শুরু হচ্ছে ঢাকার অষ্টাদশ শতাব্দীর ইতিহাস নিয়ে ‘জিন্দাবাহার’
১৫ জানুয়ারি ২০২২ ২১:৩২
ঢাকার অষ্টাদশ শতাব্দীর ইতিহাস নিয়ে রোববার (১৬ জানুয়ারি) থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার শুরু হচ্ছে তারকাবহুল ৫২ পর্বের ধারাবাহিক নাটক ‘জিন্দাবাহার’। যেখানে দেখা যাবে বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যুর পর তার আপনজনেরা যে আট বছর কারাবন্দী ছিলেন, সেসব গল্প। আর এই ইতিহাস লিখেছেন নাট্যকার-অভিনেতা ও নির্দেশক মামুনুর রশীদ। প্রযোজনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন ফজলে আজিম জুয়েল।
ধারাবাহিকটিতে একসঙ্গে দেখা মিলবে জনপ্রিয় সব তারকাদের। এতে অভিনয় করেছেন মামুনুর রশীদ, লুৎফর রহমান জর্জ, আজাদ আবুল কালাম, আহমেদ রুবেল, অনন্ত হীরা, শতাব্দী ওয়াদুদ, শাহ আলম দুলাল, সমু চৌধুরী, শামীম ভিস্তি, শ্যামল জাকারিয়া, রোজী সিদ্দিকী, মুনিরা বেগম মেমী, নাজনীন চুমকি, শর্মীমালা, নাইরুজ সিফাত, নিকিতা নন্দিনী, আলিফ চৌধুরী, সাদমান প্রত্যয়, ইউসুফ রাসেল, শাকিলসহ আরও অনেকে।
নাটকের কাহিনী এ রকম—১৭৫৮ সাল। মেঘনার নদী বক্ষ থেকে একটি বজরা নৌকা সশস্ত্র প্রহরী সহ চাঁদপুর ঘাটে এসে ভেড়ে। গন্তব্য ঢাকার জিনজিরা প্রাসাদ। নৌকার আরোহীরা হচ্ছেন নিহত নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার স্ত্রী লুৎফা, কন্যা উম্মে জোহরা, খালা ঘসেটি বেগম, মাতা আমেনা বেগম। স্বল্প বিরতির পর পাল তোলা বজরায় আবার ঢাকা অভিমুখে যাত্রা। এখান থেকেই শুরু অষ্টাদশ শতাব্দীর সময়কালীন ঢাকার আখ্যান ‘জিন্দাবাহার’।
একদা সুবে বাংলার রাজধানী ঢাকা এখন পরিত্যক্ত। কিন্তু ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মুর্শিদাবাদ জয় করার পর ঢাকার ইংরেজ কুঠি আবার সরব হতে থাকে। বিখ্যাত মসলিন প্রস্তুতকারীদের ঢাকায় তখন উজ্জ্বল সময় চলছিল। নবাব পরিবারের সদস্যদের জিনজিরা প্রাসাদে নির্মম নির্বাসনে কাটছে দিন, তার সাথে বেড়ে উঠছে আবার এক ইংরেজের ঢাকা। এই নিয়েই মূলত তৈরি হয়েছে ধারাবাহিক নাটক ‘জিন্দাবাহার’।
ধারাবাহিক নাটকটির রচয়িতা মামুনুর রশীদ বলেন, ‘ঢাকা শহরটা খুব অভাগিনী। কয়েকবার রাজধানী পরিবর্তিত হয়েছে। ঢাকার দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে গবেষণা হলেও সেভাবে কোনো ফিকশন নির্মিত হয়নি। একসময় জিনজিরা প্রাসাদও ঝলমলে ছিল। পরবর্তীকালে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। রাজধানী মুর্শিদাবাদে স্থানান্তরিত হলে ঢাকাও একসময় পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। তখন ঢাকার অবস্থা কেমন ছিল? এ সবেরই প্রতিচ্ছবি আছে জিন্দাবাহার নাটকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একপর্যায়ে আবার নীলকুটি স্থাপন, মসলিনশিল্পের বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে ঢাকা আবার সরব হতে থাকে। আসলে আমাদের ঢাকার অনেক করুণ ইতিহাস আছে। আমার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল তা নিয়ে কিছু লেখা। সেই প্রয়াস থেকেই জিন্দাবাহার। জিন্দা মানে জীবিত আর বাহার হলো বসন্ত। আসলে ঢাকা একটা জীবিত বসন্তের জায়গা।’
নির্মাতা ফজলে আজিম জুয়েল জানান, ‘২০০ বা ৩০০ বছর আগের ইতিহাস নিয়ে বাংলা নাটক কিংবা টেলিভিশন চ্যানেলে সেভাবে কাজ হয়নি। সে সময়ের ঢাকা আমাদের কাছে অজানা। দীর্ঘ এই ধারাবাহিকের মধ্য দিয়ে এই সময়ের দর্শক অষ্টাদশ শতাব্দীর ঢাকাকে জানতে পারবে। শেষ নবাবের মৃত্যুর পর আট বছর কারাবন্দি ছিলেন নবাবের আপনজনরা। আমরা এই আট বছরের গল্পটাই দেখাব।’
১৬ জানুয়ারি (রোববার) থেকে সপ্তাহে প্রতি রবি, সোম ও মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় প্রচার হবে নাটকটি।
সারাবাংলা/এএসজি
জিন্দাবাহার শুরু হচ্ছে ঢাকার অষ্টাদশ শতাব্দীর ইতিহাস নিয়ে ‘জিন্দাবাহার’