পর্দায় তারামন বিবি হচ্ছেন তানহা
৩ নভেম্বর ২০২১ ১৯:৪৮
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসংখ্য নারী মুক্তিযোদ্ধা অংশ নিয়েছেন। যুদ্ধের ময়দানে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেছেন। তারামন বিবি তাদেরই মধ্যে একজন। বীরত্বের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন বীর প্রতীক খেতাব। এ বীর মুক্তিযোদ্ধার গল্প এবার পর্দায় দেখা যাবে। আর সেখানে তারামন বিবি রূপে দেখা যাবে তানহা তাসনিয়াকে।
আমিনুর ইসলাম লিটন পরিচালিত ছবিটির নাম ‘তারামন’। এটি মূলত তারামন বিবিসহ অন্যান্য নারী মুক্তিযোদ্ধাদের গল্প নিয়ে বানানো হবে।
ছবিটির গবেষণা, মূলভাবনা ও চিত্রনাট্য করেছেন ষড়ৈশ্চর্য মুহম্মদ। ছবির উপদেষ্টা হিসেবে থাকছেন নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু।
তারামন বিবির মতো এমন একজন মুক্তিযোদ্ধার চরিত্রে অভিনয় করতে পেরে আনন্দিত তানহা। তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জন্য আনন্দের পাশাপাশি গৌরবের। আমার সৌভাগ্য এ ছবিতে নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর মতো মুক্তিযোদ্ধা, পরিচালককে পাচ্ছি উপদেষ্টা হিসেবে।
ছবিটিতে যুক্ত হওয়া নিয়ে বলেন, আমার সঙ্গে পরিচালক লিটন ভাইয়ের আগে থেকে পরিচয় ছিল। তিনি আমাকে গতকাল (২ নভেম্বর) ফোন দিয়ে এ চরিত্রে অফার করলে আমি স্বানন্দে রাজি হই। আমি তারামন বিবি আগে থেকে অল্প বিস্তর জানি। এখন বই পড়ে আরও বড় পরিসরে জানার চেষ্টা করছি।
ষড়ৈশ্বর্য মুহম্মদ প্রথমে আমিনুর ইসলাম লিটনকে তারামন বিবিকে নিয়ে ছবি করা যায় কিনা জানান। সে ভাবনা থেকে ছবিটির যাত্রা শুরু। পরিচালক জানালেন, ছবিতে তারামনের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ঘটনাবলি দেখানো হবে। ওই সময়ে তার বয়স ছিল ১৩ থেকে ১৪ বছর। তাদের চেষ্টা থাকবে কিশোরী চরিত্রেও তানহাকে রাখার। এরপর মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৯৫ সালের আগে কেউ তারামনের খোঁজ রাখেনি। ও ঘটনাও উঠে আসবে। একই সঙ্গে অন্যান্য নারী মুক্তিযোদ্ধাদের গল্পও এ ছবিতে বলা হবে।
এ ছবি নির্মাণের জন্য তারামন বিবির পরিবারের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা? উত্তরে পরিচালক লিটন বলেন, ‘এটি তারামন বিবির বায়োপিক হচ্ছে না। তবে তার জীবনের একটা বড় অংশ থাকছে। তা ছাড়া উনি তো জাতীয় সম্পদ। তাই মনে হয় না ওনাকে নিয়ে কিছু করতে গেলে অনুমতির দরকার হবে। তারপরও আমরা ওনার পরিবারের সঙ্গে কথা বলবো।’
‘তারামন’-এ উপদেষ্টা হিসেবে আছেন নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটা প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প নতুন করে জানানো উচিত। এখন তো তৃতীয় প্রজন্ম চলছে। আমাদের দেশটা বড় হট্টোগোলের দেশ। এখানে ধর্মান্ধরা নানাভাবে এখনো আছে। এসব থেকে এ প্রজন্মকে রক্ষা করতে বেশি করে যাত্রা, সংগীত ও চলচ্চিত্র নির্মাণ হওয়া উচিত। সে জায়গা থেকে এ ছবির পরিচালক প্রথমে আমার সঙ্গে প্রথমে ফোনে, পরে শিল্পকলায় দেখা করে। আমি স্বানন্দে রাজি হয়ে যাই। কারণ, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভালো কিছু করলে আমি পাশে থাকতে চাই।
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ কিংবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে কুড়িগ্রামে তারামন বিবির গ্রামের বাড়িতে ছবিটির শুটিং হবে। এতে তানহা ছাড়া আরও অভিনয় করবেন মোমেনা চৌধুরী, শাহানশাহ উল হক, রুহুল আমিন তুহিন, সোনিয়া আকতার।
সারভাইভ মিডিয়া ও ডিসেন্ট ইন্টারন্যাশনালের কারিগরি সহযোগীতায় ছবিটি প্রযোজনা করছে আরশিনগর ও উজান। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিজয় দিবসে ছবিটি মুক্তি দিতে চান পরিচালক।
সারাবাংলা/এজেডএস