নীল বেনারশি পরে এলেন পরীমনি, চড়লেন পালোয়ান রাজের পালকিতে
১০ মার্চ ২০২২ ১৬:২৪
রাজধানীর মাদানি এভিনিউয়ের শেফস টেবিলের পিছনে বেশ বড় খোলা জায়গা। সেখানে অনেকটা গ্রামীণ পরিবেশে তৈরি করা হয়েছে একটি বিয়ে বাড়ি। যে বাড়ির নাম ‘গুণিন বাড়ি’। সেখানে হবে পরীমনি-রাজ ওরফে রমিজ-রাবেয়রা বিয়ে। সে আমন্ত্রণ রক্ষার্থে বুধবার (৯ মার্চ) বিকেল পৌনে ৪টা নাগাদ বিয়ে বাড়িতে গিয়ে হাজির। যদিও কথা ছিলো অনুষ্ঠান শুরু হবে ৪টা নাগাদ। কিন্তু বর-কনের সাজগোজ করতে পার্লারে। তাই অপেক্ষা করতে হলো।
এ ফাঁকে বিয়ে বাড়ি ঘুরে দেখা। গেটে অপেক্ষমান ব্যান্ড পার্টির লোকজন। তাদের সাথে পালকি। পরী এলেই তাকে এ পালকিতে চড়ানো হবে। গেটের এক পাশে ছোট একটা লেক। যেখানে হরেক রকম দেশি-বিদেশি মাছ নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সবুজের মাঝ দিয়ে হাঁটতে গিয়ে খেয়াল হলো গাছগুলোয় দড়িয়ে রঙিন কাগজ কেটে সাজানো হয়েছে। কিছু জায়গায় লাগানো হয়েছে রঙিন বাতি।
একটু সামনে এগোতেই অল্পনা আঁকা এক উঠোন। তার থেকে একটু ডানে গেলেই বড় একটা মঞ্চ। যেখানে সোফা পাতা। বর-কনে এলেই তাদের সেখানে বসতে দেওয়া হবে। মঞ্চের সামনে চেয়ার পাতা, অতিথিদের বসার জন্য।
এক কোণায় অতিথির আপায়্যানের জন্য ফুসকার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিলো। সেখান থেকেই অনেকেই ফুসকা নিয়ে খাচ্ছিলেন। পরী-রাজের দেরির কারণে আগত অতিথিদের অনুরোধে অনুষ্ঠান শুরুর ঘোষণা দিলেন উপস্থাপিকা নীল হুরেজাহান। মঞ্চে একে একে গান পরিবেশন করছিলো ব্যান্ড দল।
সন্ধ্যা সাতটা বাজার সামান্য আগে খবর এলো পরী-রাজ আসছেন। পরীমনি পরেছিলেন গাঢ় নীল রঙের বেনারশি, গায়ে সোনালী রঙের ওড়না। আর রাজ একই রঙের শেরওয়ানি। তাতে সোনালী কাজ করা। গেট দিয়ে ঢুকতেই পরীকে পালকিতে চড়ানো হলো। পালোয়ান হিসেবে অন্যদের সঙ্গে ছিলেন রাজও।
মঞ্চে উঠার পর তাদের স্বাগত জানায় ‘গুণিন’ পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিম ও ছবির অন্যান্য কলাকুশলীরা। এ সময় তাদের স্বাগত জানাতে আসেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। পরী ও রাজ দুজনেই তাকে পা ছুঁয়ে সালাম করেন। তাদের দুজনকে মঞ্চে বসিয়ে ‘আমি ঘোমটা খুলে বদন তুলে’ গানের সঙ্গে নাচ পরিবেশন করা হয়। নাচের শেষের দিকে এসে যোগ দেন পরী-রাজ।
এর ফাঁকে ফাঁকে তাদের জন্য শুভকামনা জানান অতিথিরা। মতিউর রহমান বলেন, পরীমনিকে আমরা পেয়েছি একজন স্পষ্টবাসী, সাহসী মানুষ হিসেবে। তার জন্য সবসময় শুভকামনা।
পরীর নানা এবং রাজের মাও এসেছিলেন তাদেরকে শুভকামনা জানাতে।
অনুষ্ঠানে বেশ উৎফুল্ল ছিলেন পরীমনি। তিনি বলেন, আমাকে যখন পালকিতে তোলা হয় তখন সেই রমিজ-রাবেয়ার বিয়েতে চলে গিয়েছিলাম! যে মাঠে শুটিং হয়েছিল, যে নদীতে শুটিং হয়েছিল তার পুরোটাই চোখে দেখতে পাচ্ছিলাম। আজ একইসঙ্গে সিনেমার প্রিমিয়ার ও বৌভাতের আয়োজন! সেজন্য আমাকে কনে সাজতে হয়েছে, একটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া কাজ করছে। সেলিম ভাইয়ের কথায় ‘গুণিন’-এ কাজ করা। আর এই কাজ দিয়ে আমি আরেকজনের জীবনে যুক্ত হয়েছি। সেজন্য সিনেমাটি আমার অন্য অনেক স্পেশাল হয়ে থাকবে।
ডায়াসে পরীর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাজ। তিনি বলেন, ‘গুণিন’র সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর আমি বড় ধরনের একটা দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলাম। সেসময় সেলিম ভাই আমার জন্য অনেকদিন অপেক্ষা করেন। পরে খুব দ্রুত রিকোভার করে আমি শুটিং শুরু করি। সবাই আমাদের সিনেমাটি দেখবেন এটাই প্রত্যাশা।
সবার শুভকামনা, বক্তব্য ও সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ। এবার ‘গুণিন’ দেখার পালা। আয়োজকরা দাওয়াত দেওয়ার সময় বলেছিলেন বিকেল ৫টায় শুরু হবে প্রিমিয়ার। সে শো শুরু হতে হতে ৭ টা ৪০ বেজে গেলো।
রাত ১০টায় শেষ সকল অনুষ্ঠান। পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিম বলেন, আজ (বুধবার) ছবিটির প্রথম আনুষ্ঠানিক শো হলো। আমি সবসময় এ শোয়ের সময় নার্ভাস থাকি। আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে?
উপস্থিত সবাই বললো, ‘ভালো লেগেছে।’ এমন উত্তরে স্বস্থি ফেলেন সেলিম। তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সকল আয়োজনের সমাপ্তি টানলেন। অতিথিরা বাড়ির ফেরার পথ ধরলেন। আর পরী-রাজ? তারা তখনও গেলেন না। অতিথিদের ভিড়ে এতক্ষণ তারা বিয়ে বাড়িটা ভালো করে ঘুরতে পারেননি, এবার একটু ঘুরে দেখবেন।
সারাবাংলা/এজেডএস