আরও ভালো ও আন্তর্জাতিক মানের কাজ করতে চান শিমু
১ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:১০
রিকিতা নন্দিনী শিমু। ক্যারিয়ারের শুরুতে কাজ করেছেন তারেক মাসুদের মত নির্মাতার সঙ্গে। রুবাইয়াত হোসেনের সঙ্গে ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ দিয়ে যাত্রা শুরু। এরপর তার পরিচালনায় করেছেন ‘শিমু’। যেটির ইংরেজি নাম ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’। ছবিটি তাকে এনে দিল ‘শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী’ হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২২।
তারেক মাসুদের ‘রানওয়ে’-তে যখন কাজ করেন তখন তিনি স্কুলের ছাত্রী। এরপর ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’-এর সময় একাদশ শ্রেণীতে পড়তেন শিমু। তখন পুরস্কার কী জিনিস খুব একটা বুঝতেন না। তবে মনের এক কোনে ইচ্ছে তো ছিলো। ‘শিমু’তে অভিনয় করার সময় তিনি যথেষ্ট পরিণত বয়স্ক। পুরস্কারের পাওয়ার ইচ্ছে আগে থেকে ছিল কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তর দিলেন বেশ সুন্দর করে।
‘পুরস্কারের কোনো কথা মাথায় আসে নাই। আমার কাছে মনে হয়েছে প্রিয় একটি সিনেমা, প্রিয় একটি গল্প, কাজটি আমি ভালো করে করবো। আমি জানতাম না কাজটি কোথায় কোথায় যাবে। কোনো অ্যাওয়ার্ড পাবে কিনা। যান পেয়েছে তা আসলে অপ্রত্যাশিত। ছোটবেলা থেকে যখন বড় বড় গুণী মানুষগুলোকে টেলিভিশনে অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে দেখতাম তখন অন্যরকম অনুভূতি কাজ করত। তখন মনে হয়েছিল, যদি আমি কখনও পাই তাহলে এটা আমাকে সামনে এগোতে অনেক সাহায্য করবে’,─বলেন শিমু।
‘শিমু’ ছবিটি ‘শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী’ ছাড়াও ‘শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক’, ‘শ্রেষ্ঠ সম্পাদক’ ও ‘শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজ-সজ্জা’ ক্যাটাগরিতে পাচ্ছে। চারটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পাওয়ার পরও পুরো টিম আপাতত কোনো সেলিব্রেশনে যাচ্ছে না। মূলত কিছু দিন আগে ছবিটির পরিচালক সৈয়দ রুবাইয়াত হোসেনের বাবা মারা গেছেন। যার কারণে সবাই সেলিব্রেশন থেকে বিরত রয়েছেন।
শিমু বলেন, ‘আংকেল সবসময় কাজটি নিয়ে খোঁজখবর নিতেন। আমার সঙ্গে দেখা হলে বলতেন, তোমার কাজটা খুব সুন্দর হয়েছে। তোমার অভিনয়টা খুব সুন্দর হয়েছে। কালকে (মঙ্গলবার) যখন আপুর (রুবাইয়াত হোসেন) সঙ্গে কথা হচ্ছিল তখন তিনি বলচ্ছিলেন, আংকেল থাকলে অনেক খুশি হতেন।
ছবিটি নির্মিত হয়েছে পোশাকশ্রমিক জীবন নিয়ে। এর মূল চরিত্রে পোশাক নেত্রী ডালিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। শিমুর ভাষ্যে, ‘আমার বিশ্বাস ছিল যে কাজটা ভালো জায়গায় পৌঁছাবে। যেখানে প্রত্যেকটা মানুষ দেখলে এ মানুষগুলোকে মনে রাখবে এবং এ গল্পটাকে মনে রাখবে। কারণ এ গার্মেন্টসকর্মী যারা আছেন তাদের কিন্তু আমরা প্রতিনিয়তই দেখি। কিন্তু তাদের জীবন কেমন, তা কখন ভেবে দেখেনি।’
পরিচালক রুবাইয়াত হোসেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চান শিমু। তিনি বলেন, আপুর সঙ্গে এটি আমার দ্বিতীয় কাজ। তিনি অনেক যত্ন নিয়ে কাজ করেন। তার কাজ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। কাজটি ভালো হওয়া এবং পুরস্কার হওয়ার পিছনে সবচেয়ে বেশি অবদান তার। তিনি আমার একজন মেন্টর।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে সবশেষ জিজ্ঞাসা ছিল, পুরস্কারটি কাউকে উৎসর্গ করতে চান কিনা? জবাবে বললেন, পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের দিন জানাবো। ততক্ষণ পর্যন্ত তা অজানাই থাকুক।
তিনি ভবিষ্যতে আরও ভালো ও আন্তর্জাতিক কাজ করতে চান বলে জানান। কিছু দিন আগে নতুন একটি ছবির কাজ শেষ করেছেন তিনি। পরিচালকের নিষেধ থাকায় ছবির নামটি প্রকাশ করতে পারেননি। তবে ছবিটি আগামী বছরের শুরুতে মুক্তি পাবে।
সারাবাংলা/এজেডএস