সাঁতাওয়ের বিকল্প যাত্রা শুরু
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২৩:১৬
বাণিজ্যিকভাবে সিনেমা হলে মুক্তির পর খন্দকার সুমন তার প্রথম সন্তান ‘সাঁতাও’ নিয়ে নতুন যাত্রা শুরু করেছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিকল্প প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করছেন। একের পর এক শহরে, গ্রামে ছুটে বেড়াচ্ছেন এ নির্মাতা।
‘অনেক মানুষই আমাদের সিনেমাটি দেখতে চাইছেন। কিন্তু তাদের এলাকায় হয়তো সিনেমা হল নেই, কিংবা প্রদর্শনীর কোনো ব্যবস্থা নেই। সে জায়গা থেকে আমরাই প্রদর্শনীর সকল ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এর বিনিময়ে একটা ফি নিচ্ছি’,— বলেন সুমন।
নবীন এ নির্মাতার বিকল্প প্রদর্শনীর যাত্রা শুরু হয়েছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ আয়োজিত ‘আমার ভাষার চলচ্চিত্র ১৪২৯’ দিয়ে। সেখানে ‘শ্রেষ্ঠ শব্দশৈলী পুরস্কার’ জিতে ছবিটি।
সুমন জানালেন, এ সপ্তাহে এবং আগামী সপ্তাহে দেশের বেশ কিছু সিনেমা হলে ছবিটি চলবে। ২২ ফেব্রুয়ারি দুটি জায়গায় এর প্রদর্শনী হবে। প্রথমটি ধানমন্ডির ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের ফিল্ম ক্লাবের আয়োজনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে দুপুর ২টায় ছবিটি প্রদর্শিত হবে। একই দিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের আয়োজনে ছবিটি প্রদর্শিত হবে বিকেল ৩টা, ৫টা ও সন্ধ্যা ৭টায়।
২ মার্চ ঢাকায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী আয়োজিত ৩য় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবের সন্ধ্যা ৭টায় ছবিটি প্রদর্শিত হবে। এর পরদিন ৩ মার্চ ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেমাস্কোপের আয়োজনে সকাল ১০টায় একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।
কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারীর পন্ডিত বইমেলার সমাপনী দিন ৫ মার্চ সন্ধ্যা ৭টায় একটি বিশেষ প্রদর্শনী হবে ‘সাঁতাও’-য়ের। যেখানে দেড় হাজারের উপরে দর্শক উপস্থিত থাকবেন বলে পরিচালক জানালেন।
‘সাঁতাও’-এর শুটিং হয়েছিলো লালমনিরহাটের তিস্তাবাজার এলাকায়। সেখানকার তিস্তা ডিগ্রি কলেজে দুদিন ব্যাপী এর প্রদর্শনী হবে। প্রথম দিন ৭ মার্চ প্রদর্শনী হবে দুটি— বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা ৭টায়। ৮ মার্চ প্রদর্শনী হবে তিনটি— বিকেল ৩টা ও ৫টা এবং সন্ধ্যা ৭টা।
পাটগ্রামের এলাকাবাসী ৯ মার্চ বিকাল ৫টায় একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। ১০ মার্চ তুষভান্ডার এলাকার স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের আয়োজনে বিকাল ৫টায় ছবিটির একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।
ছবিটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আইনুন পুতুল ও ফজলুল হক। এর গল্পে দেখা যাবে, গ্রামের কৃষক ফজলু বিয়ের পর বুঝতে পারে নতুন সংসারে পুতুল একাকিত্ব অনুভব করছে। পুতুলের একাকিত্ব দূর করতে ফজলু একটি গাভী কিনে আনে। পুতুল তার সংসারে নতুন সঙ্গী পেয়ে বাবার বাড়ি ছেড়ে আসার কষ্ট গুলো কিছুটা ভুলতে শুরু করে। এই দিকে নদীর উজানে একের পর এক বাঁধের কারণে ভাটি অঞ্চল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন প্রতিকূল পরিবেশে ফজলুর মত কৃষকদের কৃষি কাজে নানান সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়। অবিরাম বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢল এসে উপচে না পড়া পর্যন্ত বাঁধগুলোর দরজা বন্ধ রাখা হয়। আবার বাঁধের দরজাগুলো খুলে দিলে আটকে থাকা বিশাল জলধারা নদীতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। নদীর গভীরতা কম থাকায় হঠাৎ প্রবাহিত জলধারা নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত হয়ে পশু-পাখিসহ জনজীবনে অভিশাপ বয়ে আনে। নদীর এমন বিরূপ আচরণে ফজলু এবং পুতুলের সুখি সংসার বিষাদময় হয়ে উঠে।
আইডিয়া এক্সচেঞ্জের ব্যানারে ছবিটি প্রযোজনা করেছেন শরিফ উল আনোয়ার সজ্জন। পরিচালনার পাশাপাশি কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন খন্দকার সুমন। সম্পাদনা, রং-বিন্যাস, এফেক্ট ও টাইটেল, সাউন্ড ডিজাইন ও সাউন্ড মিক্সিং করেছেন সুজন মাহমুদ। শব্দ গ্রহণে ছিলেন নাহিদ মাসুদ। চিত্রগ্রহণে ছিলেন সজল হোসেন, ইহতেশাম আহমদ টিংকু ও খন্দকার সুমন। আবহ সংহীত করেছেন মাহমুদ হায়াৎ অর্পণ। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কামরুজ্জামান রাব্বী, লায়লা তাজনূর সাউদী, লিমা হক। শিল্প নির্দেশনা দিয়েছেন রবি দেওয়ান। পোশাক পরিকল্পনায় ছিলেন আফ্রিনা বুলবুল। নৃত্য পরিচালনা করেছেন ফাহিম রায়হান। রূপসজ্জা করেছেন ফরহাদ রেজা মিলন ও পোস্টার ডিজাইন করেছেন সাজ্জাদুল ইসলাম সায়েম।
সারাবাংলা/এজেডএস