রহস্যময় প্রকৃতির নির্মম রূপ নিয়ে ‘শুনতে কি পাও!’
৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৩০
ভদ্রা নদীর পারে, সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে ছোট্ট একটি গ্রাম… নাম তার ‘সুতারখালি’। জলে জঙ্গলে লড়াই করে চার পুরুষের আবাদে প্রায় ১০০ পরিবারের বাস এই সুতারখালি গ্রামে। এখানেই ঘর বেঁধেছিলো রাখী আর সৌমেন, জন্ম হয়েছিলো তাদের ভালোবাসার সন্তান… রাহুলের। ২০০৯ সালের ২৫শে মে, রাহুলের বয়স যখন মাত্র চার… ‘আইলা’ নামের এক প্রলয়ঙ্করী জলোচ্ছাস ভাসিয়ে নিয়ে যায় বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল। আর সেই দিন থেকে শুরু হয় রাখী, সৌমেন এবং রাহুলের এক অন্য জীবন…
দিন যায়, ঋতু বদলায়… সেইসাথে সর্ম্পকও বদলায়। তারপরও বৃষ্টি শেষে, কোদাল হাতে বেরিয়ে আসে ওরা… জীবনেরই ডাকে, জীবনকে ভালোবেসে।
রাখী, সৌমেন ও রাহুলের জীবনের এই ঘটনার বিস্তারিত মিলবে কামার আহমাদ সাইমন পরিচালিত চরকি রিলিজ ‘শুনতে কি পাও!’-তে। ৯০ মিনিটের এই কোয়াজি-ড্রামাটি ৩ নভেম্বর থেকে চরকিতে চলছে।
‘শুনতে কি পাও!’-এর ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়েছিল ২০১২ সালে জার্মানীর লাইপশীসে ‘উদ্বোধনী রাতের ছবি’ হিসেবে। ২০১৪ সালে দেশের সিনেমা হলে মুক্তি দেয়া হয়। এতো দিনে অনেক ফেস্টিভ্যাল ঘুরেছে। সিনেমা দ্যু রিল প্যারিসে সেরা ছবির পুরষ্কার গ্রাপি এবং মুম্বাই মিফে গোল্ডেন কোঞ্চ এর পাশাপাশি পেয়েছে আরও অনেক পুরষ্কার। এবার সেটা ওটিটি অর্থাৎ চরকিতে মুক্তি পাচ্ছে।
চরকিতে মুক্তি নিয়ে পরিচালক কামার আহমাদ সাইমন তার এক্সপেরিয়েন্স ও এক্সপেকটেশন জানান। তিনি বলেন, ‘ছবির ফেস্টিভ্যাল লাইফটা অনেকটা প্রেম-পর্বের মতো। আর ওটিটিতে ছবি রিলিজ দেয়াটা অনেকটা পাবলিক লাইফ, বলতে পারেন ছবির সংসার জীবন। ওইখানেই ছবির আসল পরিচয় পাওয়া যাবে। এখন দেখা অপেক্ষা দর্শক কীভাবে নেয়।’
এটা নির্মাণের সময় পরিচালকের কি মোটিভেশন কাজ করছিল তা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সিনেমা বানানোর আমার মূল ওরিয়েন্টেশন সাহিত্য থেকে। যেখানে আছে সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ, তারাশঙ্কর বা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়—যাদের কালজয়ী সব লেখা পড়লে মনে হতো এই যে জীবনের অবিশ্বাস্য উদাযপন, এইটা সিনেমার পর্দায় কীভাবে আনা যায়? আর মোটিভেশন হিসেবে মাথায় ছিল মাটি আর মানুষে মাখামাখি সুলতানের ক্যানভাস।’
সর্বোপরি চরকির দর্শককে তিনি জানাতে চান, ‘কনটেন্টের দর্শককে মাথায় নিয়ে একটা কথা ভাবছি—প্রায় এক দশক আগে যখন ছবিটা নিয়ে লড়াই করছিলাম, তখন মনে হয়েছিল ছবিটা বোধহয় সময়ের একটু আগেই বানিয়ে ফেলেছি। কারণ ছবিটা আমাদের জানা-বোঝা ফিকশন-নন-ফিকশন জনরার সংজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। আমার মনে হয়, ওটিটিতে মুক্তির জন্য সময়টা পারফেক্ট। এখন সব দর্শকের উপর।’
এই কনটেন্টে অভিনয়ে দেখা যাবে রাখী বৈদ্য, সৌমেন রায়, রাহুল রায়, দেবব্রত মণ্ডল, নিশীথ রঞ্জন মিস্ত্রী, নিরাপদ মণ্ডল, বিভূতিভূষণ মণ্ডল, মাহমুদ গাজী, মান্নান গাইন, দীপক মণ্ডল, গোবিন্দ মণ্ডল, চিরঞ্জিত মণ্ডল, শ্যামলী রপ্তান, নূপুর মণ্ডল, সুভেন ঘরামী, বিনয় বৈদ্য প্রমুখকে।
সারা আফরীনের প্রযোজনায় ‘শুনতে কি পাও!’-এর সিনেমাটোগ্রাফির কাজটা করেছিলেন পরিচালক নিজেই। সাউন্ড ডিজাইনে ছিলেন সুকান্ত মজুমদার। সম্পাদনা ও কালার গ্রেডিং করেছেন সৈকত শেখরেশ্বর রায়।
সারাবাংলা/এজেডএস