জাগো বাহে: ত্রয়ী সিনেমায় বাঙালির ইতিহাস অন্বেষণ
৭ ডিসেম্বর ২০২১ ২১:১৭
স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির আগে বাঙালির শিল্প, সংস্কৃতি ও জাতি সত্তার মনন তৈরিতে অনেকগুলো ঘটনা ভূমিকা রেখেছে। এ ঘটনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি ঘটনা নিয়ে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি নির্মাণ করেছে ‘জাগো বাহে’। ত্রয়ী সিনেমাটির মাধ্যমে বাঙালির ইতিহাস অন্বেষণের চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
ত্রয়ী সিনেমাটি তিনটি স্বলদৈর্ঘ্যের সমন্বয়ে তৈরি। এগুলো হচ্ছে সিদ্দিক আহমেদের ‘শব্দের খোয়াব’, সালেহ সোবহান অনিমের ‘লাইট, ক্যামেরা, অবজেকশন’ এবং সুকর্ণ শাহেদ ধীমানের ‘বাংকার বয়’।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি রেস্তোরায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘জাগো বাহে’ সম্পর্কে জানানো হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন চরকির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা রেদোয়ান রনি, ছবিগুলোর নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীরা।
‘শব্দের খোয়াব’ নির্মিত হয়েছে বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী ও লুৎফর রহমান জর্জ। নির্মাতা সিদ্দিক আহমেদ বলেন, ‘পুরো নির্মাণ প্রক্রিয়াটা আমার কাছে ছিলো সোলফুল জার্নি। আমিই প্রথম রনি (রেদোয়ান রনি) ভাইয়ের কাছে সিনেমাটির আইডিয়া নিয়ে যাই। এরপর আমাদের সঙ্গে অন্যরা যুক্ত হয়েছিলেন। আমাদের বাঙালি জাতির ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে নতুন করে জানানোর জন্য আমাদের এ প্রচেষ্টা।’
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে কিংবদন্তি নাম জহির রায়হান। ১৯৭০ সালে তার নির্মিত ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র ‘জীবন থেকে নেয়া’ তৎকালীন পাকিস্তান সেন্সর বোর্ড মাত্র ১ দিন প্রদর্শনের পর সেন্সর সার্টিফিকেট আটকে দিয়েছিলো। তখন বোর্ডের সঙ্গে বাহাসে লিপ্ত হয়েছিলেন জহির রায়হান। শেষ পর্যন্ত তিনি তার ছবিটি ছাড়িয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। এ ঘটনারই চলচ্চিত্র রূপ ‘লাইট, ক্যামেরা, অবজেকশন’।
ছবিটিতে জহির রায়হানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোস্তফা মনোয়ার। এছাড়া আছেন ইন্তেখাব দিনার, অপর্ণা ঘোষ, ফারহানা হামিদ, এ কে আজাদ সেতু প্রমুখ।
‘লাইট, ক্যামেরা, অবজেকশন’ নির্মাতা সালেহ সোবহান অনিম জানান, ছবিটি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় গবেষণার কাজটি করেছেন এর চিত্রনাট্যকার। তিনি বলেন, ‘মূল ঘটনা তিন থেকে চার দিনের। আমরা পুরো ঘটনাকে এক দিনে তুলে এনেছি। এরকম আরও কিছু পরিবর্তন করেছি। কিন্তু মূল ঘটনার কোনো বিকৃতি ঘটানো হয়নি।’
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৭ বছর বয়সী এক তরুণ ঘটনাচক্রে একটি বাংকারে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এক অফিসারের সঙ্গে আটকা পড়েছিলেন। এমন ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘বাংকার বয়’। যার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আবদুল্লাহ আল সেন্টু ও মুস্তাফিজুর নূর ইমরান।
নির্মাতা ধীমান জানান, রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় স্বল্পদৈর্ঘ্যটির শুটিং করেছেন। অভিনেতা সেন্টু বলেন, ‘আমার জীবনের সংকটের সঙ্গে এ ছবির সংকট অনেকটাই মিলে যায়। যখন গল্পটা প্রথম শুনি তখন অন্য একটা জগতে চলে গিয়েছিলাম।’
বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ৯ ডিসেম্বর থেকে দেখা যাবে ‘শব্দের খোয়াব’, ১৬ ডিসেম্বর থেকে ‘লাইট, ক্যামেরা, অবজেকশন’ এবং ২৩ ডিসেম্বর থেকে ‘বাংকার বয়’।
সারাবাংলা/এজেডএস