Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাইরেসির দায় নিচ্ছে না হল মালিকরা

আহমেদ জামান শিমুল
২৭ জুলাই ২০২৩ ১৭:৩৩

ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছিল ‘পাইরেসি’। কোনো ছবি মুক্তির আগের দিন বিভিন্ন সিডি ভিসিডির দোকানে অবৈধ ক্যাসেট পাওয়া যেত। এলাকার ডিশ লাইনে ছবিটি চালানো হত। ২০০০ সালের পরে এক দিকে অশ্লীলতা, আরেক দিকে পাইরেসি। এ যখন অবস্থা তখন নায়ক মান্নাসহ চলচ্চিত্রের পরিচালক, প্রযোজক ও শিল্পীরা মিলে শুরু করলেন আন্দোলন। তখন তাদের প্রচেষ্টায় গঠিত হলো র‍্যাবের টাস্কফোর্স। ২০০৭ সালে গঠিত টাস্কফোর্সের প্রচেষ্টায় চলচ্চিত্র আস্তে আস্তে এ বিষফোঁড়া থেকে মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু পুরানো সে চক্র আবার মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে। তারা এবারের ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত সুপারহিট দুই ছবি ‘প্রিয়তমা’ ও ‘সুড়ঙ্গ’ পাইরেসি করে অনলাইনে ছেড়ে দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রথমে শিকার ‘সুড়ঙ্গ’। ছবিটির সম্পাদক সিমিত রায় অন্তর অভিযোগ করলেন, ছবিটি ভারতে মুক্তি পাওয়ার পর পাইরেসি হলেও এটি মূলত বাংলাদেশের সিনেমা হল থেকে হয়েছে। অন্যদিকে ‘প্রিয়তমা’ও একই অভিযোগ করছে। অভিযোগের তীর বাংলাদেশি হল মালিকদের দিকে। কিন্তু দায় নিতে রাজি নয় তাদের সংগঠন চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘প্রশ্নই উঠে না আমাদের দেশের হল থেকে ছবিগুলো পাইরেসি হওয়ার। আমরা তো শুনেছি সুড়ঙ্গ ভারত থেকে হয়েছে।’

তিনি প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ সমিতিতে জমা দিতে বলেন। একই সঙ্গে এও বলেন, ‘পাইরেসি করে একজন হল মালিক কয় টাকা পাবেন? যে দুটা ছবির কথা বলা হচ্ছে তার কিন্তু ঈদে অনেক টাকা আয় করেছে। হল মালিকরা লাভবান হয়েছেন। তারা কেনো পাইরেসি করতে যাবে? আর প্রিয়তমাকে বলবেন, অনেক টাকা কামাইছেন। এবার আল্লাহ্‌ বিল্লাহ করেন।’

দায় তাহলে কার?

পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ বলেন, ‘পাইরেসির ব্যাপারে শুনেছি, খোঁজখবর নিচ্ছি। আমাদের তো শোনা ছাড়া কোনো কিছু করার নেই।’

পুলিশ বা র‍্যাবের টাস্কফোর্সের কাছে সমিতির তরফ থেকে অভিযোগ জানানোর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে, তাদের তেমন কিছু করার নেই বলে জানান কাজী হায়াৎ।

অন্যদিকে প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু অবশ্য বলছেন, তাদের সমিতি যখন ছিলো তখন টাস্কফোর্সে তাদের প্রতিনিধি ছিল। টাস্কফোর্সের সহায়তায় তারা পাইরেসি ও অশ্লীলতা নির্মূল করেছিলেন। এখন অনেকদিন যাবত তাদের কোনো কমিটি না থাকায় এর কার্যক্রম সম্পর্কে তার ধারণা নেই।

টাস্কফোর্স কী করছে?

বিজ্ঞাপন

প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির প্রশাসক হিসেবে সবশেষ দায়িত্ব পালন করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিত খন্দকার নুরুল হক। তিনি জানালেন, তার দুই বছরের কার্যকালে পাইরেসি ও অশ্লীলতা বিরোধী টাস্কফোর্সের কোনো সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। তা তিনি জানেন না টাস্কফোর্স কার্যক্রর কিনা।

তবে সারাবাংলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, টাস্কফোর্সটি এখনও কার্যকর নেই।

আইনি পথে প্রযোজকরা

খোরশেদ আলম খসরু জানান, ছবি দুটির প্রযোজক চাইলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অথবা কপিরাইট আইনে মামলা করতে পারবেন। তবে কোন মামলা হবে এ ব্যাপারে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেইনি দুই প্রযোজক। এদিকে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে ‘সুড়ঙ্গ’ পরিচালক রায়হান রাফিসহ প্রযোজক পুলিশের ডিবি প্রধান হারুন-অর-রশিদের কাছে গিয়েছেন অভিযোগ দিতে। তারা তার সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিবেন।

সারাবাংলা/এজেডএস

টপ নিউজ পাইরেসি প্রিয়তমা সুড়ঙ্গ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর