নারী নিয়োগে বাধা নেই বৃটিশ আর্মির বিশেষ শাখায়
২৬ অক্টোবর ২০১৮ ১৪:৫৩
রোকেয়া সরণি ডেস্ক ।।
যুক্তরাজ্যের বিশেষ সামরিক বাহিনীগুলোর চ্যালেঞ্জিং পদগুলোতে নারী নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হয়েছে। এতদিন বিশেষ বাহিনীগুলোতে নারীরা কেবল গোয়েন্দা বিভাগ ও চিকিৎসা বিভাগে কাজ করতে পারতেন। বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ায় এখন তারা বাকি সব বিভাগেও আবেদন করতে পারবেন।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গভিন উইলামসন স্যালিসবিউরি প্লেইনে বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) এক সামরিক প্রশিক্ষণের সময় এ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, এখন থেকে স্পেশাল বোট সার্ভিস (এসবিএস) এবং স্পেশাল এয়ার সার্ভিসে (এসএএস) যেকোনো পদে নারীদের নিয়োগে আর কোনো বাধা নেই।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে সামরিক বাহিনীগুলোর বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা উদাহরণ তৈরি করার মতো কাজ করে যাচ্ছেন। তাই আজ অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, আজ থেকে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আমাদের সশস্ত্র বাহিনীগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে লৈঙ্গিক পরিচয়ের বদলে দক্ষতাকে বিবেচনা করা হবে।
নারীদের শারীরিক সক্ষমতা পুরুষের তুলনায় কম— এমন অজুহাতে এতদিন যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন পদে নারীদের নিয়োগ বন্ধ ছিল। সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল স্যার নিক কার্টার এই নিষেধাজ্ঞার বিপক্ষে মত দেন। এর মাধ্যমে ব্রিটেন আমেরিকা, ইসরায়েল ও অস্ট্রেলিয়ার সমকক্ষ হলো।
বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার ফলে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে যুক্তরাজ্যের নারীরা সেনাবাহিনীর যেকোনো বিভাগে নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর সেনাবাহিনীতে কর্মরত নারীদের জন্য পদাতিক সৈন্যদলে বদলির আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া বৃহস্পতিবার থেকেই উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, ২০১৬ সালে ওই সময়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেনাবাহিনীতে কর্মরত নারীদের অবস্থান উন্নয়নে সব ধরনের বাধা দূর করা হবে, তাদের উচ্চপদ দেওয়া হবে।
যুক্তরাজ্যের ট্যাংক গোলন্দাজ বাহিনীতে ল্যান্স কর্পোরাল হিসেবে কাজ করেন ক্যাট ডিক্সন। তিনি বলেন, আমি এখানে সাচ্ছন্দ্যে কাজ করি এবং নিজেকে কোনোভাবেই আলাদা মনে করি না। নিজের মাঝে কোন বদলও অনুভব করি না।
অন্য যারা চ্যালেঞ্জিং কাজ করতে আগ্রহী, তাদের উদ্দেশে ডিক্সন বলেন, এর আগে কতজন নারী এই কাজ করেছে, সেই চিন্তা না করেই কাজটা শুরু করা উচিত এবং সেই কাজে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টাই করে যেতে হবে।
নারী হিসেবে নিজেকে আলাদা করে প্রমাণের কোনো চাপ আছে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যারাই কাজ করে, তাদের প্রত্যেককেই চাপে থাকতে হয়। যে কেউ এখানে কাজ করতে পারে না।
তবে এই বিধিনিষেধ উঠে গেলেও বিশ্বের অন্যতম কঠিন কাজের জন্য পরিচিত বিশেষ বাহিনীর (এলিট ফোর্সের) নিয়োগে কোনো পরিবর্তন আসবে না। এই বাহিনীর সদস্যদের বিভিন্ন সময় কুচকাওয়াজ, ব্রেকন বিকনের রুক্ষ পাহাড়ি অঞ্চলে ভারী অস্ত্রশস্ত্র বয়ে নেওয়ার মতো কঠিন ও কষ্টসাধ্য কাজ করতে হয়।
সারাবাংলা/আরএফ
গভিন উইলিয়ামসন জেনারেল নিক কার্টার যুক্তরাজ্য যুক্তরাজ্য সেনাবাহিনী