রাজের বউ পরিচয়ে আপত্তি পরীমণির
৪ জুন ২০২৩ ১৬:৫২
গেল বছর একবার পরীমণির সঙ্গে শরিফুল রাজের বিচ্ছেদ হয়ে যাচ্ছে এমন খবর জানা গিয়েছিল। তখন দুজনেই এ প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন। পরে অবশ্য তারা দুজন আবার একসঙ্গে বসবাস শুরু করে। তবে এবার আবার তাদের সংসারে বাজছে ভাঙ্গনের সুর। আগেরবার শরিফুল রাজ অস্বীকার করলেও এবার দুজনেই এমনটা ইঙ্গিত দিয়ে কথা বলছেন গণমাধ্যমে। তিনি রাজের বউ এমনটা শুনতে চান না বলেও বক্তব্য দিয়েছেন।
গেল ২৯ মে শরিফুল রাজের সঙ্গে সুনেরাহ, তানজিন তিশা ও নাজিফা তুষির কিছু ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস হয়। তখন রাজের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না এমনটা জানান পরীমণি। এমন কী পরীমণি জানান, রাজ ২০ মে থেকে তার সঙ্গে এক বাসায় থাকছেন না। আবার শরিফুল রাজও এক সাক্ষাৎকারে তাদের সম্পর্ক বিচ্ছেদের দিকে গড়াচ্ছে এমন ইঙ্গিত দেন।
তবে এক সঙ্গে না থাকা, বিচ্ছেদের দিকে যাওয়ার বিষয়টি ভিডিও ফাঁসের আগে থেকে। মূলত গত বছর শরিফুল রাজ অভিনীত ‘দামাল’ ছবিটি মুক্তির সময় মীমের সঙ্গে রাজের প্রেমের ইঙ্গিত দিয়ে স্ট্যাটাস দেন পরীমণি। তখন থেকে তাদের সম্পর্কের অবনতি।
এই কথা স্বীকার করে পরী বলেন, ‘ছবিটির মুক্তির সময় থেকে আমাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক যাচ্ছিল না। রাজ আগের মতো নিয়মিত বাসায় থাকত না। বিশ্বাস করেন, কিছুদিন আগে আমি হাসপাতালে ছিলাম, আমাকে দেখতেও যায়নি সে। আমার সঙ্গে তার এখন শারীরিক, মানসিক কোনো অ্যাটাচমেন্টই নাই। আমি যখন হাসপাতালে, তখনই বাসায় রাজ তার জিনিসপত্র গুছিয়ে রেখেছিল। আগেই প্রস্তুত ছিল বাসা থেকে বেরিয়ে যাবে। সম্পর্ক রাখবে না। এভাবে তো আর সংসার, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।’
তাহলে কি বিচ্ছেদের দিকে যাচ্ছে সংসার- এমন প্রশ্নে পরীর উত্তর, ‘ও তো আমাকে ছেড়ে চলেই গেছে, বিচ্ছেদ তো হয়েই গেছে। আমি আর কল্পনাতেও ভাবতে চাই না শরিফুল রাজ আমার জামাই। একটা মানুষ চলে গেলে তো আর ধরে রাখা যায় না। রাজ এখন বলে কী, আমাদের বিয়ের কাবিননামা নাকি ভুল। আমাদের নাকি ঠিকঠাক বিয়েই হয়নি। যে এভাবে বলতে পারে, সে ভয়ংকর মানুষ। তার সঙ্গে থাকা যাবে না। আমি চাই সে আমাকে তালাক দিয়ে দিক। আমি ওর প্রাক্তন, এটাই শুনতে আমার ভালো লাগবে। আমি রাজের বউ, এটি আর শুনতে চাই না।’
এদিকে বাসা থেকে বের হওয়া প্রসঙ্গে রাজ বলেন, ‘আমি বাসা থেকে কেন বেরিয়ে এসেছি, পরী ভালো করে জানে। কীভাবে বেরিয়ে এসেছি, তা-ও সে ভালো করে জানে। ওই দিন বাসায় তার ও আমার পরিচালক গুরু গিয়াস উদ্দিন সেলিম ছিলেন, সঙ্গে তার স্ত্রীও ছিলেন।’
এদিকে পরীমণি সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দেন এভাবে, ‘রাজ বাইরে ছিল। সেলিম ভাই ও তার বউ তাকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় আসেন। সম্ভবত, এটি গত ২০ মের ঘটনা। আসার আগে সেলিম ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, আমি রাজকে সঙ্গে করে নিয়ে তোমার বাসায় আসছি। এসে বলেন, রাজ তো তোমার সঙ্গে থাকতে চায় না। বিচ্ছেদের ব্যাপারে চিন্তা করতে পারো। আমি বললাম, ও আমার সঙ্গে থাকতে চায় না, তাহলে ও–ই আমাকে ডিভোর্স দিক। আমি কেন দিতে যাব? পরে সেলিম ভাই বললেন, যদি তোমাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়, তাহলে বাচ্চাকে দেখভাল করতে কীভাবে কী করবে, চিন্তাভাবনা করে দেখো। এরপর আমি বললাম, বাচ্চা আমার কাছেই থাকবে। বিচ্ছেদ হওয়ার পর অবশ্যই সে বাচ্চা দেখতে আসতে পারবে। তবে শর্ত, সে অস্বাভাবিক সময় বাসায় এলে বাচ্চাকে দেখতে দেব না। যদি রাত চারটায় আসে, ভোরবেলায় আসে, তাহলে তো বাচ্চা দেখতে দেওয়ার সুযোগই নাই। স্বাভাবিক, সঠিক সময়ে এসে সে বাচ্চা দেখতেই পারে। কোনো সমস্যা নাই।’
পরী আরও বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে ওই রাতে সেলিম ভাইয়ের সঙ্গে আমার অনেক কথা–কাটাকাটি হয়। রাজের সঙ্গেও হয়েছে। কারণ, ওইদিন বিভিন্নজনের সঙ্গে মিলিয়ে রাজ আমার চরিত্র নিয়ে অনেক কথা তুলেছিল। একটা পর্যায়ে সেলিম ভাই, তার বউসহ রাজ তার সব জিনিসপত্র নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে। এরপর আর আসেনি।’
তিনি বলেন, ‘রাজ এখন বলে কী, আমাদের বিয়ের কাবিননামা নাকি ভুল। আমাদের নাকি ঠিকঠাক বিয়েই হয়নি। যে এভাবে বলতে পারে, সে ভয়ংকর মানুষ।
রাজকে দায়ী করে পরী বলেন, ‘রাজ আমার বাচ্চার বাপ, সেটা অস্বীকার করা যাবে না। আমরা একে অপরের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু আমাদের সন্তানের জন্য আফসোস হয়ে থাকবে, বাবা-মাকে নিয়ে সুখী জীবন পাচ্ছে না আমাদের সন্তান। আর এর জন্য দায়ী রাজ। আমাকে দোষ দেওয়ার কোনো সুযোগ নাই। এই সংসার টেকানোর জন্য আমি কী পরিমাণ চেষ্টা করে গেছি, রাজও জানে সেটি।’
সন্তানের দিকে তাকিয়ে যদি রাজ পুনরায় ফিরে আসে, তাহলে তাকে গ্রহণ করবেন না বলে জানালেন পরীমণি।
২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর গোপনে বিয়ে করেন শরিফুল রাজ ও পরীমণি। এরপর ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি তারা হুট করে সন্তান গ্রহণের খবর প্রকাশ করেন। সেই সূত্রেই সামনে আসে বিয়ের খবর। পরে ২২ জানুয়ারি তারা পারিবারিক আয়োজনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। একই বছরের ১০ আগস্ট তাদের পুত্র শাহীম মুহাম্মদ রাজ্যর জন্ম হয়।
সারাবাংলা/এজেডএস