Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনাক্রান্ত ববিতা

এন্টারটেনমেন্ট ডেস্ক
২৭ জুলাই ২০২৪ ১৭:৪৮

ববিতা

কিংবদন্তি চিত্রনায়িকা ববিতা করোনাক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। চারদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। খবরটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার ছোটবোন চিত্রনায়িকা চম্পা। এবারই প্রথম নয়, এর আগেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ববিতা।

চম্পা জানান, ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চারদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ববিতার করোনা নেগেটিভ হয়। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি বাসায় ফিরে যান। তবে শারীরিক দুর্বলতা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি ববিতা।

বিজ্ঞাপন

চম্পা বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে শরীরে ব্যথা অনুভব করছিলেন আপা। জ্বর ছিল না, তবে অস্বস্তি লাগছিল। এরপর পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে জানতে পারেন করোনা পজিটিভ হওয়ার খবরটি। কালক্ষেপণ না করে ১৮ জুলাই দ্রুত ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করি।’

বাংলা চলচ্চিত্রের নন্দিত অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার পপি। যদিও সিনেমায় তিনি ববিতা নামেই পরিচিত। সত্তর ও আশির দশকে অদম্য নায়িকা হয়ে বাংলা চলচ্চিত্রের সাদাকালো পর্দায় আলো ছড়ানো এই অভিনেত্রী এখনও দর্শক-হৃদয়ে অমলিন।

১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই তৎকালীন যশোরে (বর্তমান বাগেরহাট) জন্মগ্রহণ করেন ববিতা। পৈতৃক বাড়ি যশোরে হলেও বাবার চাকরির সুবাদে বাগেরহাটে থাকতেন তারা। বলা যায়, পারিবারিকভাবেই তারা অভিনয়শিল্পী গোষ্ঠী। কারণ তার বড় বোন সুচন্দা এবং ছোট বোন চম্পা বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। এছাড়া জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ওমর সানী তার ভাগ্নে এবং সেই সূত্রে মৌসুমী তার ভাগ্নের বউ। আবার চিত্রনায়ক রিয়াজ তার চাচাত ভাই এবং নির্মাতা জহির রায়হান তার ভগ্নিপতি।

চলচ্চিত্রে আসার পেছনে ববিতার জন্য বড় অনুপ্রেরণা তার বড় বোন সুচন্দা। কিংবদন্তি নির্মাতা জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে ১৯৬৮ সালে অভিষেক হয় ববিতার। এই চলচ্চিত্রে তিনি রাজ্জাক-সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। ববিতার নাম ফরিদা আক্তার পপি থেকে ‘ববিতা’ হয় জহির রায়হানের ‘জ্বলতে সুরুজ কি নিচে’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে।

বিজ্ঞাপন
নায়ক রাজের নামে ফিল্ম ইন্সটিটিউট করার দাবি ববিতার

ববিতা

নায়িকা হিসেবে ববিতার প্রথম সিনেমা ‘শেষ পর্যন্ত’। এটি মুক্তি পায় ১৯৬৯ সালের ১৪ আগস্ট, যেদিন ববিতার মা মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এরপর থেকে অভিনয়ে নায়িকা হিসেবে শাসন করেন গোটা ৭০ দশক। অর্জন করেন তুমুল জনপ্রিয়তা। বাণিজ্যিক সিনেমার অন্যতম সফল নায়িকা হিসেবে গণ্য করা হয় ববিতাকে। কেননা গ্রামীণ মেয়ের চরিত্রে কিংবা শহরের আধুনিক তরুণী, সব চরিত্রেই তিনি সমান দক্ষতা দেখিয়েছেন।

জহির রায়হান পরিচালিত ‘টাকা আনা পাই’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ববিতার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরলেও তার জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র বলা হয় ‘অশনি সংকেত’কে। সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় এই সিনেমায় অভিনয় করে ববিতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও দারুণ প্রশংসা অর্জন করেন।

ক্যারিয়ারে প্রায় ২৫০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ববিতা। এর মধ্যে ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’, ‘আলোর মিছিল’, ‘ডুমুরের ফুল’, ‘বসুন্ধরা’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘নয়নমনি’, ‘লাঠিয়াল’, ‘মা’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দহন’, ‘দিপু নাম্বার টু’, ‘অশনি সংকেত’, ‘রামের সুমতি’, ‘নাগ-নাগিনী’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘চ্যালেঞ্জ’, ‘মিস লংকা’, জীবন সংসার’, ‘লাইলি মজনু’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘পোকা মাকড়ের ঘর বসতি’ সিনেমাগুলো উল্লেখযোগ্য।

অভিনয়ের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ক্যারিয়ারে অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন ববিতা। একটানা তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন ববিতা। তিনিই বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে সবচেয়ে বেশিবার আন্তর্জাতিক অঙ্গনের চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিয়েছেন।

সারাবাংলা/এজেডএস

করোনাক্রান্ত ববিতা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর