কোক স্টুডিও বাংলায় ‘কথা কইয়ো না’র ফিউশন
১০ জুন ২০২৩ ১৮:৫৭
কোক স্টুডিও বাংলা-র দ্বিতীয় সিজনের নতুন গান ‘কথা কইয়ো না’-তে শহুরে গান ও লোকসঙ্গীতের মিশ্রণ ঘটেছে। প্ল্যাটফর্মটির মৌলিক এই গানটি লিখেছেন খ্যাতনামা শহুরে কবি হাশিম মাহমুদ, আর এর সুর ও সঙ্গীত প্রযোজনায় ছিলেন বিখ্যাত শিল্পী ইমন চৌধুরী। গানটির মূল শিল্পী এরফান মৃধা শিবলু, যিনি হাশিম মাহমুদের সাথে ২০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন এবং তার সাথে রয়েছেন অসাধারণ কণ্ঠস্বরের অধিকারী লোকসঙ্গীত শিল্পী আলেয়া বেগম।
‘কথা কইয়ো না’ গানের কথায় প্রিয়জনের সাথে দেখা করার আকুতি খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। টিকে থাকার লড়াইয়ে মানসিক শান্তির জন্য আমরা বারবার আমাদের প্রিয়জনদের কাছে ফিরে যেতে চাই। আধুনিক গান ও ময়মনসিংহ গীতিকার ফিউশনের মাধ্যমে গানটিতে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এই তীব্র আকাঙ্ক্ষা এবং প্রিয়জনের সাথে থাকতে না পারার আকুলতা উপস্থাপন করা হয়েছে।
গানটির সুরকার ও সঙ্গীত প্রযোজক ইমন চৌধুরী বলেন, ‘কোক স্টুডিও বাংলা-র মাধ্যমে আমরা শিল্পীরা একটা প্ল্যাটফর্ম পেয়েছি, যেখানে আমরা সঙ্গীতের বিভিন্ন উপাদান নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারি। আর দর্শক-শ্রোতারাও আমাদের সাথে একটি মন্ত্রমুগ্ধকর যাত্রায় সামিল হতে পারেন। বিভিন্ন ধারার এমন প্রতিভাবান শিল্পীদের সাথে কাজ করা আমার জন্য খুব অনুপ্রেরণামূলক ছিল।’
গানটির দৃশ্যায়নে দেখা যায় চাঁদের আলোয় আলোকিত একটি গ্রামের বাড়ির উঠোন। যুগ যুগ ধরে এমন চাঁদনী রাতে বাংলাদেশের গ্রামের উঠোনে গানের আসরের আয়োজন হয়ে আসছে। পূর্ণিমা রাতের সৌন্দর্যে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেক গানও সৃষ্টি হয়েছে। কোক স্টুডিও বাংলা এ ধরনের গানের আসরকে তুলে ধরতে চেয়েছে। গানে দেখা যায়, এরফান মৃধা শিবলু ও তার বোহেমিয়ান শহুরে শিল্পী বন্ধুদের দল একটি গ্রামে বেড়াতে যান, সেখানে তারা আলেয়া বেগম ও তার নারী বাউলদের দলের সাথে মিলে এই শ্রুতিমধুর গানটি তৈরি করেন।
দুই মূল শিল্পীরই নিজেদের ‘দোহার’ ছিল। শিবলু’র সাথে ছিলেন আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের সাথে আধুনিক ব্যাক ভোকালের দল। অন্যদিকে আলেয়া বেগমের নেতৃত্বে ছিল নারী বাউলদের অর্কেস্ট্রা। এই প্রথমবারের মতো কোক স্টুডিও বাংলা বা অন্য কোনো প্ল্যাটফর্মে বাউল অর্কেস্ট্রা দেখা গেছে। মূল শিল্পীরা ও তাদের দোহার চমৎকারভাবে শহুরে গান ও লোকসঙ্গীতের সৌন্দর্য প্রকাশ করেছেন, আর মাঝে ইমন চৌধুরী পুরো পরিবেশনাটিকে এক সুতোয় গেঁথেছেন।
এরফান মৃধা শিবলু বলেন, ‘আমি হাশিম ভাইয়ের সাথে বহু বছর ধরে কাজ করছি। তার গানের কথা খুব সাধারণ কিন্তু তা হৃদয়কে ছুঁয়ে যায়। এমন জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্মে তার লেখা গান গাইতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।’
আলেয়া বেগম বলেন, ‘এই গানে আমরা বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শনগুলোর একটি, ময়মনসিংহ গীতিকাকে তুলে এনেছি। শহুরে সুরের সাথে আমাদের লোকসঙ্গীতের শেকড়কে মিশিয়ে আমরা জাদুকরী একটা গান তৈরি করেছি। এই গানের সাথে সবার মন নেচে উঠবে বলে আমার বিশ্বাস।’
সারাবাংলা/এজেডএস