ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকের মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মে এখন প্রায়ই দেখা যাচ্ছে ভুয়া প্রোফাইল বা ‘ফেক অ্যাকাউন্ট’, যা ব্যক্তিগত সুনাম, মানসিক স্বস্তি এবং আর্থিক নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে উঠেছে। অপরাধীরা অনেক সময় কারও ছবি, নাম, বায়ো কিংবা ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করে প্রতারণা, হয়রানি, গুজব ছড়ানো এমনকি আর্থিক প্রতারণার মতো অপরাধ করে থাকে।
ইনস্টাগ্রামে যদি আপনার ছবি, নাম বা বায়ো হুবহু যদি কেউ কপি করে, আপনার পরিচয়ে অন্যদের মেসেজ পাঠাচ্ছে, টাকা, গিফট বা ব্যক্তিগত তথ্য চাচ্ছে বা আপনার বিরুদ্ধে মিথ্যা দাবি বা কনটেন্ট প্রকাশ করছে তাহলে কি করবেন? আসুন জেনে নেই
নিজের নাম ফেক আইডি’র সব প্রমান রাখুন _
ইনস্টাগ্রামে যদি কেউ আপনার ছবি, নাম বা বায়ো হুবহু ব্যবহার করে, তাহলে প্রোফাইলের স্ক্রিনশট, পোস্ট, ডিএম, ইউজারনেম ও প্রোফাইল লিংক সংরক্ষণ করে প্রমাণগুলো হাতের কাছে রাখতে হবে। এগুলো পরবর্তীতে রিপোর্ট বা আইনগত প্রক্রিয়ায় কাজে লাগবে।
অ্যাপ থেকে রিপোর্ট করতে চাইলে _
* ভুয়া প্রোফাইলে যান,
* ডান দিকের উপরের তিন ডট চাপুন,
* Report > Report Account > It’s pretending to be someone else নির্বাচন করুন। “Me” বা “Someone I know” নির্বাচন করুন। ধাপগুলো অনুসরণ করে সাবমিট করুন।
ওয়েব ফর্ম থেকে রিপোর্ট করতে চাইলে _
ইনস্টাগ্রামের অফিসিয়াল ইমপারসোনেশন রিপোর্ট ফর্ম ব্যবহার করুন। এরপর সরকারি আইডি (পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জাতীয় পরিচয়পত্র ইত্যাদি) আপলোড করে পরিচয় যাচাই করুন।ইনস্টাগ্রাম সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত জানায়।
ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে যাতে কেউ প্রতারিত না হয়, সেজন্য দ্রুত বন্ধু ও অনুসারীদের জানাতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, স্টোরি বা পোস্টে লিখতে পারেন-
‘আমার নামে একটি ভুয়া ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট চালু হয়েছে। দয়া করে কেউ ওই অ্যাকাউন্টে সাড়া দেবেন না বা ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না। আমি রিপোর্ট করেছি, আপনারাও রিপোর্ট করুন।’
যদি রিপোর্টের পরও অ্যাকাউন্ট সক্রিয় থাকে তাহলে পুনরায় রিপোর্ট করুন, ইনস্টাগ্রাম হেল্প সেন্টারে যোগাযোগ করুন, ব্যবসায়িক বা ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট হলে Meta Business Support ব্যবহার করতে পারেন।
আইনগত ব্যবস্থা _
* যদি প্রতারণা, আর্থিক জালিয়াতি, মানহানি বা হয়রানির মতো গুরুতর অপরাধ হয়, তবে স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় অভিযোগ জানান।
* সাইবার ক্রাইম পোর্টালেও অভিযোগ জানাতে পারেন।
স্থানীয় থানায় বা সাইবার ক্রাইম সেলে অভিযোগ জানান _
* আইনজীবীর পরামর্শ নিয়ে নোটিশ বা টেকডাউন অর্ডারের ব্যবস্থা নিন
* যদি ভুক্তভোগী নাবালক হয়, অভিভাবক তার হয়ে রিপোর্ট করতে পারবেন এবং শিশু সুরক্ষার কারণে ইনস্টাগ্রাম দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারে।
প্রতিরোধের উপায় _
* টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখা,
* প্রোফাইল প্রাইভেট রাখা,
* ব্যক্তিগত তথ্য (ফোন নম্বর, জন্মতারিখ, অবস্থান) প্রকাশ না করা,
* ছবিতে ইউনিক ওয়াটারমার্ক ব্যবহার করা,
* নিজের নাম বা ইউজারনেম দিয়ে নিয়মিত সার্চ করা।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া