Thursday 16 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ফেউ’–এর ভয়াবহ শুটিং অভিজ্ঞতার গল্প শোনালেন শিল্পীরা

এন্টারটেইনমেন্ট করেসপনডেন্ট
১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:২৬ | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:২৯

ফেউ শব্দের আভিধানিক অর্থ শৃগাল বা অন্যভাবে বললে বাঘের পেছন থেকে ডেকে ডেকে বাঘের আগমন জানিয়ে দেয় এমন শৃগাল। অর্থাৎ চালাক প্রকৃতির বলা যায়। অনুসরণকারী হিসেবেও ফেউ–এর ব্যবহার দেখা যায়। ফেউলাগা মানে কারও পেছনে লেগে তাকে ক্রমাগত উত্ত্যক্ত বা বিরক্ত করা।

চরকি অরিজিনাল সিরিজ ‘ফেউ’–এর নামকরণের উপরের সবগুলো দ্যোতনাই নিহিত। ১৬ জানুয়ারি বিকেলে চরকির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ পেয়েছে ‘ফেউ’–এর টিজার। যেখানে একটি সংলাপে শোনা যায়, ’ও সুনীল দা, ফেউ কারা?’ উত্তরে শোনা যায়, ’এজেন্ট। সরকারি গোয়েন্দাগো এজেন্ট কয়।’

বিজ্ঞাপন

‘ফেউ’–এর নির্মাতা সুকর্ন সাহেদ ধীমান বলেন, “পুরো গল্প জুড়েই ফেউ শব্দটার উপস্থিতি আছে। গল্পের রাজনৈতিন বর্ণনাতেও ফেউ প্রাসঙ্গিক। মানুষের স্বভাবজাত আতংক, ভয় যখন দৈনন্দিন হয়ে যায় তখনও সেটা ফেউ শব্দ দিয়ে বোঝান সম্ভব। এই আতঙ্কের মধ্যে বসবাস এবং উতড়ে যাওয়ার গল্প নিয়ে ‘ফেউ’ সিরিজ। তাই সিরিজের নামকরণ ‘ফেউ’ সবচেয়ে যৌক্তিক মনে হয়েছে।”

‘ফেউ’ এর টিজার প্রকাশের মধ্য দিয়ে এর অভিনয়শিল্পী এবং মুক্তির তারিখও ঘোষণা করা হয়েছে। সিরিজটি চরকিতে আসছে ৩০ জানুয়ারি। আর এতে অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, চঞ্চল চৌধুরী, মোস্তাফিজুর নূর ইমরান, তানভীর অপূর্ব, হোসেন জীবন, তাহমিনা অথৈ, রিজভি রিজু, ফাদার জোয়া, বাবলু বোস, এ কে আজাদ সেতু।

সিরিজে কাজী চরিত্রে অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান। চরিত্র নিয়ে তিনি বলেন, ‘কাজী চরিত্রটি এই এলাকায় প্রভাবশালী মানুষ। রাজনীতির সঙ্গে সে খুব বেশিভাবে জড়িত। সব জায়গায় তার কর্তৃত্ব আছে কিন্তু সেটা সে বোঝাতে চায় না। এর মধ্য দিয়ে ওই এলাকার রাজনীতি বেশ ভালোভাবে উঠে এসেছে বলে আমার মনে হয়।’

বিজ্ঞাপন

তারিক আনামা খান জানান, খুলনা অঞ্চলে তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা কিন্তু তিনি কখনও সুন্দরবন দেখেননি। এবারই প্রথম তিনি সুন্দরবনের একদম ভেতরে গিয়ে শুটিং করেছেন। অভিনেতা বলেন, “আামার এলাকা জন্য ভাষার ব্যবহারেও আমার খুব আরাম লেগেছে। কিছু বিষয় কানে লেগে আছে। আমাকে দেখে অনেকে বলেছে, ’উরে বাবারে আপনারে এতদিন পরে দেখলাম, সেই ছোট বেলায় দিখিছি। টেলিভিশনে দেখতি যাতাম ৫ মাইল দূরি। উরি আল্লাহ এ কি দেখতিছি, আপনারে একটু ছুঁয়ে দেখি।’ সাধারণ ভাষায় হৃদয়ের কথা বলে দিল, খুব ভালো লেগেছে আমার।”

চঞ্চল চৌধুরী অভিনয় করেছেন সুনীল চরিত্রে। সিরিজে তিনি একজন ফটোগ্রাফার। ফেউ–তে ইতিাসের একটা ছায়া রয়েছে, প্রেক্ষাপট রয়েছে। সেই ঘটনাগুলোর অনেক তথ্য সুনীল তার ক্যামেরায় ধরে রাখে বলে জানান চঞ্চল চৌধুরী।

চঞ্চল চৌধুরী তার শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা যখন শুটিং করেছি তখন ছিল প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। মাস খানেক সুন্দরবনে শুটিং হয়েছে, যার মধ্যে আমি ছিলাম ২০ দিনের বেশি। রাতে যখন লঞ্চে ঘুমাতাম, খুব ঠাণ্ডা লাগত। আমি শিতের জামা–কাপড় পরেই ঘুমাতাম। তবে ঠাণ্ডার চেয়েও ভয়ের বিষয় ছিল কুমির। আমাদের লঞ্চ যেখানে নোঙর করা ছিল, সেখানে ছিল কুমিরটা। সকালে জানালা দিয়ে মুখ বের করলেই কুমিরসহ বিভিন্ন পশু–পাখি দেখা যেত। আমরা লঞ্চ থেকে শুটিং স্পটে যেতাম ছোট ছোট ট্রলারে। রাতেও শুটিং করতে হতো। খুব কঠিন পরিস্থিতি ছিল।’

মার্শাল চরিত্রে একদম অন্যরকম একটা লুকে অভিনয় করেছেন মোস্তাফিজুর নূর ইমরান। চরিত্রটি ও সিরিজের জন্য দেড় বছর সময় নিয়েছেন তিনি। বলেন, ‘পরিচালক যখন এই গল্প এবং মার্শাল চরিত্রটা শোনায়, তখন এতটাই উচ্ছ্বসিত ছিলাম যে, চরিত্র অনুযায়ী প্রস্তুত হতে কতটা সময় লাগবে বা কী হবে সেসব মনেই আসেনি বা ভাবিনি। কাজটা সুন্দরবনে হয়েছে। সেখানকার একটা চরিত্রের শারীরিক ভাষা, দর্শন, আরও ডিটেইল কীভাবে করা যায় সেগুলোর প্রস্তুতি নিয়েছি। চুল–দাড়ি বড় করতে হয়েছিল। এটা তো দেখা যায় কিন্তু ভেতরে এক রকম প্রস্তুতি নিতে হয় যেটা দেখা যায় না।’

নূর ইমরান জানান, ‘ফেউ’–এর শুটিং অভিজ্ঞতা ভয়াবহ। সুন্দরবনের এমন সব জায়গায় কাজ করতে হয়েছে, যেখানে কখনও শুটিং হয়নি। ওসব জায়গা আমাদের শুটিং উপযোগী করে প্রস্তুত করতে হয়েছে।’

১৯৭৯ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পরগণা জেলার দ্বীপ মরিচঝাঁপিতে ঘটে যাওয়া গণহত্যার ছায়া অবলম্বনে ‘ফেউ’ নির্মিত হলেও সিরিজটি ফিকশনাল। এর গল্প লিখেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান, রোমেল রহমান এবং চিত্রনাট্য করেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান, সিদ্দিক আহমেদ। ইতিহাসের সঙ্গে নিজের দেখা চরিত্র, নিজের জানা ঘটনা, নিজের অঞ্চলের গল্প সিরিজে তুলে ধরেছেন বলে জানান নির্মাতা।

সারাবাংলা/এজেডএস

চঞ্চল চৌধুরী ফেউ

বিজ্ঞাপন

বাসচাপায় পথচারী নিহত
১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৩৩

ইটভাটার আগুনে পুড়ে এসআইর মৃত্যু
১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:২৮

আরো

সম্পর্কিত খবর