Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘গানগুলো কপিরাইট করিয়ে যেতে পারলেন না তিনি’

আহমেদ জামান শিমুল
৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৪:৪৮

দীর্ঘদিনের কর্মস্থল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) অনুষ্ঠিত হল খ্যাতিমান গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ারের প্রথম নামাজে জানাযা। সোমবার বাদ জোহর অনুষ্ঠিত এ জানাযায় অংশ নেন পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পী, গীতিকার, সুরকার, চলচ্চিত্র সাংবাদিকসহ বাংলাদেশের কিংবদন্তী এই গীতিকারের শুভাকাঙ্ক্ষীরা।

জানাযার আগে স্মৃতিচারণে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তার গান আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তার মৃত্যুতে জাতি অনেক বড় গুণীকে হারালো।’

কণ্ঠশিল্পী মনির খান বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে ওনার একেকটা গান বারুদ ছিল। কদিন আগে থেকে ওনার সবগুলো গান কপিরাইট করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু করে যেতে পারলেন না।’

নির্মাতা দেবাশীষ বিশ্বাস বলেন, ‘ওনার সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক। উনি, আমার বাবা দিলীপ বিশ্বাস, কাকা সত্য সাহা ও পরিচালক আজিজুর রহমানকে চতুরঙ্গ বলা হতো। এখন হয়তো ওপারে চারজন আবার চতুরঙ্গ হিসেবে নতুন করে হয়তো জীবনযাপন করবেন।’

দেবাশীষ বিশ্বাস আরও বলেন, ‘আমার প্রথম ছবি নির্মাণের সময় দেখেছি উনি কীভাবে আন্তরিকতার সাথে কাজ করেন। ওনার কাজ থেকে শেখেছি কীভাবে গান তৈরি হয়। উনি সবসময় বলতেন, গানের কথায় সহজ শব্দ ব্যবহার করতে তাতে করে সাধারণ মানুষের বুঝতে সুবিধা হবে, এবং যার কারণে ওনার অধিকাংশ গান জনপ্রিয়।’

পরিচালক শাহীন সুমন বলেন, ‘আমার প্রথম ছবির গানের জন্য ওনার কাছে গিয়েছিলাম। তখন প্রথমে উনি গল্প শুনলেন, এরপর দৃশ্যটা শুনলেন। এরপর দেখলাম হাতের আঙ্গুলে গুণে গানের মিটার ঠিক করলেন। এভাবে এখন কোনো গীতিকার কাজ করেন না, ফলে গানে আগের মত প্রাণ নাই।’

চিত্রনায়ক ওমর সানী বলেন, ‘গাজী মাজহারুল আনোয়ার আমার আর মৌসুমীর দীর্ঘদিনের অভিভাবক ছিলেন। আজ তাকে হারিয়ে আমার পরিবার শোকে স্তব্ধ।’

চিত্রনায়িকা অরুণা বিশ্বাসও বলেন, ‘তার মৃত্যুতে আমরা অভিভাবককে হারালাম।’

এফডিসিতে নেওয়ার আগে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধায় ভূষিত হন প্রখ্যাত এই গীতিকার ও চলচ্চিত্র পরিচালক। সেখানে তাকে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয়। এসময় রাজনৈতিক ও সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ ভিড় করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য এই গীতিকবির প্রতি ‘জাতির শ্রদ্ধাঞ্জলি’র আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। এতে জোট নেতারা ছাড়াও ছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ারের পরিবারের সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, শিল্পী ও সাধারণ মানুষ। ফুল দেওয়া শেষে পাশে রাখা শোক বইতে নিজের অনুভূতির কথা জানান অনেকে।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার

গাজী মাজহারুল আনোয়ার

শ্রদ্ধা জানাতে আসেন শহিদ মিনারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও তাদের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ফুল দেন বাংলাদেশ যুবমৈত্রী, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ গীতিকারের অসংখ্য গুণগ্রাহী।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফুল দেন কেন্দ্রীয় নেতা অসীম কুমার উকিল, আফজাল হোসেনসহ অন্যরা। বিএনপির পক্ষ থেকে ফুল দেন দলের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সংগঠনের আশরাফ উদ্দীন আহমেদ উজ্জ্বল, বাবুল আহমেদসহ অন্যান্য।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, সুরকার আলাউদ্দীন আলী, পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান, সুরকার শেখ সাদী, সঙ্গিতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন, ইয়াকুব আলী খান, মনির খান, এস আই টুটুলসহ আরও অনেকে।

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

‘গানগুলো কপিরাইট করিয়ে যেতে পারলেন না তিনি’ গাজী মাজহারুল আনোয়ার টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বাংলাদেশ-ভারত টেস্টে হামলার হুমকি!
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৫

সম্পর্কিত খবর