নন্দনমঞ্চে ১১ দিনব্যাপী ‘বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নাট্যোৎসব’
৪ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:১১
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীকে স্মরণীয় ও প্রাঞ্জল করতে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের আয়োজনে শুরু হলো ১১ দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নাট্যোৎসব।
শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নন্দনমঞ্চে এই উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিকেল ৫ টায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীন বাংলাদেশের সংস্কৃতির অগ্রযাত্রায় অসামান্য ভূমিকা রাখা ৫০জন মুক্তিযোদ্ধা সংস্কৃতিজন প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরীয় পরিয়ে এবং ক্রেস্ট উপহার দিয়ে সম্মান জানানো হয়। এরপর আয়োজনে কামরুল হাসান ফেরদৌসের কোরিওগ্রাফিতে গীতিআলেখ্য ‘স্বরণে ৭১’ পরিবেশন করে বহর। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতা পাঠ করেন কিশোরগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা লাল মাহমুদ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে বিশিষ্ট সংস্কৃতিজন মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পর যে যার কাজে ফিরে গেছেন, কিন্তু যারা সংস্কৃতি ভালোবাসেন, তারা এখনো এর সঙ্গেই আছেন। এখন আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একসঙ্গে পালন করছি। এই সময়টি যারা দেখছেন, তারা ভাগ্যবান। এটা ঠিক যে এদেশে এখনো মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ মাথা উঁচু করতে চাইছে, তবে তাদের পরাজিত করে নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করবো আমরা। আর আমাদের সঙ্গ দেবে আমাদের তরুণরা, যারা সংস্কৃতিকে ভালোবাসে, দেশকে ভালোবাসে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা দুটি সমার্থক শব্দ। একটি থেকে আরেকটি আলাদা করা যায় না। আমরা যুদ্ধ করে যে সাম্প্রদায়িকতা রুখে দিয়েছিলাম, তা আবার একটি গোষ্ঠী ছড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু এই যে আমাদের সংস্কৃতি, এর ফলে এখন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ জাগ্রত হয়ে আছে। আমাদের নতুন যে প্রজন্ম, সেই তরুণদের এখন দায়িত্ব মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দেশকে গড়ে তোলা।’
তিনি আরও বলেন, ‘অস্ত্রের যুদ্ধের বিপরীত হচ্ছে সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ। এটি খুব অল্প সময়ে মানুষকে শানিত করতে পারে। তাই এই চেতনাকে উজ্জীবিত রাখতে হবে। আজকের যে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নাট্যৎসব, এই যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানানো, তা আমাদের সংস্কৃতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং তরুণরা এ থেকে প্রত্যয় খুঁজে পাবে বলেই আমি বিশ্বাস করি।’
উৎসব উদযাপন পরিষদের আহবায়ক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সংস্কৃতিজন ড. ফওজিয়া মোসলেম, মফিদুল হক এবং ম হামিদ।
আলোচনা পর্ব শেষে ঢাক-ঢোলের বাদ্যের সঙ্গে প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং শিশু বন্ধুদের বেলুন ওড়ানোর মধ্য দিয়ে নাট্যউৎসবের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালা’র পরিক্ষণ থিয়েটার হলে মহাকাল নিবেদিত নাটক ‘ঘুমনেই’ মঞ্চায়ন করা হয়। নাসির উদ্দীন ইউসুফ রচিত এই নাটকটি নির্দেশনা করেছেন জন মার্টিন।
সারাবাংলা/এএসজি
নন্দনমঞ্চে ১১ দিনব্যাপী ‘বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নাট্যোৎসব’ বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নাট্যোৎসব বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি