ভাবো তো— একটা শহরে ঢুকছো, আর সাইনবোর্ডে লেখা— ‘এখানে মারা যাওয়া যাবে না!’ শুনে হাসি পাবে, তাই না? কিন্তু এটা কোনো মজা নয়— এটা সত্যি।
স্পেনের আন্দালুসিয়া অঞ্চলের গ্রানাডা প্রদেশে আছে এক সুন্দর পাহাড়ি শহর— লানহারন। এখানকার জনসংখ্যা মাত্র কয়েক হাজার, শান্ত পরিবেশ, পরিচিত মিনারেল ওয়াটার, আর প্রচুর পর্যটক। কিন্তু ১৯৯৯ সালে এই শহর একেবারে বিশ্বজোড়া খবরে উঠে আসে— কারণ তখনকার মেয়র হোসে রুবিও এমন এক ঘোষণা দেন, যা শোনামাত্র সবাই অবাক হয়ে যায়— ‘আমাদের শহরে মারা যাওয়া নিষিদ্ধ!’
আসলে তখন লানহারনের কবরস্থান পুরোপুরি ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। নতুন কবরস্থানের জন্য জায়গা ও অনুমতি লাগছিল, কিন্তু সরকার থেকে সেই অনুমতি পেতে সময় লেগে যাচ্ছিল। মেয়র চেয়েছিলেন এই বিষয়টি নিয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে।
তাই তিনি ব্যঙ্গ আর হাস্যরস মিশিয়ে এই ‘আইন’ ঘোষণা করলেন। অর্থাৎ, শহরের সবাইকে বলা হলো— আপনি যদি লানহারনের বাসিন্দা হন, অসুস্থ বোধ করলে, অনুগ্রহ করে অন্য কোথাও গিয়ে মারা যান!
এই ঘোষণা শুনে কেউ রাগ করেনি— বরং সবাই মজা পেয়েছিল। খবর ছড়িয়ে পড়ল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। ফ্রান্স, জাপান, আমেরিকা— সব জায়গায় লানহারনের নাম ছড়িয়ে গেল।
এই হাস্যকর কিন্তু বুদ্ধিদীপ্ত প্রতিবাদের ফলে অবশেষে কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে, আর কিছুদিন পর শহরটি নতুন কবরস্থানের অনুমতি পেয়ে যায়।
আজও লানহারন তার সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য আর এই অদ্ভুত ঘটনার জন্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে। অনেকে শুধু এই মজার কাহিনি শুনেই এখানে ঘুরতে আসে, ছবি তোলে সেই বিখ্যাত সাইনবোর্ডের সাথে।