একটা কল্পনা…
মাত্র ১৪ বছর বয়সে বন্ধুদের সাথে শুরু করা এক খেলার মাঝখানে গড়ে উঠলো এক নতুন দেশ— যার নাম ‘দ্য ফ্রি রিপাবলিক অব ভারদিস’।
হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন! ইউরোপের ক্রোয়েশিয়া ও সার্বিয়ার মাঝখানে, দানিয়ুব নদীর তীরে ১২৫ একর জঙ্গলঘেরা এক ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’— যা কেউ-ই নিজেদের দাবি করেনি, সেই সীমানাতেই গজিয়ে উঠেছে এই রহস্যময় ক্ষুদ্র রাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ও প্রতিষ্ঠাতা মাত্র ২০ বছর বয়সী একজন অস্ট্রেলিয়ান যুবক— নাম ড্যানিয়েল জ্যাকসন, পেশায় ডিজিটাল ডিজাইনার। ২০১৯ সালের ৩০ মে, যখন তার বয়স মাত্র ১৮,
তিনি ঘোষণা দেন ভারদিসের স্বাধীনতার!
ড্যানিয়েলের ভাষায়, ‘ভারদিস ছিল আমার কল্পনার একটি খেলা, যা শুরু করেছিলাম ১৪ বছর বয়সে। পরে এটাকে বাস্তবে রূপ দিতে থাকি।’
এক নজরে ‘ভারদিস’ _
আয়তন: ০.৫ বর্গকিলোমিটার,
জনসংখ্যা: প্রায় ৪০০ জন ( তাও আবার অনলাইন নাগরিক),
সরকারি ভাষা: ইংরেজি, ক্রোয়েশিয়ান ও সার্বিয়ান,
মুদ্রা: ইউরো,
যাতায়াত: শুধু ক্রোয়েশিয়ার ওসিজেক অঞ্চল থেকে নৌপথে।
কেন এই জায়গা বেছে নিলেন জ্যাকসন?
এই অঞ্চলের নাম ‘পকেট থ্রি’, যেখানে ক্রোয়েশিয়া ও সার্বিয়ার সীমান্ত বিরোধ দীর্ঘদিনের। আন্তর্জাতিকভাবে কোনো দেশই এই অঞ্চল নিজেদের বলে দাবি করেনি।
এই আইনি শূন্যতার সুযোগেই সেখানে নিজস্ব পতাকা, সংবিধান, মন্ত্রিসভা, এমনকি ‘ডিজিটাল’ নাগরিকত্ব চালু করেছেন জ্যাকসন।
কিন্তু বাধাও এসেছে… ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে, ক্রোয়েশিয়ান পুলিশ ভারদিসে ঢোকার চেষ্টা করতেই ড্যানিয়েল জ্যাকসনসহ আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করে ফেরত পাঠায়। এমনকি আজীবনের জন্য ক্রোয়েশিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয় তার উপর!
জ্যাকসনের অভিযোগ, ‘তারা আমাদের ফেরত পাঠাল, কিন্তু কোনো কারণ দেখাল না। বলল, আমরা নাকি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি!’
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া?
ভারদিস এখনও কোনো দেশের স্বীকৃতি পায়নি। তবে নিউ ইয়র্ক পোস্ট, ইন্ডিপেনডেন্টসহ একাধিক আন্তর্জাতিক মিডিয়া এই ‘মাইক্রোনেশন’ নিয়ে রিপোর্ট করেছে। অনেকেই একে ‘নতুন প্রজন্মের উদ্ভাবনী কল্পনার প্রতীক’ হিসেবে দেখছেন।
তাহলে কি ভারদিস সত্যিই ভবিষ্যতে একটা স্বীকৃত রাষ্ট্র হতে পারবে?
না কি এটা শুধুই থাকবে এক কল্পনার গল্প হয়ে?
তার উত্তর সময়ই দেবে!