দেশে সিনেমা হলে দর্শক সংকটের কারণে হল মালিকরা দীর্ঘদিন যাবত হিন্দি ছবি চালানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এ নিয়ে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে পক্ষে বিপক্ষে। অবশেষে চলচ্চিত্রের ১৯টি সংগঠন সব এক জোট হয়েছে। তারা হিন্দি ছবি আমদানির পক্ষে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে লিখিত দিয়েছে। এ ব্যাপারে রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে এ সম্পর্কিত কিছু প্রস্তাবনা তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের কাছে তুলে ধরেন প্রতিনিধি দল।
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, সাধারণ সম্পাদক শাহীন সুমন, শিল্পী সমিতির সাধারণ নিপুণসহ ১৯ সংগঠনের নেতারা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
কাজী হায়াৎ সারাবাংলাকে বলেন, মন্ত্রী আমাদেরকে জানিয়েছেন তিনি আমাদের সঙ্গে বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি আমাদের দাবি-দাওয়া শুনতে বলেছেন। আমরা তার কাছে হিন্দি ছবি আমদানিসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে প্রস্তাবনা দিয়েছি। তিনি আমাদের প্রস্তাবগুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
সংগঠনগুলো থেকে দেওয়া প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে চলচ্চিত্রে শিল্পী সংকট কাটাতে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ আবার চালু করা। শুধু সিনেমা হল নির্মাণে ঋণ নয়, চলচ্চিত্র বানাতে নির্মাতা ও প্রযোজকদের ঋণ, বীমা ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করা। এ ঋণ যেনো শিল্প ঋণের মত সকল সুযোগ সুবিধা পায়, তার ব্যবস্থা করা। যেহেতু চলচ্চিত্রকে সরকার ২০১২ সালেই শিল্প ঘোষণা করেছে।
হিন্দি ছবি আমদানির ব্যাপারে কাজী হায়াৎ জানান, সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে— সিনেমা হল মালিকদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা বলেছি হিন্দি ছবি পরীক্ষামূলকভাবে দুই বছরের জন্য অনুমতি দেওয়া। প্রথম বছর ১০টি এবং পরের বছর ৮টি ছবি এভাবে যেন করা হয় বিষয়টা। তবে এ সময় শর্ত থাকবে, যদি এ দুই বছরের মধ্যে বাংলাদেশি নির্মাতাদের ছবির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যায় তাহলে আর হিন্দি ছবি চালানোর অনুমতি দেওয়া যাবে না।
শাহরুখ খানের ‘পাঠান’ সাফটা চুক্তির আওতায় আমদানির অনুমতি চেয়েছেন অনন্য মামুন। তার প্রতিষ্ঠান অ্যাকশন কাট এন্টারটেনমেন্ট ছবিটি চালানোর জন্য দেশের সিনেমা হলগুলোতে ই-টিকেটিং সিস্টেম ও সার্ভার বসানোর উদ্যোগও নিয়েছে। ও ছবির ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানালেন কাজী হায়াৎ।
তিনি বলেন, ‘পাঠান’-এর ব্যাপারে হল মালিকরা জিজ্ঞেস করলে সচিব জানান— সাফটা চুক্তির দুটি ধারা পারস্পরিক সাংঘর্ষিক। এ নিয়ে ব্যাখা বা সিদ্ধান্তের আগে ‘পাঠান’ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নয়।
তবে ‘পাঠান’ আমদানিকারক অনন্য মামুন সারাবাংলাকে বলেন, চলচ্চিত্রের সকল সংগঠন হিন্দি ছবি আমদানির পক্ষে একমত হয়েছেন। এটা আমি মনে করি আমাদের অনেক বড় অর্জন। এখন বাকি আইনি বাধ্যবাধকতা খুবই শিগগিরই সমাধান হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। সরকার অনুমতি দিলেই আমরা ‘পাঠান’ চালাতে প্রস্তুত। শুধু ‘পাঠান’ অন্য হিন্দি ছবিও আমরা আমদানির প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।