উচ্চগতির রেল নেটওয়ার্ক, সেরা বিমানবন্দর এবং ভূমিকম্প প্রতিরোধী ভবনের মতো অবকাঠামোগত উন্নতির পর জাপান তার প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে আরও এক ধাপ এগুলো জাপান।
সম্প্রতি জাপানের গবেষকরা প্রতি সেকেন্ডে ১ দশমিক ০২ পেটাবিট (Pbps) গতি অর্জন করেছে। যা চোখের পলকে পুরো নেটফ্লিক্স লাইব্রেরি ডাউনলোড করার মতো ইন্টারনেটের গতি। খবর: ইকোনোমিক টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জুন মাসে জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি (এনআইসিটি) এই রেকর্ড তৈরি করে।
প্রতি সেকেন্ডে দশ লক্ষ বিশ হাজার গিগাবিট ডেটা স্থানান্তর করা হয়েছে, যা বিশ্বরেকর্ড। এটি কোনো পরীক্ষাগারের খেলা নয়।
জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজিসের (এনআইসিটি) একটি প্রতিবেদন অনুসারে, দেশটির ইন্টারনেট ওয়েব ব্রাউজিং এবং ডাউনলোডের গতি যুক্তরাষ্ট্রের গড় ইন্টারনেট গতির চেয়ে ৩৫ লাখ গুণ বেশি।
এই গতি দিয়ে একসঙ্গে এক কোটি ৮কে আল্ট্রা-এইচডি ভিডিও স্ট্রিমিং করা সম্ভব। টোকিও ও নিউইয়র্কের প্রতিটি মানুষকে বিনামূল্যে এইচডি মুভি দেখানো সম্ভব হবে।
এছাড়া এক সেকেন্ডে এক লাখ সাতাশ হাজার পাঁচশত বছরের সমান গান ডাউনলোড করা যাবে এবং উইকিপিডিয়ার সব তথ্য এক সেকেন্ডে দশ হাজার বার ব্যাকআপ নেওয়া যাবে।
গ্রাহক পর্যায়ে এখনো টেরাবাইট গতির ইন্টারনেট আসেনি। তবে সরকার, ডেটা সেন্টার এবং টেলিকম সংস্থাগুলো এই গতিকে তাদের নেটওয়ার্কে আনার চেষ্টা করছে।
জাপানের এই সাফল্য আগামী দিনে সিক্সজি নেটওয়ার্ক, জাতীয় ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক এবং নতুন সাবমেরিন কেবলের রূপরেখা তৈরি করবে।
এনআইসিটির ফোটোনিক নেটওয়ার্ক ল্যাবরেটরি দল সুমিতোমো ইলেকট্রিক এবং ইউরোপীয় অংশীদারদের সহযোগিতায় এই বিশ্বের দ্রুততম ইন্টারনেট উদ্ভাবন করেছে। এই প্রযুক্তিতে ১৯ কোর বিশিষ্ট একটি বিশেষ ফাইবার অপটিক কেবল ব্যবহার করা হয়েছে, যা প্রতি সেকেন্ডে ১ হাজার ৮০৮ কিলোমিটার বেগে ডেটা পাঠাতে সক্ষম।
গ্যাজেটসের তথ্য অনুসারে, জাপানের এই নতুন ইন্টারনেট গতিতে প্রায় ১০০ গিগাবাইট জায়গা দখল করা পুরো ইংরেজি উইকিপিডিয়া এক সেকেন্ডে ১০ হাজার বার ডাউনলোড করা যাবে। এছাড়াও, এক সেকেন্ডের মধ্যে ৮কে মানের ভিডিও ডাউনলোড করা সম্ভব হবে। অপটিক ফাইবার কেবলটি ০.১২৫ মিলিমিটার পুরু, যা বর্তমানে ব্যবহৃত ইন্টারনেট তারের মতোই আকারের।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সুমিতোমো ইলেকট্রিক অপটিক্যাল ফাইবার কেবলটি ডিজাইন করেছে এবং এনআইসিটি একটি আন্তর্জাতিক দলের সহযোগিতায় ট্রান্সমিশন সিস্টেমটি তৈরি করেছে। এনআইসিটির গবেষকরা ট্রান্সমিটার, রিসিভার এবং ৮৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ১৯টি লুপিং সার্কিট ব্যবহার করেছেন। এই লুপের মধ্য দিয়ে সংকেতগুলো রেকর্ড গতিতে ২১ বার মোট ১ হাজার ৮০৮ কিলোমিটার অতিক্রম করেছে এবং ১৮০টি ডেটা স্ট্রিম বহন করেছে।