মাহির গর্ভের সন্তানের যেন ক্ষতি না হয়: চাওয়া সহকর্মীদের
১৮ মার্চ ২০২৩ ১৭:০০
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে। শনিবার (১৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তাকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় তার সহকর্মীরা বলছেন, তাকে গ্রেফতারের আগে মানবিক দিক বিবেচনা করা উচিত ছিল। একইসঙ্গে তার গর্ভের সন্তানের যেন কোন ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ বলেন, মাহি গ্রেফতারের ব্যাপারটি পুলিশের এখতিয়ার। সে কিন্তু একজন শিল্পী। তাকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া উচিত গ্রেফতারের আগে। সেটা হতে পারতো আদালতে, কিংবা পুলিশের কাছে সরাসরি উপস্থিত হয়ে বা অন্য কোনোভাবে। আর এটা করা উচিত ছিল মানবিক দিক বিবেচনা করে।
মাহিয়া মাহির সঙ্গে ‘পোড়ামন’, ‘জান্নাত’সহ বেশ কয়েকটি ব্যবসাসফল ও প্রশংসিত ছবিতে অভিনয় করেছেন সাইমন সাদিক। তিনি অবশ্য মাহির গ্রেফতারের ইস্যুতে সরাসরি মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, শিল্পী-সহকর্মী হিসেবে মাহি অসাধারণ। ব্যক্তি হিসেবে বলবো দারুণ। কিন্তু পুলিশি এ ইস্যুতে আমার কোন বক্তব্য নেই।
শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ বলেন, মাহির বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে তার বাদী পুলিশ। তার মানে এটা এখন রাষ্ট্রীয় ইস্যু। ফেসবুকে দেখলাম তাকে আদালত থেকে কারাগরে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সে একজন সন্তানসম্ভাবা নারী এবং শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তাই একজন গর্ভবতী নারী হিসেবে তাকে যেখানেই রাখুক ভালো কোথাও যেন রাখা হয় সে অনুরোধই রাখবো পুলিশের কাছে। তার জন্য যে জায়গা যেন কমফোটেবল হয়।
আপনারা পুলিশের কাছে এ বিষয়ে কোন কথা বলবেন কিনা? এমন প্রশ্নে নিপুণ বলেন, ‘এ মুহূর্তে তার স্বামীর পাশে থাকা উচিত। আমাদের চেয়ে তার থাকাটা বেশি জরুরি।’
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী অভিনেত্রী জয়া আহসান বলেন, মাহি জনপ্রিয় অভিনেত্রী, কিন্তু দেশের সব নাগরিকের মতো তিনিও আইনের অধীন। তবে এই কথাটা বিশেষভাবে মনে রাখা দরকার, তিনি এখন মাসের নয় মাসের অন্তঃসত্তা। তার অভিযোগের তদন্ত চলুক, কিন্তু একজন গর্ভধারিণী মায়ের এবং তার সন্তানের যেন কোনো ক্ষতি না হয়। রিমান্ড মঞ্জুর না করার জন্য বিজ্ঞ আদালতকে ধন্যবাদ জানাই। পুলিশের কর্মকর্তাদেরও অনুরোধ করব, মা আর অনাগত শিশুর যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সে ব্যাপারে যেন সংবেদনশীল থাকবেন।
অভিনেতা শিমুল খান প্রশ্ন রেখে বলেন, মাহিয়া মাহির পেটে থাকা অনাগত সন্তানের যদি কোনো ক্ষতি হয় তাহলে এই রাষ্ট্র কি তার দায় নেবে?
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী অভিনেত্রী তমা মীর্জা বলেন, মাহিয়া মাহি এতো বড় অপরাধ করে ফেলেছে যে আট মাসের গর্ভবতী এক নারীকে এতো আয়োজন করে এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হলো ? আসলে অনেক বড় আসামি ধরে ফেলেছে।ও আমি আবার এগুলা নিয়ে কেনো কথা বলছি দেখা যাবে কথা বলার অপরাধে আমিও…।
গীতিকার ও সাংবাদিক জাহিদ আকবর বলেন, গর্ভবতী একজন নারীকে এইভাবে ধরে নিয়ে যাওয়া আসলে কতোটা যুক্তিযুক্ত? চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ফেসবুকে যা বলেছেন সেটা নিয়ে বিস্তর কথাবার্তা হতে পারে। কিন্তু ৮ মাসের একজন গর্ভবতী নারীকে এইভাবে ধরে নিয়ে যাওয়া সত্যি বড় বেদনার। এই দায় আসলে কার? যে আইনে তাকে ধরা হয়েছে সেটাও বাতিল প্রয়োজন। একজন গর্ভবতী নারী একজন শিল্পীর দ্রুত মুক্তি কামনা করছি।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী নির্মাতা রেদোয়ান রনি, জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুণ ও অভিনেতা আদর আজাদ মাহিকে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান।
সারাবাংলা/এজেডএস
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ গ্রেফতার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মাহিয়া মাহি