‘আমি আর্জেন্টিনার সমর্থক, কিন্তু মনে হচ্ছে কাপ নেবে ব্রাজিল’
৭ জুন ২০১৮ ১৩:৩৬
চঞ্চল চৌধুরী, একজন নন্দিত অভিনেতা। অভিনয়কে তিনি কেবলমাত্র চার অক্ষরের একটি শব্দের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেন নি। তার পুরো শরীরজুড়ে দুর্দান্ত এক অভিনয় সত্তা বিচরণ করে। কখনো তিনি হাসান, কখনো কাঁদিয়ে ছাড়েন দর্শকদের। আর এভাবে তিনি জয় করে নিয়েছেন দর্শকের মন। নাটকের পাশাপাশি তিনি অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রে। সেখানেও তিনি সফল। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
প্রতিবারের মতো এবারের ঈদেও ছোটপর্দায় একাধিক নাটক নিয়ে হাজির হচ্ছেন তিনি। সেইসব নাটকের মধ্যে লেগেছে বিশ্বকাপ ফুটবলের ঝটকাও। ঈদের নাটক এবং ফুটবল বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে নিজের উদ্দামতার গল্প তিনি করেছেন সারাবাংলার এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ এর সঙ্গে।
বিশ্বকাপ দরজায় কড়া নাড়ছে। ফুটবলে আপনি কোন দলের সমর্থক?
ছোটবেলা থেকেই আমি আর্জেটিনার সাপোর্টার। সেই ১৯৮৬ এর বিশ্বকাপ থেকে আমি আর্জেটিনার ভক্ত। ম্যারাডোনার খেলা দেখে তখন মুগ্ধ হতাম। এখন মেসির খেলা দেখে মুগ্ধ হই। ব্রাজিলও আমার অনেক প্রিয় দল। নেইমারেরও ভক্ত আমি। ব্রাজিল শৈল্পিক ফুটবল খেলতে পারে। যেকোন ভালো দলের খেলা আমি উপভোগ করি।
আপনার মতে এবার চ্যাম্পিয়ন হবে কোন দল?
আসলে আমি ভবিষ্যৎবাণী করতে পারিনা বা করতে চাই না। যেই দল ভালো খেলবে সেই দল কাপ নেবে। আনুমানিকভাবে বলতে গেলে ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দাবিদার। প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে আরম্ভ করে সব মিলিয়ে ব্রাজিলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
ফুটবল কেন্দ্রিক কোন নাটকে অভিনয় করেছেন কি?
সাত পর্বের ‘ফেয়ার প্লে’ নামের একটি ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেছি। পলাশ মাহবুবের রচনায় নাটকটি পরিচালনা করেছেন আবু হায়াত মাহমুদ। এছাড়া ফুটবল নিয়ে আর কোনো নাটকে অভিনয় করিনি।
এবার আসি অন্য প্রসঙ্গে। ঈদের ব্যস্ততা নিয়ে জানতে চাই।
আমার ঈদের ব্যস্ততা প্রায় শেষ পর্যায়ে। গত দুই-আড়াই মাস ধরে ঈদের কাজ করছি। এরমধ্যে চারটি সাত পর্বের ও একটি দশ পর্বের নাটকে অভিনয় করেছি। এছাড়াও দশ থেকে বারোটার মতো একক নাটক ঈদে প্রচার হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রতি ঈদে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রচারিত নাটকের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ বিষয়ে কি বলবেন?
সব নাটকের মান কখনোই ভালো হবে না। সব যোগ্য লোক এখানে কাজ করে না। কিছু অযোগ্য, ধান্দাবাজ লোকেরাও কাজ করে। এখন তো প্রচুর নাটক চ্যানেলে প্রচার হয়। এইসব নাটকের মধ্যে ভালো হয় খুব কম নাটকই। ভালোর পাশাপাশি খারাপ সবসময় ছিল, আগামীতেও থাকবে। তবে মাঝে মাঝে খারাপের সংখ্যা বেড়ে যায়। আবার সব কাজ খারাপ হয় সেটাও বলা যাবে না।
আমাদের ডিরেক্টরস গিল্ডের তালিকাভুক্ত সদস্য আছে সাড়ে চারশো। এরমধ্যে হয়তো পঞ্চাশ জন ভালো ডিরেক্টর আছেন। বাদ বাকি ডিরেক্টররাও তো কাজ করছেন। কিন্তু তারা মান সম্পন্ন কাজ করতে পারছে না। তবু তাদের নাটক নানাভাবে প্রচার হয়।
আপনার কথার সূত্র ধরেই প্রশ্ন করতে চাই। চ্যানেলে মানহীন নাটক প্রচারিত হওয়ার কারনে দেশের নাটক হুমকির মুখে পড়ছে বলে কি মনে করেন?
মিডিয়াতে যতো অযোগ্য লোকের সংখ্যা বাড়বে ততোই মিডিয়া হুমকির সম্মুখিন হবে। দেশের নাটক হুমকির মুখে পড়ার পেছনে প্রযোজক, পরিচালক, অভিনেতা, চ্যানেল- সকলের দায় আছে। তবে সবথেকে বড় দায় হলো টেলিভিশন চ্যানেলের। যদি চ্যানেল কতৃপক্ষ ভালো-মন্দ বাছাই করে নাটক প্রচার করে তাহলে সেটা ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভালো। ব্যবসা বণিজ্যের জন্য চ্যানেল যা করছে তাতে আমি ইতিবাচক কিছু দেখছি না। এমন অনেক ভালো কাজ আছে যেগুলো প্রচারই হচ্ছে না। বাজেট পাচ্ছে না।
আপনি যাদের সাথে কাজ করেছেন বা করছেন তারা কতোটা মানসম্পন্ন?
আমি সবসময় কোয়ালিটি ডিরেক্টরদের সাথে কাজ করি। এই ঈদে যাদের নাটকে কাজ করেছি তারা সকলেই মানসম্পন্ন নির্মাতা।
আপনাকে অনেক কমেডি নাটকে অভিনয় করতে দেখা গেছে। কমেডি নাটকের ক্ষেত্রে অভিযোগ আছে যে, আজকাল কমেডির নামে ভাঁড়ামি হচ্ছে।
আমি নাটকে অভিনয় করি। আমার চরিত্রকে দর্শকের কাছে পৌছানোর জন্য যেমন অভিনয় করা প্রযোজন তেমন অভিনয় করি। এখানে কিছু ভুল ব্যাখ্যা আছে। আলাদা করে কমেডি নাটক বলে কিছু নেই। সবই নাটক। বরং আমি সেইসব নাটকে অভিনয় করি, যে নাটক দেখে দর্শকরা বিনোদিত হন। একটি নাটকের মধ্যে হাসি, কান্না, দুঃখ, আবেগের অনেক কথা থাকে। এখন একটি রীতি চালু হয়েছে, সেটা হলো দর্শকদের হাসাতে হবে। এই রীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যতো দ্রুত বেরিয়ে আসা যাবে ততো দ্রুতই মঙ্গল। কোনটা কমেডি আর কোনটা ভাঁড়ামি সেটা বিবেচনা করবে দর্শক। তারা আবার ভুলও করে। কমেডি আর ভাঁড়ামোকে মিলিয়ে ফেলে। তবে সব দর্শক না। কিছু কিছু দর্শক।
সারাবাংলা/আরএসও/পিএ