আজ প্রাচ্যনাট স্কুলের ৪১তম ব্যাচের সমাপনী নাটক ‘মলুয়া’
১৫ মার্চ ২০২২ ১৫:৪৪
বাংলাদেশের থিয়েটারের বিস্তারে এবং দক্ষ থিয়েটারকর্মী তৈরীতে সুদীর্ঘ ২০ বছর ধরে কাজ করে চলেছে প্রাচ্যনাট স্কুল অব অ্যাকটিং অ্যান্ড ডিজাইন। এই স্কুলের ৬ মাসের পাঠ্যসূচিতে একজন প্রশিক্ষনার্থী থিয়েটারের সকল আনুসাঙ্গিক বিষয়ে একটি স্পষ্ট ধারণা পায়। এরই মধ্যে এই স্কুলের ৪০টি ব্যাচ সফলভাবে তাদের কোর্স সম্পন্ন করেছেন। পরিসমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে ৪১তম ব্যাচেরও।
১৫ মার্চ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর পরীক্ষণ থিয়েটার হলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রাচ্যনাট স্কুল অব অ্যাকটিং অ্যান্ড ডিজাইন-এর ৪১তম ব্যাচের সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠান। ৪১তম ব্যাচ তাদের সমাপনী প্রযোজনা হিসেবে মৈমনসিংহ গীতিকা অবলম্বনে চন্দ্রবতী রচিত ‘মলুয়া’ উপস্থাপন করবে। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন সাইফুল জার্নাল। উক্ত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নাট্যকার ও নির্দেশক ড. সাইমন জাকারিয়া এবং নির্দেশক, শিক্ষক এবং গবেষক সাইদুর রহমান লিপন।
সুত্যা নদীর তীরে ছিলো হালুয়া পরিবারের ছেলে চান্দ বিনোদের বসবাস। ধন-সম্পদ, জমি সবকিছু নিয়ে মায়ের সাথে ভালোই ছিলো সে। কিন্তু বিনোদের অলস স্বভাব এবং পানিতে ক্ষেতের সব ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা অভাবে পড়ে। টাকা রোজগার করতে বিনোদ কোড়া পাখি শিকারে রওনা হয়। শিকার পথে আরিয়াল গ্রামে তার দেখা হয় ধনবান হীরাধরের কন্যা সুন্দরী মলুয়ার সাথে। বিনোদ মলুয়ার বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। প্রথমে, ধন সম্পদের অভাবে বিয়ের প্রস্তাব নাকচ হয়ে গেলেও, বিনোদ অতি দ্রুত তার অবস্থার পরিবর্তন করে এবং মলুয়াকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসে।
গ্রামের দুশ্চরিত্র কাজীর লোলুপ দৃষ্টির শিকার হয় মলুয়া। কূটবুদ্ধি ও দুশ্চরিত্র নেতাইয়ের মাধ্যমে মলুয়াকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় কাজী। মলুয়া ঘৃণাভরে সেই প্রস্তাবে না করে দিলে বিনোদ কাজীর রোষানলে পড়ে। প্রথমে বিনোদের ওপর বিশাল অঙ্কের কর আরোপ করা হয়। বিনোদ সকল সম্পদ বিক্রি করে, কোড়া পাখি শিকার করে কোনোমতে এই কর মিটাতে পারলেও আবারও কাজীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়। এবার ঘরের বউকে যেতে হয় দেওয়ানের ঘরে। বুদ্ধিমতী মলুয়া নানান উপায়ে নিজেকে দেওয়ানের হাত থেকে রক্ষা করে এবং কৌশলে দেওয়ানকে প্রতিহত করে।
এত সংগ্রাম, এত চেষ্টার পরেও, মলুয়া-বিনোদের সংসার করা হয় না। গ্রামের আত্মীয় স্বজন, সমাজের মানুষজন মলুয়াকে অসতী অপবাদ দিয়ে তাকে ঘরে তুলতে নিষেধ করে আর বিনোদকে পুনরায় বিয়ে দেয়। মলুয়া সব অপমান সহ্য করে তবুও স্বামীর সংসারে থেকে যায় দাসীরূপে। হঠাৎ একদিন বিনোদ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়। মৃতপ্রায় স্বামীকে নিয়ে বহু পথ পাড়ি দিয়ে বাঁচিয়ে নিয়ে আসে মলুয়া। এত কিছুর পরেও মলুয়াকে সমাজ গ্রহণ করে না। নিজের সকল প্রচেষ্টা, সংগ্রাম, ধৈর্য্য, অনুরাগের পরেও যখন প্রাপ্য মর্যাদাটুকু পায় না, তখন মলুয়া কী করবে?
সারাবাংলা/এএসজি
আজ প্রাচ্যনাট স্কুলের ৪১তম ব্যাচের সমাপনী নাটক ‘মলুয়া’ প্রাচ্যনাট প্রাচ্যনাট স্কুল অব অ্যাকটিং অ্যান্ড ডিজাইন