জায়েদ চাদরের তলা দিয়ে ভোটারদের টাকা দিচ্ছে: নিপুণ
২৮ জানুয়ারি ২০২২ ১৩:৩৯
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জায়েদ খান ‘চাদরের তলা দিয়ে ভোটারদের টাকা দিচ্ছেন’ বলে অভিযোগ করেছেন সাধারণ সম্পাদক পদে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপুণ। এ অভিযোগ নিয়ে তারা দু’জন এফডিসিতে মুখোমুখি তর্কে জড়িয়ে পড়েন।
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচনের ভোট চলাকালে এ অভিযোগ তোলেন নিপুণ। তবে সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জায়েদ খান।
এফডিসির গেটে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের নিপুণ বলেন, ‘আমার কাছে একাধিক ভোটার অভিযোগ করেছে, জায়েদ চাদরের তলে দিয়ে ভোটারদের টাকা দিচ্ছে। আমিও গেটে থাকব, দেখি সে কীভাবে ভোট কিনে! ভোট চাওয়া যাবে না বলে আমরা নিয়ম অনুযায়ী গেটে দাঁড়াইনি। কিন্তু যেহেতু সে (জায়েদ খান) দাঁড়িয়ে আছে, আমিও দাঁড়াব।’
আরও পড়ুন- লাশের ওপর দিয়ে এমডিকে এফডিসিতে ঢুকতে হবে: সোহানুর রহমান সোহান
নিপুন যখন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করছিলেন, আরেক পাশেই ছিলেন জায়েদ খান। অভিযোগ অস্বীকার করে জায়েদ বলেন, ‘এখানে সিসি ক্যামেরা আছে। তাছাড়া ভোট চাওয়া যেহেতু নিষেধ, আমি থাকব না। ওনাদের প্যানেলের ফেরদৌস ভাইও তো গেটে ছিলেন। এসব কথাবার্তা হচ্ছে শিল্পীদের ছোট করার জন্য।’ এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর নিপুণ ও জায়েদ দু’জনেই গেট থেকে চলে যান।
এর আগে, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে শুক্রবার সকাল ৯টায়। শিল্পী সমিতির স্টাডি রুমে ভোট চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ভোটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (এফডিসি) ভেতর-বাইরে রাখা হয়েছে কড়া পুলিশি পাহারা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন জানান, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেই ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোটারদের জন্য বুথের ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনার কারণে প্রতিটি বুথের দূরত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে দু’টি প্যানেল। ৪২৮ জন ভোটার ২১টি পদে তাদের প্রতিনিধি বাছাই করবেন। পদগুলোতে লড়াই করছেন ৪৫ জন। সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইলিয়াস কাঞ্চন ও মিশা সওদাগর। সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খান ও নিপুণ। দুটি সহ-সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন মাসুম পারভেজ রুবেল, ডিএ তায়েব, ডিপজল ও রিয়াজ।
আরও পড়ুন- ‘১৭ বছরের অভিজ্ঞতায় আমরাই এগিয়ে আছি’
সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন সুব্রত ও সাইমন। আলেকজান্ডার বো ও শাহানূর লড়ছেন সাংগঠনিক সম্পাদক পদে। আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বী নিরব ও জয় চৌধুরী। দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক পদে আরমান ও জ্যাকি আলমগীর। ইমন ও জাকির হোসেনের লড়াই হবে সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে। কোষাধ্যক্ষ পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ফরহাদ ও আজাদ খান।
১১টি কার্যনিবার্হী সদস্য পদের জন্য নির্বাচনে লড়ছেন ২৪ জন। তারা হলেন— অঞ্জনা, অরুণা বিশ্বাস, অমিত হাসান, আলীরাজ, আফজাল শরীফ, আসিফ ইকবাল, কেয়া, গাংগুয়া, চুন্নু, জেসমিন, ডন, নাদির খান, নানা শাহ, ফেরদৌস, বাপ্পারাজ, মৌসুমী, হরবোলা, রোজিনা, শাকিল খান, সুচরিতা, সাংকুপাঞ্জা, সীমান্ত ও হাসান জাহাঙ্গীর।
আরও পড়ুন- এফডিসিতে কড়া নিরাপত্তায় চলছে শিল্পী সমিতির ভোট
শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন পীরজাদা হারুন। কমিশনের বাকি দুই সদস্য বি এইচ নিশান ও বজলুর রাশীদ চৌধুরী। নির্বাচনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়েছে সোহানুর রহমান সোহানকে। মোহাম্মদ হোসেন জেমী ও মোহাম্মদ হোসেন আপিল বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
চলচ্চিত্র শিল্পীদের পেশাগত স্বার্থ রক্ষায় ১৯৮৪ সালে গঠিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। তবে শিল্পীদের এই সংগঠনের ইতিহাস আরও সুপ্রাচীন। ভারত উপমহাদেশে এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত ভারত চলচ্চিত্র সমিতির মাধ্যমে। ১৯৩৮ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় চিত্র ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতি। এরপর ১৯৩৯ সালে কলকাতায় নিখিল বঙ্গ চলচ্চিত্র সংঘ নামে আরেকটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশ বিভাগের পর পূর্ববঙ্গের রাজধানী ঢাকায় ১৯৫২ সালে পূর্ববঙ্গ চলচ্চিত্র সমিতি নামে আরেকটি সংগঠন গঠিত হয়।
সারাবাংলা/এজেডএস/এসবিডিই