ভাবুন তো, আমাদের দেশে যেখানে ২৮ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীরা অধিকাংশই এখনও পড়াশোনা বা চাকরির প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত, সেখানে একজন তরুণ ইতিমধ্যেই গড়ে তুলেছেন ৩৬০ কোটি ডলারের (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪৩,২০০ কোটি) সাম্রাজ্য! বিষয়টি অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই সত্য। তিনি হলেন বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী সেলফ-মেইড বিলিয়নিয়ার আলেকজান্দ্রা ওয়াং (Alexandr Wang)।
স্ট্যানফোর্ড থেকে শুরু
১৯ বছর বয়সে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করছিলেন আলেকজান্দ্রা। তখনই তিনি বুঝতে পারেন, শুধুমাত্র ডিগ্রি নয়, বরং নতুন আইডিয়া ও সাহসী উদ্যোগই বড় সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। তাই তিনি পড়াশোনা ছেড়ে দেন এবং ঝুঁকি নিয়ে শুরু করেন নিজের কোম্পানি। অনেকের কাছে এই সিদ্ধান্ত ছিল বোকামি, কিন্তু আজ সেটাই তাকে বানিয়েছে অনুপ্রেরণার প্রতীক।
স্কেল এআইয়ের জন্ম
বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে আলেকজান্দ্রা প্রতিষ্ঠা করেন স্কেল এআই (Scale AI)। কোম্পানিটি কাজ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) জন্য প্রয়োজনীয় ডেটা লেবেলিং ও প্রসেসিংয়ে। এআই সঠিকভাবে কাজ করার জন্য যে বিপুল ডেটার দরকার হয়, সেটিকে সহজ ও কার্যকরভাবে প্রস্তুত করে দেয় স্কেল এআই।
এই সেবার কারণে গুগল, উবার, ওপেনএআই-এর মতো বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের গ্রাহক হয়ে যায়। অল্প সময়েই ব্যবসাটি আকাশচুম্বী সাফল্য পায়।
বিলিয়ন ডলারের সাম্রাজ্য
২০২৪ সালে স্কেল এআই ফান্ডিং পায় প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার (১০০ কোটি)। এতে কোম্পানির বাজারমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন ডলার (১৩৮০ কোটি ডলার)। আর আলেকজান্দ্রার হাতে থাকা ১৪% শেয়ারের মূল্য এখন প্রায় ৩.৬ বিলিয়ন ডলার (৩৬০ কোটি ডলার)।
এভাবেই মাত্র ২৮ বছর বয়সেই তিনি ঢুকে পড়েছেন বিশ্বের কনিষ্ঠতম বিলিয়নিয়ারদের তালিকায়।
তার সাফল্যের ফর্মুলা
আলেকজান্দ্রার জীবন প্রমাণ করেছে—
ডিগ্রি নয়, দক্ষতাই মূলধন।
সাহস + দক্ষতা + নতুন আইডিয়া = সাফল্য।
ঝুঁকি নিতে ভয় পাওয়া যাবে না।
স্ট্যানফোর্ড ছেড়ে ব্যবসা শুরু করা সহজ ছিল না। কিন্তু বড় স্বপ্ন দেখার সাহসই তাকে আজকের অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে।
তরুণদের জন্য শিক্ষা
অন্যান্য তরুণরা ডিগ্রি বা চাকরির ভরসায় জীবন কাটাতে চায়। কিন্তু আলেকজান্দ্রার সাফল্য শেখায়, প্রযুক্তিই এখন সবচেয়ে বড় সুযোগ। কোডিং, এআই, ডেটা সায়েন্স কিংবা স্টার্টআপ—এসব ক্ষেত্রেই তৈরি হচ্ছে আগামী দিনের পৃথিবী।
তরুণদের জন্য তার বার্তা স্পষ্ট
‘এই যুগে ট্রাডিশনাল ক্যারিয়ারের চেয়ে প্রযুক্তি ও উদ্যোক্তা উদ্যোগ আপনাকে দ্রুত সাফল্য এনে দিতে পারে।’
আলেকজান্দ্রা ওয়াংয়ের গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়—বড় স্বপ্ন দেখুন, ঝুঁকি নিতে শিখুন, আর দক্ষতা অর্জন করুন। হয়তো আগামী দিনের আলেকজান্দ্রা হতে পারেন আপনিই!