’ঊনলৌকিক’ থেকে এবার ‘ক্যাফে ডিজায়ার’
২১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৪:৫৪
‘ঊনলৌকিক’ সিরিজের পরিচালক রবিউল আলম রবি এবার ফিরছেন সিনেমা নিয়ে। চরকি অরিজিনাল ফিল্ম ‘ক্যাফে ডিজায়ার’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে আগামী ২২ ডিসেম্বর।
পুরো শহর অন্ধকার করে প্রতিরাতে অভিসারে বের হয় বিদ্যুৎ অফিসের এক কর্মকর্তা। এক উঠতি ব্যবসায়ী নিজের বিবেকের বিরুদ্ধে গিয়ে ক্লায়েন্টের মন রক্ষা করে। এক ট্রাভ্যাল এজেন্ট কৌশলে দেরি করিয়ে দেয় তারই গ্রাহকের ভিসা। এলাকার সবচেয়ে সুন্দর ছেলের মন পেতে গোপনে দৌড় শিখে এক তরুণী। বাথটাব সারাই করতে এক কলের মিস্ত্রি ঢুকে পড়ে তারই প্রিয় নায়িকার বাসায়। এ মানুষগুলো সবাই যুক্ত বাসনার অভিন্ন সুতায়।
তারকা ভরপুর মনস্তাত্বিক সম্পর্কের গল্প ‘ক্যাফে ডিজায়ার’। আজাদ আবুল কালাম, ইন্তেখাব দিনার, সোহেল মন্ডল, তমা মির্জা, খাইরুল বাশার, শ্যামল মাওলা, সানজিদা প্রীতি, সারিকা সাবরিন, আইশা খান, ফারহানা হামিদ, প্রিয়ন্তী উর্বী, প্রিয়াম অর্চি, বায়েজিদ হক জোয়ারদারসহ আরও অনেকেই অভিনয় করেছেন এই সিনেমায়।
একজন বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তার চরিত্রে দেখা যাবে ইন্তেখাব দিনারকে। তিনি কাজটা নিয়ে বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে কাজটা করেছি। পুরো দুই রাত জেগে আমাদের কাজটা করতে হয়েছে। কষ্ট হলেও কাজটা উপভোগ্য ছিল। গল্পটা মূলত মানুষের ছয় রিপুর গল্প। আশা করছি, ভিন্নধর্মী এই সিনেমাটি দর্শকের জন্যও উপভোগ্য হবে।’
ক্যাফে ডিজায়ার-এ অন্যতম একটি চরিত্রে থাকছেন সোহেল মন্ডল। তিনি বলেন, ‘এই শহরের নানা রকম মানুষের কামনা-বাসনার মনস্তাত্বিক গল্প নিয়েই ক্যাফে ডিজায়ার।ঊনলৌকিক-এর পর আবার রবি ভাইয়ের পরিচালনায় কাজ করাটাও খুব আনন্দের ছিল আমার জন্য। সেই সাথে শিবু দাদার মজা গল্প থাকলে আর কি লাগে।’
ওটিটিতে এখন নিয়মিত মুখ তমা মির্জা। এই কনটেন্ট নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি চাই কাজটা দর্শক দেখুক। এখন আমাদের এখানে বিভিন্ন রকমের গল্পের সিনেমা, সিরিজ, কনটেন্ট হচ্ছে। দর্শকদের দেখার ধরন, চাহিদাও পরিবর্তন হয়েছে। আর এই গল্পে সোহেল মন্ডলের সাথে কাজ করে বেশ মজা পেয়েছি। সহ-শিল্পী যদি খুব ভালো অভিনেতা হন তাইলে কাজটা খুব সহজ হয়ে যায়।’
চরকির পর্দায় প্রথমবারের মতো আসছেন সারিকা সাবরিন। তিনি কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, ‘কাজটা করতে গিয়ে আমার মনে হয়ে পুরো টিমটা খুবই গোছানো। এই গল্পে আমার চরিত্রটাও বেশ মজার। সব মিলিয়ে খুব ভালোবাসা দিয়ে কাজটা করেছি। দর্শকরাও আশা করি সেই ভালোবাসা আমাদেরকেক্যাফে ডিজায়ার-এর মধ্যে দিয়ে ফেরত দিবে।’
খাইরুল বাসার বলেন, ‘ক্যাফে ডিজায়ার গল্পটা চাওয়া, না পাওয়ার কানামাছি। রবি ভাই এই গল্পের মধ্য আমাদের মাঝে খুবই কমন কিন্তু আড়ালে থেকে যায় বা নীরবে ঘটে যায় এমন সব বিচিত্র ঘটনা বলতে যাচ্ছেন। সহশিল্পী হিসেবে সারিকার সাথে আমার এর আগেও বেশ কিছু কাজ হয়েছে। শুরু থেকেই তাকে খুবই সহযোগিতাপূর্ণ মনে হয়েছে আমার। দর্শকের ভালোবাসা আর উৎসাহেই ভালো কিছু ঘটানোর আর তাদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা দ্বিগুণ হয়ে উঠে। ক্যাফে ডিজায়ার এমনই এক চেষ্টা।’
এই সিনেমায় আছেন শ্যামল মাওলাও। তিনি বলেন, ‘ক্যাফে ডিজায়ার-এর গল্পটা উপলব্ধি করতে হবে। এটা না দেখা পর্যন্ত দর্শককে বলে বোঝানোও যাবে না। গল্পটা এখন বলে দিলে মজা শেষ হয়ে যাবে। এখন শুধু অপেক্ষা সিনেমাটা রিলিজ হওয়ার।’
‘ঘটনাচক্রে পেশাগত গন্তব্যের যাত্রা পথে কিছু সময়ের জন্য সহযাত্রী হয় দুইজন। ক্ষণিকের এই যাত্রায় দুটি অপরিচিত মানুষের ভেতরের কথোপকথন, তাদের জীবন সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি, চাওয়া-পাওয়া, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির ফারাক, আকাঙ্খা ও চাহিদা পূরণের যুদ্ধ, ভালবাসা বাসনা বা কামনা সম্পর্কে বিপরীতমুখী ভাবনা এসব কিছুর এক বিচিত্র মেলবন্ধন ঘটে। দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, এভাবেই আমাদের চলার পথে সাথে থাকবেন আরও ভাল কাজের অনুপ্রেরণা যোগাবেন।‘- বলেন সানজিদা প্রীতি।
শিবব্রত বর্মণের গল্পে চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক ও লেখক নিজেই। সুমন সরকার সিনোমাটোগ্রাফী, রাশিদ শরীফ শোয়েবের মিউজিক ও সালেহ সোবহান অনীমের সম্পাদনা কনটেন্টটিকে অন্যরকম এক মাত্রা যোগ করবে।
সিরিজের পর এবার সিনেমা নিয়ে ফেরার প্রস্তুতি নিয়ে পরিচালক রবিউল আলম রবি বলেন, ‘ঊনলৌকিক পরবর্তী কাজে গল্প বলার ধরন ও বিষয়ে পরিবর্তন আনতে চাচ্ছিলাম আমরা। স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে বহুল প্রচলিত সাসপেন্স-থ্রিলার, মার্ডার মিস্ট্রি ইত্যাদির বাইরে আর কি করা যায়, ভাবছিলাম। দৈনন্দিন প্রাত্যহিকতা, অস্তিত্ব সংকট, নর-নারীর সম্পর্ক, মানুষের মনস্তত্ত্ব, বাস্তববাদী শৈলী, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করি। সেই প্রেক্ষাপটে শিবু দা (শিবব্রত বর্মন) কিছু চরিত্রের খসড়া তৈরি করেন। তাতে লক্ষ্য করি যে, সবগুলো চরিত্র ও তাদেরকে কেন্দ্র করে তৈরি করা প্লটগুলো মূলত প্রেম, কামনা ও বাসনার অভিন্ন সুতায় গাঁথা।’
দর্শকদের উদ্দেশ্য পরিচালক বলেন, ‘যারা চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, আর যারা সেটা দেখেন, দু’পক্ষ ভিন্ন জগতের বাসিন্দা। চলচ্চিত্রটা তাদের মধ্যে এক যোগাযোগের মাধ্যম। ফলে প্রতিবার কিছু বানাবার পর আমি উদ্বেগে থাকি – দর্শকেরা এটা কীভাবে নেবেন, কতোটা যোগাযোগ তৈরি করা সম্ভব হবে। এবার দ্বিগুণ উদ্বেগে আছি। কেননা এ ছবিতে আমরা গল্প বলা নিয়ে কিছু নিরীক্ষা করেছি।’
সারাবাংলা/এজেডএস