নোবেলকে বিবাহ বিচ্ছেদের চূড়ান্ত নোটিশ
৪ মে ২০২৩ ১৭:৪৫
সংগীতশিল্পী নোবেলকে বিবাহ বিচ্ছেদের চূড়ান্ত নোটিশ পাঠিয়েছেন তার স্ত্রী সালসাবিল। ২০২১ সালে ‘বান্দরবান কাণ্ডের’ পর বিচ্ছেদের নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তা স্থগিত করেছিলেন বলে জানিয়েছেন সালসাবিল।
সারাবাংলার সঙ্গে আলাপচারিতায় সালসাবিল জানান, ‘যখন নোটিশ দিয়েছিলাম তখন নোবেল আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। ক্ষমা চায়। ভালো হবার সুযোগ চায়। আমি ও আমার বাবা মিলে তার সঙ্গে বসি। তখন সে বলেছিল, সে বুঝতেছে নেশায় পড়ে সে ভুল করছে। কিন্তু তাকে সময় দেওয়া হোক সে এ জায়গা ফেরত আসতে চায়। কারণ এসবের কারণে তার ব্যক্তিজীবন, গানের ক্যারিয়ার সবই ধ্বংস হচ্ছে। এটা সে চায় না।’
২০২১ সালের ৬ অক্টোবর সারাবাংলার এ প্রতিবেদককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সালসাবিল বলেছিলেন, সে বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি নোবেলকে বিবাহ বিচ্ছেদ নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। তিনি সে নোটিশে বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে বলেছিলেন, ‘স্ত্রী হিসেবে দুই বছরের খোরপোষ না দেওয়া, স্বামীর মানসিক ভারসাম্যহীনতা, কাবিনের শর্ত লঙ্ঘন, চরিত্রহীনতা, নির্যাতনকারী এবং বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে লিপ্ত, মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে নোবেলের সঙ্গে সংসার করতে চাইছেন না।
আরও পড়ুন: আমি ওকে ঘৃণা করি এমন না, ওর জন্য মায়া লাগে: নোবেলের স্ত্রী
‘আমাদেরকে দেওয়া কথা অনুযায়ী সে কয়েক মাস ভালো ছিলো। কিন্তু সম্প্রতি ঘটনাতো (কুষ্টিয়ার কলেজে গান গাইতে গিয়ে বিশৃঙ্খলা) আপনাদের জানা। সে আবার নেশা ধরেছে। তার সঙ্গে গেল পরশু (মঙ্গলবার) রাতে আবার কথা হয়েছে আমার সঙ্গে। সে বলেছে, সে নেশা ছাড়তে পারবে না। তাই স্থগিত করা বিবাহ বিচ্ছেদের নোটিশ আমি আমার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে রেজিস্ট্রেশনের জন্য বলেছি। ফলে আগামী তিন মাসের মধ্যে অটোমেটিক্যালি তা কার্যকর হয়ে যাবে,’—বলেন সালসাবিল।
গেল এক বছর তাদের দুজনের মধ্যে যোগাযোগ থাকলেও তারা একসঙ্গে থাকতেন না বলে জানান সালসাবিল। তিনি জানান, তার সঙ্গে তো তার পরিবারেরও সম্পর্ক নেই।
নোবেলকে কি নেশা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কোন প্রকার চিকিৎসা বা কাউন্সেলিংয়ের চেষ্টা করেননি? জবাবে সালসাবিল, ‘একজন ডাক্তারের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, তার যে নেশার অভ্যাস এটা ছাড়াতে তার ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট। এখানে কোনো ওষুধ কাজ করবে না।’
এদিকে বিচ্ছেদের কারণ জানিয়ে সালসাবিল তার ফেসবুক পেইজে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাতে তিনি দাবি করেছেন, এয়ারহোস্টদের একটা সিন্ডিকেট নোবেলকে মাদক সরবরাহ করতো। তিনি লেখেন, ‘নোবেল কখনোই এতো অসুস্থ ছিলো না । এমন না যে নোবেলের আজকের এই অবস্থার জন্য ও শুধু একা দায়ী । অবশ্যই সে নিজেই সবচেয়ে বেশি দায়ী কিন্তু তার মাদকদ্রব্য প্রাপ্তি ও আসক্তির ক্ষেত্রে অনেক ক্ষমতাশালী মানুষদের অবদান আছে— সরকারি প্রশাসনিক উর্ধতন কর্মকর্তা , রাজনীতিবিদ, ক্ষমতাশালী ব্যাবসায়ী; (দরকার হলে নাম বলব)।’
‘যাদের আগের ক্রিমিনাল রেকর্ড আপনারা নিউজে দেখেছেন অথবা এখনো দেখেননি, কিন্তু নোবেলের আশে পাশে তাদের অবশ্যই দেখেছেন এবং দেখে থাকবেন । (তাদের মধ্যে কিছু শো অরগানাইজারও)।’
তিনি আরও লেখেন, ‘বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য ব্যাবসায় তারা সচল এবং কিছু এয়ার হোস্টেসদের (একজন এয়ারহোস্টেস যে অন্য এয়ারহোস্টেসদের পরিচালনা করে এবং ডিস্ট্রিবিউশন সুবিধার্থে পরিচিত মুখ/ভিক্টিম খুঁজে বের করে) মাধ্যমে এবং অন্যান্য পন্থায় তারা দেশে মাদক আমদানি করে এবং গোপনভাবে ডিস্ট্রিবিউশন করে যার একজন ভিক্টিম নোবেল নিজেই , আসলে শুধু ভিক্টিম বললে ভুল হবে এখন জড়িত।’
২০১৯ সালে ভারতের জি বাংলা টেলিভিশনের রিয়েলিটি শো ‘সারেগামাপা’-তে অংশ নিয়ে আলোচনায় আসেন নোবেল।
এরমধ্যে নোবেলের গানের ভিডিওতেও হাজির হয়েছেন সালসাবিল। ২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর মেহরুবা সালসাবিলের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন নোবেল।
সারাবাংলা/এজেডএস