানের জন্য আবেদনের যোগ্য হবেন। একজন প্রযোজক সর্বোচ্চ তিনবারের বেশি অনুদান পাবেন না।
অনুদান প্রদানসংক্রান্ত বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য হবে এবং অনুদান প্রদানের পরও সরকার যেকোনো যুক্তিসংগত শর্তারোপ করতে পারবে।
সারাবাংলা/এজেডএস