বছরের পর বছর ধরে স্কুলগামী শিশুদের যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত বাসগুলোর রং দেখে একটি বিষয় স্পষ্ট— সেগুলো প্রায় সব সময়ই উজ্জ্বল হলুদ! কিন্তু কখনো কি আমরা ভেবেছি, কেনো এই রঙই বেছে নেওয়া হয়েছে?
মূলত, এর পেছনে রয়েছে বিজ্ঞান, সচেতনতা ও নিরাপত্তার যৌক্তিক কারণ।
ইতিহাস ও সূত্রপাত _
১৯৩৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম স্কুল বাসের জন্য “ন্যাশনাল স্কুল বাস ইয়েলো” রং নির্ধারণ করা হয়। সেই সিদ্ধান্তের পেছনে ছিলেন শিক্ষা ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা, যারা এমন একটি রং চাচ্ছিলেন যা সহজে চোখে পড়ে এবং দূর থেকে শনাক্ত করা যায়।
কেনো হলুদ?
১. দৃষ্টিসীমায় সবচেয়ে দৃশ্যমান:
উজ্জ্বল হলুদ রং মানুষের চোখ সবচেয়ে সহজে ধরে ফেলতে পারে। বিশেষত ভোর বা সন্ধ্যার আলো-অন্ধকারে এই রঙটি সবচেয়ে ভালোভাবে দৃশ্যমান হয়। এমনকি বৃষ্টির মধ্যে বা কুয়াশার দিনেও এটি চোখে পড়ে।
২. সতর্কতা সৃষ্টি করে:
হলুদ রঙ সাধারণত সাবধানতা ও সতর্কতার প্রতীক (যেমন ট্রাফিক সাইন, রাস্তার ডিভাইডার)। এটি চালকদের দ্রুত মনোযোগ আকর্ষণ করে এবং গাড়ি ধীরগতিতে চালাতে উদ্বুদ্ধ করে।
৩. মানসিক প্রভাব:
হলুদ রং শিশুদের প্রতি একধরনের ইতিবাচক ও সুরক্ষামূলক মনোভাব তৈরি করে। এটি প্রাণবন্ত এবং প্রফুল্লতাও প্রকাশ করে, যা শিশুদের পরিবেশের সঙ্গে মানানসই।
নিরাপত্তা দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ _
হলুদ স্কুল বাসকে দেখে রাস্তায় অন্যান্য চালকেরা সহজেই বুঝতে পারে যে এটি শিশুদের বাহন। ফলে তারা সাবধান হয়ে যায়, গতি কমায় এবং অধিক মনোযোগ দেয়।
শুধু আমেরিকা নয়, বিশ্বজুড়ে _
এই রীতিটি শুধু আমেরিকায় নয়, বাংলাদেশসহ অনেক দেশেই অনুসরণ করা হয়। যদিও কিছু দেশে ডিজাইনে ভিন্নতা থাকতে পারে, তবে হলুদ রঙের গুরুত্ব সর্বত্রই অপরিবর্তনীয়।
শেষ কথা _
একটি রঙ কেবল সৌন্দর্যের বিষয় নয়, কখনো কখনো সেটি হতে পারে জীবন রক্ষাকারী উপাদান। স্কুল বাসের হলুদ রং এরকমই একটি প্রমাণ— যেখানে বিজ্ঞান, মনস্তত্ত্ব এবং নিরাপত্তা একসঙ্গে মিলিত হয়েছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষা দিতে।
তথ্যর উৎস: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক-এ প্রকাশিত ‘রঙ ও দৃশ্যমানতা’ বিষয়ক গবেষণা।