Sunday 13 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ওবায়েদ-উল হকের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

এন্টারটেইনমেন্ট করেসপনডেন্ট
১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:২৭

ওবায়েদ-উল হক, দেশবরেণ্য সাহিত্যিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্র পরিচালক-প্রযোজক, কাহিনী-চিত্রনাট্যকার, গীতিকার ও নাট্যকার। মেধাবী, সৃজনশীল, বহুমাত্রিক প্রতিভাবান একজন শ্রদ্ধেয় গুণি মানুষ ছিলেন।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চায় অনন্য এক তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন। এই কৃতিমান মানুষটির মৃত্যুবার্ষিকী আজ । তিনি আজ থেকে ১৭ বছর আগে, ২০০৭ সালের ১৩ অক্টোবর, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।

বিজ্ঞাপন

ওবায়েদ-উল হক ১৯১১ সালের ৩১ অক্টোবর, ফেনী জেলায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতা খান বাহাদুর মো. বজলুল হক, ছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী। মায়ের নাম আঞ্জুমান নেসা। তিনি ১৯৩৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন ও মনোবিজ্ঞানে এমএ পাস করেন। ১৯৩৬ সালে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৩৮ সালে সরকারী চাকুরীতে যোগ দেন ওবায়েদ-উল হক। ১৯৪৫ সালে সরকারী চাকুরী ছেড়ে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন ‘হিমাদ্রী চৌধুরী’ ছদ্ম নামে। কলকাতায় তিনি প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন ১৯৪৬ সালে, চলচ্চিত্রের নাম ‘দুঃখে যাঁদের জীবন গড়া’ । ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর তিনি ঢাকায় চলে আসেন।

১৯৫৭ সালে ঢাকায় এফডিসি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে ওবায়েদ-উল হকের কাহিনি নিয়ে, সাংবাদিক ফজলুল হক ‘আযান’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন (এই ছবিটি পরবর্তীতে ‘উত্তরণ’ নামে ১৯৭৫ সালে মুক্তি পায়)।

১৯৬৪ সালে ওবায়েদ-উল হক নির্মাণ করেন ‘দুই দিগন্ত’ চলচ্চিত্রটি। এই ছবির কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্য তার নিজের। এছাড়াও ‘অন্তরঙ্গ’ ছবির কাহিনিকার ও গীতিকার তিনি।

বিজ্ঞাপন

ঢাকার ডেইলি পাকিস্তান অবজারভার-এ চলচ্চিত্র বিষয়ে ইংরেজি এবং বাংলা ভাষায় অসংখ্য প্রবন্ধ এবং নিবন্ধ রচনা করেন ওবায়েদ-উল হক, যা এদেশের চিত্রশিল্পের উৎকর্ষ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।

১৯৫১ সালে তিনি অবজারভার পত্রিকার সহকারী সম্পাদক নিযুক্ত হন। এই পত্রিকার তিনি উপসম্পাদক (১৯৫৮-১৯৬২), যুগ্মসম্পাদক (১৯৬২-১৯৭১) এবং স্বাধীনতাত্তোর পর্বে এ পত্রিকার সম্পাদক হন। ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে এ পত্রিকার নামকরণ হয় প্রথমে- ‘দি অবজারভার’, পরে ‘দি বাংলাদেশ অবজারভার’। ১৯৮৬ সালে ‘ডেইলি নিউজ’-এর সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। একসময় তিনি দৈনিক বাংলা ও বাংলাদেশ টাইমস-এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তার রচিত নাটক—এই পার্কে, দিগ্বিজয়ী চোরাবাজার, ব্যতিক্রম, রুগ্না পৃথিবী, যুগসন্ধি ও সমাচার এই । কাব্যগ্রন্থ—দ্বিধার ফসল, সায়াহ্নের সংলাপ, গরীব হতে চাই ও পথের পদাবলী । উপন্যাস—সংগ্রাম, দ্বৈত সঙ্গীত ও ঢল, প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। তার ইংরেজি গ্রন্থ ‘Voice of Thunder’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে রচিত। পরে এটি ‘A Leader with a Difference’ নামে লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয়।

চলচ্চিত্র, সাংবাদিকতা ও সাহিত্য-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ওবায়েদ-উল হক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, ইউনিসেফ পুরস্কার, কাজী মাহাবুবউল্লাহ ও জেবুন্নেসা স্ট্রাস্ট্র স্বর্নপদক, জহুর হোসেন চৌধুরী স্বর্ণপদক, মানিক মিয়া স্বর্ণপদক, আব্দুস সালাম স্বর্নপদক, অতীশ দীপঙ্কর পুরস্কার, মিলেনিয়াম অ্যাওয়ার্ড, হীরালাল সেন সম্মাননা, ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার’সহ পেয়েছেন বহু পুরস্কার ও সম্মাননা।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)-এর প্রথম সভাপতি ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট গঠন কমিটির সভাপতি ছিলেন। এ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (১৯৭৬) স্থাপিত হলে তিনি এ প্রতিষ্ঠানের প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এডিটরস কাউন্সিলেরও চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি এবং এর প্রতিনিধি হিসেবে তিন দফায় প্রেস কাউন্সিল অব বাংলাদেশের সদস্য ছিলেন।

এ ছাড়াও ওবায়েদ-উল হক বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ (বিএসপি)-এর সভাপতি, প্রেস কমিশনের সদস্য এবং জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালা কমিটির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৯৫ সালে, চলচ্চিত্রের শতবর্ষ উপলক্ষে গঠিত কমিটির তিনি ছিলেন চেয়ারম্যান। তিনি পি আই বি’র চেয়ারম্যান এবং নজরুল ইন্সটিটিউটেরও চেয়ারম্যান ছিলেন।

ওবায়েদ-উল হক একাধারে একজন লেখক, কবি, ঔপন্যাসিক, চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, কাহিনী-চিত্রনাট্যকার, গীতিকার, নাট্যকার এবং দীর্ঘকাল ইংরেজী দৈনিক বাংলাদেশ অবজার্ভার-এর সম্পাদক-এর দায়িত্ব পালন করেছেন।

সারাবাংলা/এজেডএস

ওবায়েদ-উল হক

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

খুলনায় নৌকাবাইচে সেরা রত্নতরী
১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:১৬

বাচসাস নির্বাচন ১৮ অক্টোবর
১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:০৮

সম্পর্কিত খবর