আজ ১৩ অক্টোবর— বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব ব্যর্থতা দিবস’ (World Failure Day)। ২০১০ সালে ফিনল্যান্ডের কিছু তরুণ উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থী একসঙ্গে এই উদ্যোগ নেন। তাদের লক্ষ্য ছিল একটাই— সমাজে যে ভয়টা তৈরি হয়েছে ‘ব্যর্থতা’ শব্দটিকে ঘিরে, সেটি ভাঙা। কারণ তারা বিশ্বাস করেন, ব্যর্থতা কোনো লজ্জার বিষয় নয়; বরং এটি শেখার সবচেয়ে বড় সুযোগ।
এই দিনটিতে নানা দেশে কর্মশালা, আলোচনা ও অনলাইন ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়। উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী, লেখক, শিল্পী, এমনকি সেলিব্রিটিরাও নিজেদের জীবনের ব্যর্থতার গল্প প্রকাশ্যে শেয়ার করেন। কেউ বলেন হারানো সুযোগের কথা, কেউ ব্যর্থ প্রেম বা ভেঙে যাওয়া স্বপ্নের কথা। তাদের উদ্দেশ্য— সমাজে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া যে, ব্যর্থ হওয়া মানেই পথের শেষ নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ব্যর্থতাকে মেনে নেওয়া মানে নিজের সীমা ও শক্তি দুটোই চিনে নেওয়া। জীবন একটানা সাফল্যের নয়; মাঝেমাঝে হোঁচট খাওয়াই আমাদের শেখায় কীভাবে আরো দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যেতে হয়। ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে দেখা যায়— যারা আজ পৃথিবীকে বদলে দিয়েছেন, তারা সবাই কোনো না কোনো সময় ব্যর্থ হয়েছেন।
থমাস এডিসন একবার বলেছিলেন, ‘I have not failed. I’ve just found 10,000 ways that won’t work.’ অর্থাৎ, তিনি প্রতিটি ব্যর্থতাকেই দেখেছেন শেখার নতুন ধাপ হিসেবে। ঠিক তেমনই, স্টিভ জবস, জে.কে. রাউলিং, এমনকি আমাদের অনেক স্থানীয় উদ্যোক্তাও প্রথমে ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু তারা হাল না ছেড়ে সামনে এগিয়ে গেছেন— সেটিই তাদের সাফল্যের মূল কারণ।
আজকের দিনে যখন প্রতিযোগিতা ও তুলনার চাপে সবাই নিখুঁত হতে চায়, তখন এই দিবসটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়— ভুল করা মানবিক, ব্যর্থ হওয়া প্রয়োজনীয়। কারণ ব্যর্থতার ভেতর দিয়েই জন্ম নেয় আত্মবিশ্বাস, দৃঢ়তা ও নতুন চিন্তা।