ক্যারিয়ারের তিন দশক পূর্ণ করলেন শাবনূর
১৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:৫৩
শাবনূর অর্থ রাতের আলো। বাংলা চলচ্চিত্রের জগতে আলো হয়ে এসেছিলেন তিনি। প্রথম ছবি ফ্লপের পরেও তিনি শীর্ষ নায়িকা হয়েছিলেন। অন্য নায়িকাদের মত নায়ক নির্ভরতা থেকে বের হয়ে নিজের অবস্থান জানান দিয়েছিলেন তিনি। অনকোরা অনেক নায়কের সঙ্গে ছবি করে তিনি উপহার দিয়েছেন সুপারহিট ছবি।
জনপ্রিয় এ নায়িকা গেল এক দশক ধরে অভিনয়ে অনিয়মিত। বর্তমানে আছেন অস্ট্রেলিয়া। এর মধ্যে আজকে তার ক্যারিয়ারের ত্রিশ বছর পূর্ণ করেছেন এ নায়িকা।
প্রয়াত স্বনামধন্য চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রয়াত এহতেশামের ‘চাঁদনী রাতে’ ছবির মাধ্যমে ১৯৯৩ সালের ১৫ অক্টোবর শাবনূরের চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয়েছিল। প্রথম এই সিনেমায় তার সহশিল্পী ছিলেন নায়ক সাব্বির। এরপরে বহু গুণী পরিচালকের ছবিতে কাজ করার সুযোগ হয়েছে শাবনূরের।
জনপ্রিয় এই নায়িকা বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘দুই নয়নের আলো’ (২০০৫) ছবিটি আমাকে এনে দিয়েছিলো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের সম্মান। তারকা জরিপে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে ১০ বার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছি। এছাড়াও ৬ বার বাচসাস পুরষ্কার লাভ করি।
তিনি বলেন, প্রবল দর্শক চাহিদার জন্যে প্রযোজক-পরিচালকরা আমাকে নিয়ে ছবি নির্মাণে অত্যন্ত আগ্রহী হওয়ায় আমার পক্ষে ১৫৮টি ছবির বিশাল মাইল ফলকছোঁয়া সম্ভব হয়েছে।
লম্বা সময়ে শাবনূর বহু নায়কের বিপরীতে বহু দর্শক নন্দিত সিনেমা করেছেন শাবনূর। তার মতে, ব্যবসা সফল ও দর্শক-সমালোচক জরিপে অন্যতম সেরা ছবিগুলো হলো: স্বপ্নের ঠিকানা, স্বপ্নের পৃথিবী, স্বপ্নের নায়ক, তোমাকে চাই, তুমি আমার, আনন্দ অশ্রু, প্রেম পিয়াসী, সুজন সখী, জীবন সংসার, মহামিলন, বিক্ষোভ, চাওয়া থেকে পাওয়া, বিচার হবে, দুই নয়নের আলো, নিরন্তর, মোল্লা বাড়ির বউ, বিয়ের ফুল, নারীর মন, শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ, নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি, সুন্দরী বধূ, ফুল নেব না অশ্রু নেব, প্রেমের তাজমহল, পৃথিবী তোমার আমার, কাজের মেয়ে, বস্তির মেয়ে, মধুর মিলন, বুক ভরা ভালোবাসা, স্বপ্নের বাসর, ও প্রিয়া তুমি কোথায়, স্বপ্নের ভালোবাসা, তোমার জন্য পাগল, চার সতীনের ঘর, আমার স্বপ্ন তুমি, আমার প্রাণের স্বামী, ১ টাকার বউ, তুমি শুধু তুমি, কঠিন প্রেম, ঢাকাইয়া পোলা বরিশালের মাইয়া ও স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ। আসলে আমার অভিনীত প্রতিটা ছবিই আমার কাছে প্রিয়।
তিনি লিখেন, সহশিল্পীদের মধ্যে প্রয়াত সালমান শাহর সাথে আমার জুটি ছিলো সবথেকে বেশি দর্শকপ্রিয়। সালমানের অকাল মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মাত্র চার বছরে আমি ও সালমান সর্বাধিক ১৪টি দর্শক নন্দিত ও ব্যাবসা সফল ছবিতে জুটি বেধে কাজ করেছিলাম।
নিজের বিপরীতে নায়দের কথা উল্লেখ করে শাবনূর বলেন, আমার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে আরও যেসব সহশিল্পীদের অবদান অনেক বেশি রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন প্রয়াত মান্না ভাই, ওমর সানী, বাপ্পারাজ, আমিন খান, অমিত হাসান, রিয়াজ আহমেদ, ফেরদৌস আহমেদ, শাকিল খান ও শাকিব খান।
শাবনূর তার দেওয়া স্ট্যাটাসে আরও উল্লেখ করেন, সবার দোয়ায় চলচ্চিত্রে এখনো যথেষ্ট সম্মান নিয়েই বেঁচে আছি। আমার অভিনয় জীবনের দীর্ঘ ত্রিশ বছরের পথচলায় চলচ্চিত্রের সকল প্রযোজক, পরিচালক, সহশিল্পী, চিত্রনাট্যকার, নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী, ক্যামেরাম্যান, ও ছবির সাথে জড়িত কলাকুশলীসহ সবার কাছে আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ ও ঋণী।
তিনি বলেন, বিশেষ করে আমার ছবির দর্শক ও অগণিত ভক্তদের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও সমর্থনে আমি আজকের শাবনূর। সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত হবার পর থেকে সর্বক্ষণ উপলব্ধি করছি আমাকে নিয়ে তাদের ভালোবাসা আজও বদলায়নি, বরং বেড়েই চলেছে। আমার প্রতি আপনাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা ভবিষ্যতেও আশাকরি অব্যাহত থাকবে।
“আমি সাংবাদিক ভাই-বোনদের প্রতিও বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার প্রতি আপনারা প্রায় সবাই যেভাবে সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব পোষণ করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে আমাকে এতদূর এগিয়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করেছেন তার জন্যে সবাইকে ধন্যবাদ। আজকের এই বিশেষ দিনে রইলো সবার প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা, সবার প্রতি অনেক শুভকামনা,” বলছিলেন শাবনূর।
সারাবাংলা/এজেডএস