‘কথা ক’–এর সেজান গাইলেন মেহজাবীনের সিনেমায়
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৪১
‘কথা ক’ গান দিয়ে দারুণ আলোচনায় চলে আসেন র্যাপ সংগীতশিল্পী সেজান। জুলাই–আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করে গানটি। সেই সেজান এবার নাম লেখালেন সিনেমার গানে। ‘এই শহর স্বার্থপর’ গানটি বানানো হয়েছে ‘প্রিয় মালতী’ সিনেমায়। সেজান একা নন, আহমেদ হাসান সানি আছেন গানটিতে। এই শহরের অর্থাৎ মহানগর ঢাকার নিম্ন–মধ্যবিত্তদের বঞ্চনা আর বৈষম্যের শব্দে সাজানো হয়েছে গানের কথা। যেখানে বলা হয়েছে, ‘মানুষ ভাসিয়া যায়, দুঃখের দিন/ এ শহর বর্বর, আর ক্ষমাহীন’।
‘প্রিয় মালতী’ প্রেক্ষাগৃহে আসছে ২০ ডিসেম্বর। সিনেমাটির ‘এই শহর স্বার্থপর’ গানটির কথা লিখেছেন এ কণ্ঠ দিয়েছেন সেজান ও আহমেদ হাসান সানি। গানটির সুর ও সঙ্গীত করেছেন সেজান। ১৭ ডিসেম্বর গানটি প্রকাশ পায় চকরির ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে। এতে সানিকে তার স্বভাবসুলভ ঢংয়ে শুনতে পাওয়া গেছে আর সেজানের কণ্ঠে ছিল র্যাপ অংশ।
এই শহরে যে সাম্য নেই, সেটাই এ গান লেখার মূল ভিত্তি, গানটির প্রতি লাইনেই তাই প্রতিবাদ, রাগ–ক্ষোভ রয়েছে বলে জানান সানি। গীতিকার, কণ্ঠশিল্পী সানি বলেন, ’এই শহরটা খুবই স্বার্থপর। এখানে ধনীরাই সুবিধাভোগী। গানের কথা, সুর এ গায়কীতে সেই ঢংটা রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।’
‘প্রিয় মালতী’ সিনেমায় মেহজাবীন অভিনয় করেছেন নিম্ন–মধ্যবিত্ত লড়াকু নারীর চরিত্রে। হঠাৎই একটি মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনায় এলোমলো হয় তার জীবন। তাকে লড়াই করতে হয় সমাজ, প্রচলিত পদ্ধতি, নিয়মের বিরুদ্ধে। বিশৃঙ্খল এই শহরে সমস্যাগুলো যেন তার জন্যই অপেক্ষা করছিল। এই শহর–এই শহরের মানুষ বিত্তশালীদের এমন সমস্যার সম্মুখীন করায় না।
সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘প্রিয় মালতী’ সিনেমার গল্প ও চিত্রনাট্য করেছেন শঙ্খ দাশগুপ্ত। বড় পর্দায় নিজের প্রথম সিনেমাতেই প্রশ্ন তুলতে চেয়েছেন তিনি। নির্মাতা বলতে চেয়েছেন, মানুষের অস্তিস্ব শুধু ডেথ সার্টিফিকেট ও ময়না-তদন্ত রিপোর্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না।
২০২৩ সালের ১৯ এপ্রিল আসে সিনেমাটি নির্মাণের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। সব কাজ শেষ করে সিনেমাটির মুক্তির ঘোষণা আসে চলতি বছরের ৫ ডিসেম্বর সকাল ১১টায়। এর পর ১৩ ডিসেম্বর হয় মুক্তির তারিখ ঘোষণা এবং ১৪ ডিসেম্বর আসে সিনেমাটির ট্রেইলার। সেখানে দেখা যায় সিনেমায় মেহজাবীনের নাম মালতী রানী দাশ। পলাশ কুমার দাশের সঙ্গে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেছিলেন তিনি। দশটা নিম্ন–মধ্যবিত্ত দম্পতির মতো সংসার জীবনের ছোট ছোট স্বপ্ন বুনছিলেন তারা। বিয়ে বার্ষিকী উপলক্ষে নৌকাতে ভাসতে ভাসতে কেক কাটা, সন্ধ্যায় একটু ঘোরাঘুরি, মালতীকে অবাক করে দিয়ে পলাশের উপহার দেয়া, স্বামী–স্ত্রীর খুনসুটি– সবকিছুই চলছিল সুন্দর ছন্দে। হঠাৎই একটি মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনায় সেই ছন্দ কাটে।
সিনেমাটি পেয়েছে ইউ গ্রেডের সেন্সর সার্টিফিকেট, অর্থাৎ সব বয়সী দর্শকরা এটি দেখতে পারবেন। এরই মধ্যে সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়েছে কায়রো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব এবং ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অফ ইন্ডিয়াতে। মর্যাদাপূর্ণ দুই উৎসবেই অফিসিয়ালি সিলেক্ট হওয়া ‘প্রিয় মালতী’ পেয়েছে ব্যাপক প্রশংসা। একদম দেশিয় প্রেক্ষাপটে বানানো সিনেমাটি সহজেই বুঝতে পেরেছেন বিদেশি দর্শক।
সারাবাংলা/এজেডএস