পকেটে পাঁচ হাজার নিয়ে ছবির প্রচারণায়…
২ নভেম্বর ২০২২ ১৪:১৩
গণঅর্থায়নে খন্দকার সুমন নির্মাণ করেছেন ‘সাঁতাও’। আগামী ২৭ জানুয়ারি ছবিটি মুক্তি পাবে। তবে এর প্রচারণা শুরু করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন তখন দেখলেন তার কাছে এর জন্য কোনো অর্থ নেই। অগত্যা সিদ্ধান্ত নিলেন পকেটে যা আছে তাই নিয়ে নামবেন। মাত্র পাঁচ হাজার টাকায় শুরু করেছেন ছবির প্রচারণা।
সুমন বলেন, “চলচ্চিত্র মুক্তির ক্যাম্পেইনের কোনো টাকা আমার হাতে ছিলো না। পরিকল্পনা করলাম ‘সাঁতাও’-র স্মারক টি-শার্ট শুভেচ্ছা মূল্য ধরে বিক্রয় করব। কাছের মানুষেরা বলল কেবল ফ্রি দিলে মানুষ টি-শার্ট পরবে। শুভেচ্ছা মূল্য দিয়ে কেউ পরবে না। আমি তাদের বলেছিলাম আমি কেবল মানুষের উপরেই বিশ্বাস রাখি।”
এরপর তিনি পাঁচ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে কিছু টি-শার্ট বানাবেন। শুরুতে ছবির টিমের সদস্যদের এর মডেল বানালেন। আর সে ছবিগুলো যখন আস্তে আস্তে ফেসবুকে আপলোড হতে থাকলো তখন মানুষের মধ্যে সাড়া পরলো। সুমনের ভাষায়, ‘আমার মানুষের প্রতি বিশ্বাস মিথ্যে প্রমাণিত হয়নি। এখন পর্যন্ত চার শ টি-শার্ট বিভিন্ন জন আমাদের কাছ থেকে নিয়েছেন তিন শ টাকা মূল্যে। সেগুলো থেকে অর্জিত অর্থে আমরা ছবির নয়টি প্রমোশনাল ভিডিও শুটিং করেছি।’
এ ছবির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আইনুন পুতুল ও ফজলুল হক। এর গল্পে দেখা যাবে, গ্রামের কৃষক ফজলু বিয়ের পর বুঝতে পারে নতুন সংসারে পুতুল একাকিত্ব অনুভব করছে। পুতুলের একাকিত্ব দূর করতে ফজলু একটি গাভী কিনে আনে। পুতুল তার সংসারে নতুন সঙ্গী পেয়ে বাবার বাড়ি ছেড়ে আসার কষ্ট গুলো কিছুটা ভুলতে শুরু করে। এই দিকে নদীর উজানে একের পর এক বাঁধের কারণে ভাটি অঞ্চল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন প্রতিকূল পরিবেশে ফজলুর মত কৃষকদের কৃষি কাজে নানান সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়। অবিরাম বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢল এসে উপচে না পড়া পর্যন্ত বাঁধগুলোর দরজা বন্ধ রাখা হয়। আবার বাঁধের দরজাগুলো খুলে দিলে আটকে থাকা বিশাল জলধারা নদীতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। নদীর গভীরতা কম থাকায় হঠাৎ প্রবাহিত জলধারা নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত হয়ে পশু-পাখিসহ জনজীবনে অভিশাপ বয়ে আনে। নদীর এমন বিরূপ আচরণে ফজলু এবং পুতুলের সুখি সংসার বিষাদময় হয়ে উঠে।
আইডিয়া এক্সচেঞ্জের ব্যানারে ছবিটি প্রযোজনা করেছেন শরিফ উল আনোয়ার সজ্জন। পরিচালনার পাশাপাশি কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন খন্দকার সুমন। সম্পাদনা, রং-বিন্যাস, এফেক্ট ও টাইটেল, সাউন্ড ডিজাইন ও সাউন্ড মিক্সিং করেছেন সুজন মাহমুদ। শব্দ গ্রহণে ছিলেন নাহিদ মাসুদ। চিত্রগ্রহণে ছিলেন সজল হোসেন, ইহতেশাম আহমদ টিংকু ও খন্দকার সুমন। আবহ সংহীত করেছেন মাহমুদ হায়াৎ অর্পণ। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কামরুজ্জামান রাব্বী, লায়লা তাজনূর সাউদী, লিমা হক। শিল্প নির্দেশনা দিয়েছেন রবি দেওয়ান। পোশাক পরিকল্পনায় ছিলেন আফ্রিনা বুলবুল। নৃত্য পরিচালনা করেছেন ফাহিম রায়হান। রূপসজ্জা করেছেন ফরহাদ রেজা মিলন ও পোস্টার ডিজাইন করেছেন সাজ্জাদুল ইসলাম সায়েম।
পুতুল ও ফজলুল ছাড়াও ‘সাঁতাও’-এর অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মো. সালাউদ্দিন, সাবেরা ইয়াসমিন, স্বাক্ষ্য শাহীদ, শ্রাবণী দাস রিমি, তাসমিতা শিমু, মিতু সরকার, ফারুক শিয়ার চিনু, আফ্রিনা বুলবুল, রুবল লোদী, কামরুজ্জামান রাব্বী, আব্দুল আজিজ মন্ডল, বিধান রায়, জুলফিকার চঞ্চল, বিনয় প্রসাদ গুপ্ত, সুপিন বর্মণ, রেফাত হাসান সৈকত, আব্দুল্লাহ আল সেন্টু, আলমগীর কবীর বাদল, রবি দেওয়ান, দীনবন্ধু পাল, হামিদ সরকার, মোঃ হানিফ রানা, আকতার হোসেন, আজিজুল হাকিম শিউস, সাইফুল ইসলাম লিটন, রাসেল তোকদার, মজনু সরকার, আবু কালাম, সিদ্দীক আলী, সুজন মাহমুদ, তাহসিনা আকতার তন্বী, নিশাত তাহিয়াত মিমন এবং তিস্তাবাজার এলাকাবাসী।
সারাবাংলা/এজেডএস