বর্তমান বিশ্ব এখন ভার্চুয়াল কাজের উপর অনেক বেশী নির্ভরশীল। হোক তা অফিসিয়াল বা পড়াশোনার কোনো কাজে। ডিজিটাল দুনিয়ায় কম্পিউটার সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান না থাকলে চাকুরী পেলেও তা টিকবে কিনা বলা মুশকিল। সব ধরনের চাকুরীর ক্ষেত্রে এ কথা প্রযোজ্য। অফিস ও শিক্ষাজীবনে কমই এমন মানুষ আছেন যারা মাইক্রোসফট অফিস ব্যবহার করেন না। এক্সেলের টেবিলে হিসাব কষা, আউটলুকের ইনবক্স গোছানো কিংবা পাওয়ারপয়েন্টে ঝকঝকে প্রেজেন্টেশন তৈরিতে এর ছোঁয়া রয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, যারা প্রতিদিন অফিস ব্যবহার করেন, তাদের অনেকেই জানেন না এর ভেতরে লুকিয়ে থাকা অসংখ্য সুবিধার কথা।
এই লুকানো ফিচারগুলো জানলে সময় বাঁচে, ভুলের সম্ভাবনা কমে যায় এবং উপস্থাপনা হয়ে ওঠে অনেক বেশি পেশাদার।
এক্সেলে লুকানো সহকারী _
ফর্মুলার বাইরেও এক্সেলে আছে কিছু টুল, যেগুলো জীবনকে সহজ করে দেয়। Flash Fill ডেটার প্যাটার্ন বুঝে বাকি অংশ নিজে থেকেই পূরণ করে দেয়। Quick Analysis কয়েক সেকেন্ডেই নির্বাচিত ডেটাকে চার্ট, সারাংশ বা ফরম্যাটে রূপান্তর করে দেয়। Excel Table কেবল সুন্দর ফরম্যাট নয়, বরং ডেটা যোগ হলে টেবিল নিজে থেকেই বড় হয়ে যায়, যা গতিশীল রিপোর্ট তৈরিতে অসাধারণ।
বড় ডেটার শিটে খুঁজে পাওয়া কঠিন হলেও Group Rows ও Columns দিয়ে অপ্রয়োজনীয় অংশ ভাঁজ করে রাখা যায়। Freeze Panes হেডারকে স্ক্রল করার পরও দৃশ্যমান রাখে। আর Go To Special দিয়ে নির্দিষ্ট শর্তে সেল খুঁজে বের করা যায় মুহূর্তেই।
আউটলুক: ইনবক্সের অভিভাবক _
প্রতিদিনের ই-মেইল সামলাতে আউটলুককে বলা যায় এক অদৃশ্য সহকারী। একবার নিয়ম তৈরি করলে নির্দিষ্ট প্রেরকের মেইল স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাঙ্ক্ষিত ফোল্ডারে চলে যায়। গুরুত্বপূর্ণ মেসেজে অটো ক্যাটাগরি বা ফ্ল্যাগ যুক্ত হয়। অটো রিপ্লাই দিয়ে অনুপস্থিতির সময়ে উত্তর পাঠানো যায়, আর চাইলে নির্দিষ্ট সময়ে ই-মেইল পাঠানোর সুবিধাও আছে। Quick Steps নামের ফিচার এক ক্লিকেই একাধিক কাজ সম্পন্ন করে দেয়।
আউটলুকের লুকানো সম্পদ _
কয়েকটি কম পরিচিত ফিচার আউটলুককে আরও শক্তিশালী করে। Focused Inbox গুরুত্বপূর্ণ মেইলগুলোকে আলাদা করে রাখে, Schedule Send দিয়ে মেইল পাঠানো যায় পরবর্তী সময়ে। Voting Buttons ব্যবহার করে সহজেই দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। ক্যালেন্ডার শেয়ার করলে মিটিং শিডিউল করা হয় ঝামেলাহীনভাবে। আলোচনায় কাউকে যুক্ত করতে চাইলে @Mentions ব্যবহার করলেই তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে যান। Search Folders ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ধরণের মেইল সবসময় হাতের কাছে রাখা যায়।
ওয়ার্ড ও পাওয়ারপয়েন্টে সৌন্দর্যের ছোঁয়া _
ওয়ার্ড ও পাওয়ারপয়েন্ট কেবল লেখালেখি বা স্লাইড তৈরির সফটওয়্যার নয়, এগুলোতে লুকিয়ে আছে সৃজনশীলতার এক ভাণ্ডার। Format Painter ব্যবহার করলে এক জায়গার ফরম্যাটিং অন্য জায়গায় সহজেই কপি করা যায়। Reuse Slides ফিচার আগের স্লাইড নিয়ে এসে সময় বাঁচায়। Design Ideas Pane কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে স্লাইড সাজিয়ে তোলে আধুনিকভাবে। Morph Transition যোগ করলে স্লাইডে প্রাণ আসে, উপস্থাপনা হয়ে ওঠে জীবন্ত ও আকর্ষণীয়।
অফিস জুড়ে আরও কিছু সহজ কৌশল_
অফিসের সব অ্যাপে কিছু ব্যবহারযোগ্য ফিচার আছে যা কাজকে করে দ্রুত ও সুবিধাজনক। ব্যবহারকারীরা নিজের মতো করে শর্টকাট বানাতে পারেন। Quick Access Toolbar-এ প্রিয় টুল যোগ করলে সবসময় হাতের নাগালে থাকে। ক্লাউডে রাখা ফাইলের Version History থেকে আগের ড্রাফট ফিরিয়ে আনা যায় বা ভুলে মুছে ফেলা কনটেন্ট উদ্ধার করা সম্ভব। গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট Pin Files করে Recent তালিকার শীর্ষে রাখা যায়।