কে থামাবে ‘হাওয়া’
১ এপ্রিল ২০২২ ১৮:৫০
একটি মাছ ধরার ট্রলারে কিছু প্রান্তিক মানুষ ঝড়ের কবলে পড়েছেন। দমকা খাওয়ায় তাদের উড়ে যাবার উপক্রম। এর মাঝে একজন অজ্ঞান অবস্থায়। তার কলার ধরে রেখেছেন অন্যজন। পিছন থেকে একজন টর্চ লাইটের আলোয় তাকে দেখছেন। নৌকায় একজন নারীও আছেন। সবাই মিলে যেন দমকা হাওয়াকে থামাতে চাচ্ছেন।
জনপ্রিয় নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমনের প্রথম সিনেমা ‘হাওয়া’। এর প্রথম পোস্টার প্রকাশিত হয়েছে। তাতেই এমনটা দেখা গেছে। পোস্টারের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করলো ছবিটি।
সুমন সারাবাংলাকে জানালেন, তারা ছবিটি সেন্সরের জন্য প্রস্তুত করেছেন। ইচ্ছে রয়েছে আগামী সপ্তাহে সেন্সরে জমা দেওয়ার। সেন্সর হওয়ার পর মুক্তির তারিখ ঘোষণা দিবেন।
রোজার ঠিক আগ মুহুর্তে সেন্সরে জমা দিচ্ছেন, তাহলে কি ছবিটি ঈদে মুক্তি পাবে? সুমন সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন। তিনি বলেন, ‘দুই ঈদের কোনো ঈদেই আমাদের ছবিটি মুক্তি পাবে না। এমন কি দুই ঈদের মাঝেও না। তবে কোরবানির ঈদের পর মুক্তির ইচ্ছে রয়েছে।’
‘যেহেতু রোজার মাস চলে আসছে তাই এসময় টিজার বা ট্রেলার আপাতত দিবো না আমরা। পুরোপুরি দুই মাস ছবিটি নিয়ে প্রচারণা চালাতে চাই আমরা।’
‘হাওয়া’র গল্প সম্পর্কে সুমন বলেন, ‘হাওয়া হচ্ছে এ কালের রূপকথার গল্প। যে রুপকথার প্রধান উপাদান সমুদ্র, ঢেউ আর একটি ট্রলার। আবহমান কাল ধরে চলে আসা যে রুপকথা আমরা শুনে এসেছি ‘‘হাওয়া’’ সেই রুপকথা নয়, তবে এই চলচ্চিত্রে রুপকথা স্বয়ং নিজে এসে আধুনিক রুপে হাজির হয়। এই সময়ে যে অস্থিরতা তা থেকে বেরিয়ে এসে এক ধরনের ধ্যানমগ্ন নির্মল যাত্রার নাম হাওয়া।’
তিনি আরো বলেন, ‘সম্পর্ক, প্রতিশোধ এবং মৃত্যুকে উপজীব্য করে এই গল্প নির্মাণ করা হয়েছে। এটি মাটির গল্প নয় বরং পানির গল্প। সমুদ্র পাড়ের মানুষ প্রধান উপজীব্য হলেও সমুদ্র পাড়ের গল্প নয় বরং সমুদ্রের গল্প। সমুদ্র এমন এক বিশালতার নাম যার পাড়ে বসে আমরা সাধারণ মানুষ এর সৌন্দর্য দেখি, রোমান্টিসিজমে ভুগি কিন্তু জানতে পারিনা সমুদ্রের ভেতরের গল্প। সমুদ্র পাড়ের মানুষগুলোর গল্প জানলেও সমুদ্রে চলাচলরত মানুষগুলোর সমুদ্রের ভেতরের গল্প জানিনা। সমুদ্র থেকে ফেরার গল্প আমরা জানি কিন্তু না ফেরার গল্প আমরা ক’টা জানি? এই না জানা মৌলিক গল্পটিই আমি আমার এই সিনেমার মাধ্যমে জানাতে চাই।’
ছবির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শরিফুল রাজ, নাজিফা তুষি, চঞ্চল চৌধুরী, সোহেল মন্ডল। এর চিত্রগ্রহণ শুরু হয়েছিলো ২০১৯ সালে। চিত্রগ্রহণ করেছেন কামরুল হাসান খসরু। এটি প্রযোজনা করেছে সান কমিউনিকেশন।
মেজবাউর রহমান সুমন টেলিভিশন নাটক নির্মাণে এসেই করেছিলেন বাজিমাত। ২০০৬ সালে তার প্রথম নাটক ‘দখিণের জানালাটা খোলা, আলো আসে-আলো ফিরে যায়’। এরপর ‘তারপরও আঙ্গুরলতা নন্দকে ভালোবাসে’, ‘পারুলের দিন’, জ্যোৎস্না নদী ও রফিকের কিছু কল্পদৃশ’, ‘সুপারম্যান’, ‘কফি হাউজ’ নাটকগুলো মেজবাউর রহমান সুমনকে করে তুলেছে অনন্য ও ব্যাতিক্রম।
এরপর প্রায় দীর্ঘ নয় বছর তাকে নাটক নির্মাণে দেখা যায় নি, ২০১০ সালের পর থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। থিতু হন বিজ্ঞাপণ নির্মাণে।
সারাবাংলা/এজেডএস