কখনও কি আকাশের দিকে তাকিয়ে কোনও সুউচ্চ ভবন দেখে মনে হয়েছে— ‘মানুষ কি সত্যিই এতদূর পৌঁছাতে পারে?’ আজকের দিনটি সেই ভাবনারই উদযাপন— স্কাইস্ক্র্যাপার ডে।
বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ৩ জুলাই পালিত হয় এই দিনটি। সুউচ্চ ভবন বা ‘গগনচুম্বী অট্টালিকা’কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আধুনিক নগরায়নের ইতিহাস, প্রযুক্তি, এবং কল্পনার বিস্ময়কে সম্মান জানানো হয় আজ।
স্কাইস্ক্র্যাপার মানে কী?
‘স্কাইস্ক্র্যাপার’ শব্দের অর্থ—আকাশ ছুঁয়ে ফেলা। এটি মূলত এমন একধরনের ভবন যা অনেক উঁচু এবং আধুনিক কাঠামোতে নির্মিত। ২০ তলা বা তার চেয়ে বেশি উচ্চতার ভবনকে সাধারণত স্কাইস্ক্র্যাপার বলা হয়।
আজকের এই দিনটি একদিকে যেমন আধুনিক স্থাপত্যের নান্দনিকতা ও প্রযুক্তির অগ্রগতিকে তুলে ধরে, অন্যদিকে মানুষের সীমাহীন কল্পনাশক্তি ও প্রয়োগশীলতার উদাহরণ হিসেবেও দাঁড়ায়।
কেন ৩ জুলাই?
এই দিনটি স্কাইস্ক্র্যাপার ডিজাইনের জনক হিসেবে পরিচিত বিখ্যাত স্থপতি লুইস সুলিভান-এর জন্মদিনকে স্মরণ করেই বেছে নেওয়া হয়েছে। তিনি ছিলেন এমন একজন যিনি ‘ফর্ম ফলোস ফাংশন’ দর্শনের প্রবক্তা, এবং যার হাতে জন্ম নেয় আধুনিক উঁচু ভবনের ধারণা।
স্থাপত্যের দৃষ্টিনন্দন কিছু স্কাইস্ক্র্যাপার _
বুর্জ খলিফা (দুবাই) – বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন, ৮২৮ মিটার
শাংহাই টাওয়ার (চীন) – ৬৩২ মিটার
অ্যাবরাজ আল বাইত (সৌদি আরব) – ৬০১ মিটার
ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার (নিউ ইয়র্ক) – ৫৪১ মিটার
স্কাইস্ক্র্যাপার কেবল ভবন নয়, এটি প্রতীক
এই সব সুউচ্চ ভবন শুধুমাত্র ইট-পাথর-গ্লাসের সমন্বয়ে গড়া স্থাপনা নয়—
স্কাইস্ক্র্যাপার হল সাহসের প্রতীক। এটি নগরের স্পিরিট, প্রযুক্তির জয় এবং মানুষের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার এক অনন্য দলিল।
বাংলাদেশেও?
বাংলাদেশে এখনো বিশ্বমানের স্কাইস্ক্র্যাপারের উপস্থিতি খুব সীমিত হলেও ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি শহরে ৩০ তলার ওপরে কিছু ভবন গড়ে উঠছে। ভবিষ্যতের বাংলাদেশে হয়তো আমরা নিজস্ব স্কাইস্ক্র্যাপার নিয়েই গর্ব করতে পারবো।
কীভাবে উদযাপন করবেন?
আর্কিটেকচারের বই বা ডকুমেন্টারি দেখতে পারেন,
প্রিয় কোনো স্কাইস্ক্র্যাপারের ছবি পোস্ট করুন,
স্কাইলাইনের ছবি এঁকে শেয়ার করতে পারেন সোশ্যাল মিডিয়ায়,
ঢাকার কোনো টাওয়ার থেকে সূর্যাস্ত দেখার পরিকল্পনা করতে পারেন আজ!
শেষ কথা _
স্কাইস্ক্র্যাপার ডে আমাদের মনে করিয়ে দেয়—যেখানে মানুষ একদিন ঘর বানিয়েছিল মাটির, আজ সে গড়ছে ভবিষ্যৎ—আকাশের কোণায় কোণায়। আজকের দিনে আমরা সম্মান জানাই সেই সব স্থপতি, নির্মাণ শ্রমিক, ও স্বপ্নবান মানুষদের, যাদের কারণে ‘আকাশ ছোঁয়া’ কথাটি আর শুধু কবিতায় সীমাবদ্ধ নেই।