না ফেরার দেশে বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের চিত্রনায়িকা অঞ্জনা। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন এই অভিনেত্রী।
এর আগে গত এক সপ্তাহ রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের সিসিইউ বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন অঞ্জনা। নতুন বছরের প্রথম দিন অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেদিন রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হলেও শেষ রক্ষা হলো না। সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন এই অভিনেত্রী।
পারিবারিক নাম অঞ্জনা রহমান। ১৯৬৫ সালের ২৭ জুন ঢাকায় একটি সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্ম হয় এই শিল্পীর। ছোটবেলা থেকেই নৃত্যের প্রতি তার আগ্রহের কারণে তার বাবা মা তাকে নাচ শিখতে ভারতে পাঠান। সেখানে ওস্তাদ বাবুরাজ হীরালালের কাছে কত্থক নাচের তালিম নেন তিনি।
চলচ্চিত্র জগতে আসার আগে একজন নামী নৃত্যশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন তিনি। জানা যায়, জাতীয় নৃত্য প্রতিযোগিতায় পরপর তিনবার প্রথম হওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আয়োজিত এশিয়া মহাদেশীয় নৃত্য প্রতিযোগিতাতেও প্রথম হয়েছিলেন এই অভিনেত্রী।
অঞ্জনার অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত সেতু চলচ্চিত্র দিয়ে। তবে তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র শামসুদ্দিন টগর পরিচালিত দস্যু বনহুর। যা মুক্তি পেয়েছিল একই বছরে। রহস্য ভিত্তিক এই ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন সোহেল রানা। উল্লেখ্য নায়ক রাজ রাজ্জাকের সঙ্গেও ৩০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন অঞ্জনা। ১৯৮৯ সালে ভারতের সুপারস্টার মিঠুন চক্রবর্তী সাথে অর্জুন চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসিত হন এই গুণী অভিনেত্রী।
বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, নেপাল, থাইল্যান্ড ও শ্রীলংকাসহ বহু দেশে ব্যবসা সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আন্তর্জাতিক ভাবে ব্যাপক প্রশংসিত হন তিনি।
অঞ্জনা অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের সংখ্যা প্রায় ৩ শতাধিক। ১৯৮১ সালে ‘গাংচিল’ এবং ১৯৮৬ সালে ‘পরিণীতা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য দুইবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন অঞ্জনা রহমান। এছাড়াও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে তিনবার বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন তিনি।