আজ ৩ নভেম্বর— বিশ্ব জেলিফিশ দিবস! শুনতে যতটা অদ্ভুত, উদযাপনটা ততটাই মজার। এই দিনটিতে সারা বিশ্বের সামুদ্রিক প্রাণীপ্রেমীরা সমুদ্রের রহস্যময় বাসিন্দা জেলিফিশ-কে একটু বাড়তি ভালোবাসা দেখায়। চলুন, জেলিফিশের জেলেময় জগতে একটু ডুব দিই!
নামেই জেলি, শরীরও জেলি
জেলিফিশ নাম শুনেই মনে হয় এরা নিশ্চয়ই মাছ। কিন্তু না—জেলিফিশ কোনো মাছ নয়! তারা ‘স্নিডেরিয়ান’ (Cnidarian) নামের এক সামুদ্রিক প্রাণীগোষ্ঠীর সদস্য। শরীরের ৯৫ শতাংশই পানি ও জেলির মতো পদার্থে ভরা। তাই ঢেউয়ের সঙ্গে তারা ভাসে, দোলে, যেন সমুদ্রের নাচের শিল্পী।
আলো ছড়ানো সৌন্দর্য
রাতের অন্ধকার সমুদ্রে জেলিফিশ যখন নিজের শরীর থেকে আলো ছড়ায়, তখন দৃশ্যটা হয়ে ওঠে পরীর দেশের মতো। এই আলো জ্বলে ওঠে ‘বায়োলুমিনেসেন্স’ নামে এক বিশেষ প্রক্রিয়ায়। শিকার আকৃষ্ট করা থেকে শুরু করে আত্মরক্ষা—সব কাজেই কাজে লাগে এই প্রাকৃতিক আলো।
সৌন্দর্যের সঙ্গে বিপদও আছে
জেলিফিশ দেখতে যতই সুন্দর, তাদের স্পর্শ কিন্তু বিপজ্জনক! শরীরে থাকা ক্ষুদ্র স্টিং সেল থেকে নির্গত বিষ ত্বকে জ্বালাপোড়া বা কখনও প্রাণঘাতী আঘাত দিতে পারে। তবে বেশিরভাগ জেলিফিশের কামড় শুধু ব্যথা আর লালচে দাগের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
জেলিফিশ খাওয়া যায়!
বিশ্বাস না হলেও সত্যি—এশিয়ার অনেক দেশে জেলিফিশ জনপ্রিয় খাবার! চীন, জাপান, থাইল্যান্ডের বাজারে শুকনো জেলিফিশ বিক্রি হয়, যা সালাদ বা স্যুপে ব্যবহার করা হয়। স্বাদটা নাকি হালকা লবণাক্ত আর ক্রাঞ্চি—একটু জেলি, একটু সাগরের ঘ্রাণ!
সমুদ্রের ভারসাম্য রক্ষাকারী
জেলিফিশ শুধু সুন্দরই নয়, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা ছোট মাছ আর প্ল্যাঙ্কটন খেয়ে সমুদ্রের খাদ্যচক্রে ভারসাম্য রাখে। আবার নিজেরাও বহু মাছ ও কচ্ছপের খাবার।
কীভাবে উদযাপন করবেন?
বিশ্ব জেলিফিশ দিবসে আপনি চাইলে—
ইন্টারনেটে জেলিফিশের ভিডিও দেখে মুগ্ধ হতে পারেন,
শিশুদের সঙ্গে জেলিফিশের কাগজের ক্রাফট বানাতে পারেন,
অথবা কেবল সমুদ্রের এই রহস্যময় প্রাণীগুলোর সৌন্দর্যে ডুবে যেতে পারেন।
শেষ কথা
জেলিফিশ আমাদের শেখায়, নরম আর স্বচ্ছ হয়েও পৃথিবীতে দারুণ প্রভাব ফেলা যায়। তাই আজকের দিনে একটু সময় নিয়ে ভাবুন—আমরা সবাই হয়তো জীবনের বিশাল সমুদ্রে ভেসে চলা একেকটা জেলিফিশ, নিজেদের আলোয় আলোকিত।