‘মৌলবাদ যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে’
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:০১
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে শুরু হয়েছে ‘আমার দেশ সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মসূচি। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এ আয়োজনের সূচনা হয়েছে। কর্মসূচির প্রথম দিনেই বক্তারা বলেছেন, দেশে মৌলবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এই অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে। মৌলবাদের মতো অপশক্তি যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হচ্ছে। ধর্মকে রাজনীতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে সংস্কৃতিকে ধ্বংস করছে মৌলবাদী শক্তি। তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তাদের দেশি-বিদেশ মিত্রও দেখছি সক্রিয় হচ্ছে। এ শক্তিকে রুখে দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের ভিত্তিটা হলো সংস্কৃতি, আর কাঠামো হলো রাজনীতি। তবে এদুটোরই মূল উদ্দেশ্য হলো অসম্প্রাদায়িক চেতনা। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ থেকে সবকিছুরই মূল উদ্দেশ্য হলো শোষণমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। সে লক্ষ্যে ১৯৭১ সালে আমরা লড়াই করেছিলাম। আজও লড়াই করছি। কিন্তু আমরা দেখেছি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে আমাদের মাতৃভূমিকে পাকিস্তানের মতো সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাগুলোকে একে একে সমাজ থেকে, রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে বিদায় করেছে।’
তার মতে সংস্কৃতিকর্মীদের দায়িত্ব আছে রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতি। তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব আছে মানুষকে জাগিয়ে তোলার। সে মানুষকে যদি একটি সম্প্রীতির বন্ধনে ঐক্যবদ্ধ করতে পারি, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে যদি আগামী নির্বাচনটাকে পরিচালনা করতে পারি, মানুষের মধ্যে যদি সেই জাগরণটাকে তুলে ধরতে পারি, তাহলে যে আদর্শের জন্য ত্রিশ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে তা রাষ্ট্র ও সমাজে পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
জোটের সাধারণ সম্পাদক আহকামুল্লাহ বলেন, ‘আজকে যে আয়োজনটির সূচনা হচ্ছে, সেটির পরিকল্পনা হয়েছিল আজ থেকে একবছর আগে। আমরা যে দেশে এখন বসবাস করছি, সেটি কি আমাদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ? উত্তর ছিল না, না- এটি আমাদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ নয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও এক হয়েছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। কারণ, বঙ্গবন্ধুকন্যা ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ জয়ী হবে। জাতির সংকটে সংস্কৃতিকর্মীরা কখনও নিশ্চুপ ছিল না। দেশের যেকোনো সংকটেই আমরা দায়িত্ব নিয়ে সচেষ্ট হয়েছি।’
যাত্রাশিল্পী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দে বলেন, ‘সাংস্কৃতিক অপশক্তি রুখে দিতে যাত্রাশিল্পকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নতুন করে জাগ্রত করতে হবে।’
‘আমার দেশ সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ আয়োজনটি পর্যায়ক্রমে ৬৪টি জেলা এবং প্রতিটি উপজেলায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ আয়োজনে থাকছে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক শক্তিবিরোধী কবিতা, গান, নাচ ইত্যাদি।
সারাবাংলা/এজেডএস