Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সন্তান ধারণে পিছিয়ে যায় নারীর কর্মজীবন


২৯ মে ২০১৯ ১৫:৪৭

সন্তানের জন্মের পর বাবাদের জীবন খুব একটা না বদলালেও নাটকীয় পরিবর্তন আসে মায়ের জীবনে। সন্তানের জন্মের পর একজন বাবাকে চাকরি ছাড়তে হয় না বা দীর্ঘদিন ছুটি কাটাতে হয় না। কিন্তু একজন মাকে দীর্ঘদিন ছুটি কাটাতে হয়। অনেক সময় সন্তানের দেখাশোনার জন্য চাকরি ছেড়েও দিতে হয়। এতে তারা কর্মজীবনে পিছিয়ে পড়েন। ফলে, সমাজে নারী-পুরুষের সমতার ক্ষেত্র বাধাগ্রস্ত হয়।

অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অব ফ্যামিলি স্টাডিজের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, মাতৃত্বের কারণে একজন নারীর কর্মজীবন পুরোপুরি বদলে যায়।  কিন্তু একজন বাবার কর্মজীবন অতটা বদলায় না। বাচ্চা যখন ছোট থাকে, তখন একজন মা খুব অল্প সময়ই বাইরে কাজ করতে পারেন। কারণ, তাকেই বাচ্চার দেখাশোনা করতে হয়। আর বাচ্চা বড় হতে হতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা পার্ট টাইম বা খণ্ডকালীন কাজ করার সুযোগ পান তারা। কিন্তু বেশিরভাগ পুরুষই সন্তানের জন্ম থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত ফুল-টাইমই কাজ করতে পারেন। বাবা হওয়ার পর পুরুষদের খণ্ডকালীন কাজ করতে দেখা যায় না বললেই চলে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, জেন্ডার ইকুইটি ইন ওয়ার্কপ্লেস এজেন্সির এক গবেষণা বলছে, মা-বাবা দু’জনের জন্যই প্যারেন্টাল লিভ বা সন্তানের জন্মগ্রহণের সময়ে ছুটি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে পুরুষদের এই ছুটি খুব একটা নিতে দেখা যায় না, সাধারণত নারীরাই এই ছুটি নিয়ে থাকেন।

গবেষণাগুলো বলছে, পুরুষ হবে পরিবারের প্রধান আয়কারী আর নারী ঘর সামলাবে ও বাচ্চা মানুষ করবে— এমন ধারণা থেকে এখনো আমাদের সমাজ বের হতে পারেনি। ফলে একটি সন্তানের জন্মের পর সে বেড়ে ওঠার সময় তার সব দায়িত্ব পালন করতে হয় মা’কে। প্রয়োজনে তাকে ফুল-টাইম চাকরি ছেড়ে পার্ট টাইম চাকরি নিতে হয়। কখনো কখনো চাকরিই ছেড়ে দিতে হয়। কিন্তু ভালো সুযোগ থাকলেও বাবাকে কখনো চাকরি ছেড়ে দিতে হয় না বা পার্ট টাইম চাকরিও নিতে হয় না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই পরিবারে মায়ের অর্থনৈতিক অবদান কমে যায়। আর বেশি উপার্জন করায় বাবার প্রাধান্যও বেড়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

গবেষণাগুলো বলছে, এই অবস্থার কারণে পারিবারিক ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার হন। যে সঙ্গীর আয় বেশি, তিনি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, নগদ টাকা, ইনকাম স্টেটমেন্ট, আর সম্পদে সঙ্গীর অ্যাকসেস বা প্রবেশ সীমাবদ্ধ করে দেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর শিকার হন নারীরা। ফলে নারীর জীবনে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হয়।

এমনকি দাম্পত্য জীবনে একজন নারী যদি অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার নাও হন, আয় কমে যাওয়ায় পরিবারে তার অবস্থান অনেকটাই নড়বড়ে হয়ে যায়। যার ফলে যখন বিয়ে ভেঙে যায়, তখন একজন নারী তার ‘কম আয়’ নিয়ে খুবই ভঙ্গুর অবস্থায় থাকেন।

এই প্রবণতা কেবল নারী নয়, গোটা সমাজের জন্যই ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণায়। গবেষকরা বলছেন, একজন নারীকে সন্তান লালন-পালনের জন্য কাজ থেকে বিরতি নিতে হয় বা কাজ করা বন্ধ করে দিতে হয়। এতে করে তারা উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতে পারে না। ফলে, ব্যবসা বা চাকরির ক্ষেত্রে শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং পুরুষরাই উচ্চপদে আসীন থাকে প্রায় সব জায়গায়। তাই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও পুরুষের আধিপত্য বজায় থাকে।

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

কর্মজীবী নারী কর্মজীবী মা নারীর কর্মজীবন নারীর জীবন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ইনজুরিতে মৌসুম শেষ রদ্রির
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:২৮

সম্পর্কিত খবর