‘আদম’ প্রদর্শন বন্ধের রিট না শুনে ফেরত দিয়েছে হাইকোর্ট
১৬ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:৩১
ঢাকা: ‘আদম’ সিনেমার সেন্সর ছাড়পত্র বাতিল এবং এটির প্রদর্শন ও প্রচার বন্ধ চেয়ে করা রিটটি না শুনে ফিরিয়ে দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার (১৬ মার্চ) বিচারপতি সরদার রাশেদ জাহাঙ্গীর ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি শুনানির জন্য গ্রহণ না করে এটি নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পরামর্শ দেন।
এ সময় আদালত বলেন, ‘এটা আমরা শুনবো না। এটি (চলমান ভ্যাকেশন শেষে) নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নিতে পারেন’। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. ইসমাঈল হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা জামিল হাসানের পক্ষে আইনজীবী মো. ইসমাঈল হোসেন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন।
ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ এনে ‘আদম’ নামক সিনেমার প্রদর্শন ও প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি দায়ের করা হয়।
রিটে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, আদম সিনেমার পরিচালক আবু তৌহিদ হিরন, প্রযোজক তামিম হোসাইনসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল ‘আদম’ নামক সিনেমার সেন্সর সনদপত্র বাতিল ও প্রদর্শন বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, তথ্য সচিব বরাবর আবেদন করেন জামিল হাসান।
ওই আবেদনে বলা হয়, গত ২ এপ্রিল আসন্ন ঈদুল ফিতরে মুক্তির জন্য ‘আদম’ নামীয় একটি বাংলা সিনেমার ট্রেইলার প্রকাশিত হয়েছে। আমি একজন সচেতন ও শিক্ষিত নাগরিক হিসাবে ফেসবুক ও ইউটিউবসহ নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উক্ত সিনেমার ট্রেইলার এবং তৎপ্রেক্ষিতে নেটিজেনদের মন্তব্য দেখেছি। অতঃপর উক্ত সিনেমা সংক্রান্তে দেশের নানান পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট পড়ে জানতে পারি ২০২২ সালে উক্ত সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে।
বাংলাদেশ চলচিত্র সেন্সর বোর্ড বিগত ১৯ নভেম্বর তারিখে উক্ত সিনেমাটি প্রদর্শনের জন্য সেন্সর সনদপত্র/ছাড়পত্র প্রদান করেছে।
প্রকাশিত সিনেমাটির টেইলরে দেখা যায়, মুসলিম সমাজে ফতোয়াকে উসকে দেওয়া হয়েছে। গ্রাম্য বিচার কামিনীকে মাটিতে পুতে পাথর নিক্ষেপ করে মেরে ফেলার ফতোয়া দেন ইমাম সাহেব। হিন্দু পুরোহিত কামিনাকে আগুনে পুড়িয়ে মারার সিদ্ধান্ত দেন। বৌদ্ধ ধর্ম প্রধান জীব হত্যা মহাপাপ এবং খ্রিস্টান যাজক অনাগত সন্তানকে পৃথিবীর আলোয় আনতে মতামত দেন। শালিসের মধ্যে কেউ একজন আজান দেন। তখন তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, এই থাম। আজান দিচ্ছে. তুই জানস ও হিন্দু না মুসলমান।
আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সিংহভাগ জনগন মুসলিম এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বী। কিন্তু সিনেমাটিতে মুসলিম, হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মকে পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে ধর্মীয় উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করা করা হয়েছে। মুসলমানদের সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজানের পর ঈদুল ফিতরে এই ধরনের ধর্মীয় উস্কানিমূলক সিনেমা মুক্তি প্রদান করা হলে জনগনের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হইবে। ইতোমধ্যে ফেসবুক এবং ইউটিউবেও অনেক নেটিজেন সিনেমাটির বিষয়ে বিরুপ মন্তব্য প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। বাংলাদেশের মানুষ নিজ নিজ ধর্মের ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে আগ্রহী। সিনেমাটিতে একইসঙ্গে ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো সংলাপ ও দৃশ্য রয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। যা আমাদের সংবিধানের মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক। এমতাবস্থায়, উক্ত সিনেমার সেন্সর সনদপত্র/ছাড়পত্র বাতিল করে প্রদর্শন ও প্রচার বন্ধ করা প্রয়োজন।
সারাবাংলা/কেআইএফ