Sunday 05 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

না ফেরার দেশে অঞ্জনা

এন্টারটেইনমেন্ট করেসপনডেন্ট
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৫৪ | আপডেট: ৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৫০

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী চিত্রনায়িকা অঞ্জনা মারা গেছেন। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তার সন্তান নিশাত মনি সারাবাংলাকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত এক সপ্তাহ রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের সিসিইউ বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী অঞ্জনা রহমান। নতুন বছরের প্রথম দিন অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত বুধবার (১ জানুয়ারি) রাতে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। তবে সেখানেও তার শেষ রক্ষা হলো না। সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন
চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমান

চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমান

জানা গেছে, দেড় মাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন অঞ্জনা। গেল ২৪ নভেম্বর তাকে প্রথমে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি সেখানকার সিসিইউতে ছিলেন। সেখান থেকে ১ জানুয়ারি রাতে অভিনেত্রী অঞ্জনাকে বিএসএমএমইউয়ের আইসিইউয়ে নেওয়া হয়। ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয় তাকে।

আরও জানা গেছে, প্রায় ১৫ দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন অঞ্জনা। জ্বর এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, ওষুধেও কাজ হচ্ছিল না। পরীক্ষার পর জানা যায় তার রক্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

‘চাষার ছেলে’ ছবির একটি দৃশ্যে অঞ্জনা

১৯৬৫ সালের ২৭ জুন ঢাকার ঢাকা ব্যাংক কোয়ার্টারে এক সংস্কৃতিমনা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তারা দুই বোন এক ভাই। তার দুই সন্তান কন্যা ফারজানা নিশি ও ছেলে মনি নিশাত।

বিজ্ঞাপন

ছোটবেলা থেকে নৃত্যের প্রতি তার আগ্রহের কারণে তার বাবা মা তাকে নৃত্য শিখতে ভারতে পাঠান। সেখানে তিনি ওস্তাদ বাবুরাজ হীরালালের অধীনে নাচের তালিম নেন এবং কত্থক নৃত্য শিখেন। নৃত্য তিনবার জাতীয় পুরস্কারও লাভ করেন তিনি।

চলচ্চিত্র জগতে আসার আগে তিনি একজন নামী নৃত্যশিল্পী ছিলেন। এশিয়া মহাদেশীয় নৃত্য প্রতিযোগিতা একবার প্রথম স্থান এবং তিনবার জাতীয় নৃত্য প্রতিযোগিতা প্রথম স্থান অর্জন করেন।

অঞ্জনার অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত সেতু চলচ্চিত্র দিয়ে। তবে তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র শামসুদ্দিন টগর পরিচালিত দস্যু বনহুর (১৯৭৬)। রহস্য ভিত্তিক এই ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন সোহেল রানা।

বা দিকের ছবিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার হাতে মায়ের সঙ্গে, ডানের ছবিতে রওশন এরশাদের হাত থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিচ্ছেন অঞ্জনা

১৯৭৮ সালে তিনি আজিজুর রহমান পরিচালিত অশিক্ষিত চলচ্চিত্রে নায়ক রাজ রাজ্জাকের বিপরীতে লাইলি চরিত্রে অভিনয় করেন। রাজ্জাকের বিপরীতে তিনি ৩০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। রাজ্জাকের বিপরীতে তার অভিনীত অন্যান্য চলচ্চিত্রগুলো হল, অশিক্ষিত (১৯৭৮) জিঞ্জীর (১৯৭৯), আশার প্রদীপ (১৯৭৯), আশার আলো (১৯৭৯) আনারকলি (১৯৮০) সুখেথাকো (১৯৮১) সানাই (১৯৮২) বৌরানী (১৯৮২), বৌ কথা কও (১৯৮৪) অভিযান (১৯৮৫) বিধাতা (১৯৮৮) রাম রহিম জন (১৯৮৯)।

এছাড়া আলমগীর, জসিম, বুলবুল আহমেদ, জাফর ইকবাল, ওয়াসিম, উজ্জ্বল, ফারুক, ইলিয়াস জাভেদ , মিঠুন চক্রবর্তী, (ভারত) ইলিয়াস কাঞ্চন, সোহেল চৌধুরী , রুবেল, সুব্রত বড়ুয়া, মান্না, ফয়সাল, (পাকিস্তান), নাদীম, (পাকিস্তান) জাভেদ শেখ (পাকিস্তান), ইসমাইল শাহ,(পাকিস্তান), শীবশ্রেষ্ঠ, (নেপাল), ভুবন কেসি (নেপাল) সবার সাথে অভিনয় করেছেন। (১৯৮৯) সালে ভারতের সুপারস্টার মিঠুন চক্রবর্তী সাথে (অর্জুন) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি ব্যাপক প্রশংসিত হন।

তিনি বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, নেপাল, থাইল্যান্ড ও শ্রীলংকাসহ বহু দেশে ব্যবসা সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আন্তর্জাতিক ভাবে ব্যাপক প্রশংসিত হন।

অঞ্জনা অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের সংখ্যা প্রায় ৩ শতাধিক। ১৯৮১ সালে ‘গাংচিল’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য এবং এবং ১৯৮৬ সালে ‘পরিণীতা’ চলচ্চিত্রে ললিতা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি দুইবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া তিনি মোহনা (১৯৮৩), পরিণীতা (১৯৮৬) এবং রাম রহিম জন (১৯৮৯) চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে তিনবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) পুরস্কার লাভ করেন।

সারাবাংলা/এজেডএস

অঞ্জনা

বিজ্ঞাপন

চলে গেলেন প্রবীর মিত্র
৫ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪২

আরো

সম্পর্কিত খবর