এমন একটি অ্যাপ আসছে, যে অ্যাপে ইন্টারনেট, কেন্দ্রীয় সার্ভার, ফোন নম্বর বা ই-মেইল-এমন কোনো কিছুর-ই প্রয়োজন হবে না। তাহলে প্রশ্ন আসতেই পারে এটি চলবে কিভাবে? উত্তর হলো এটি কাজ করবে ব্লুটুথ নেটওয়ার্কে। যার নাম ‘বিটচ্যাট’।
আর নতুন এই অ্যাপটি আনলেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারের বর্তমান সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সিইও জ্যাক ডরসি।
গত রোববার একটি পোস্টের মাধ্যমে ডরসি জানান, অ্যাপটি এখনও পরীক্ষামূলক অবস্থায় রয়েছে এবং এটির বিষয়ে ব্যবহারকারীরা অনেক আগ্রহী। টেস্টফ্লাইট নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে বর্তমান সংস্করণটি চাইলে ব্যবহার করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। ইতোমধ্যে অ্যাপটি হোয়াইট পেপার গিটহাবে উন্মুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, হোয়াইট পেপার এমন একধরনের ডকুমেন্ট বা নথি, যেখানে নতুন প্রযুক্তি বা অ্যাপের কাজ করার পদ্ধতি, উদ্দেশ্য ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ বিস্তারিতভাবে লেখা থাকে। এই নথির মাধ্যমে মানুষ বুঝতে পারেন অ্যাপটি কীভাবে কাজ করে।
ডরসির দাবি, এটি তার ব্যক্তিগত গবেষণার অংশ, যেখানে তিনি ব্লুটুথ মেশ নেটওয়ার্ক, রিলে, ‘স্টোর অ্যান্ড ফরোয়ার্ড’ মডেল এবং এনক্রিপশন কৌশল নিয়ে কাজ করেছেন।
অ্যাপটির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো— ‘ব্রিজ’ ডিভাইস। এগুলো একাধিক ব্লুটুথ ক্লাস্টারকে সংযুক্ত করে পুরো নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করতে সাহায্য করে। বার্তাগুলো শুধু ব্যবহারকারীর ডিভাইসেই সংরক্ষিত থাকে, ডিফল্টভাবে তা মুছে যায় এবং কোনো কেন্দ্রীয় সার্ভারে যায় না। এটি ডরসির দীর্ঘদিনের গোপনীয়তা ও সেন্সরশিপ বিরোধী অবস্থানের প্রতিফলন।
হংকংয়ের ২০১৯ সালের আন্দোলনে ব্যবহৃত ব্লুটুথ-ভিত্তিক অ্যাপের মতো বিটচ্যাটও ইন্টারনেট বিচ্ছিন্নতা, নজরদারি কিংবা ব্লকড অবস্থায়ও কার্যকর থাকার উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। এটি আন্দোলন, জরুরি অবস্থা বা অবরোধ চলাকালীন যুক্ত থাকার জন্য সেন্সরশিপ প্রতিরোধী একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করতে পারবে।
অ্যাপটিতে গ্রুপ চ্যাট বা ‘রুম’-এর সুবিধাও রয়েছে, যেগুলো হ্যাশট্যাগ ও পাসওয়ার্ড দিয়ে নিরাপদ করা যায়। এ ছাড়া বার্তাগুলো ‘স্টোর অ্যান্ড ফরোয়ার্ড’ প্রযুক্তির মাধ্যমে সাময়িকভাবে অফলাইনে থাকা ব্যবহারকারীর কাছেও পৌঁছানো সম্ভব।
ভবিষ্যতের আপডেটে ওয়াইফাই ডাইরেক্ট ফিচার যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা গতি ও পরিসর বাড়াবে। এর মাধ্যমে ডরসির ‘অফ-গ্রিড’, ব্যবহারকারী-নিয়ন্ত্রিত যোগাযোগ ব্যবস্থার স্বপ্ন আরও এগিয়ে যাবে।
খবর: আমেরিকার সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি।