ভাবতে পারেন, একটি বার্গার ৩০ বছর পরও একদম অক্ষত! শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও ঘটনাটি একেবারেই সত্যি। ১৯৯৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড শহরে তৈরি হয়েছিল একটি বার্গার, যা আজও পচেনি, গন্ধও হয়নি।
দুই বন্ধুর কিশোর বয়সের কৌতূহল
অস্ট্রেলিয়ান কিশোর কেসি ডিন ও এডুয়ার্ডস নিটস তখন স্কুলে পড়ে। একদিন তারা স্থানীয় একটি ম্যাকডোনাল্ডস থেকে চিজবার্গার অর্ডার করে। খানিকটা খাওয়ার পর বাকি বার্গারটি তারা মজার ছলে রেখে দেয় একটি শেডে। উদ্দেশ্য ছিল না কোনো পরীক্ষা— কেবলই কৌতূহল ও মজা থেকে।
সময়ের সঙ্গে জমে থাকা বিস্ময়
ত্রিশ বছর পরও সেই বার্গারটি দেখতে প্রায় আগের মতোই। কোনো দুর্গন্ধ নেই, কোনো ছত্রাক নেই, শুধু আকারে সামান্য ছোট হয়েছে। বার্গারটি সব সময়ই রাখা ছিল একটি ঠাসা ও শুকনো জায়গায়, যা হয়তো পচন ঠেকাতে সাহায্য করেছে।
ইঁদুরও খায়নি!
ডিন জানিয়েছেন, ‘ইঁদুররা ওই জায়গার প্লাস্টিক ব্যাগ আর কাপড়ের স্তূপ খেয়ে ফেলেছিল, কিন্তু বার্গারটি untouched রেখেছে।’ বিষয়টি শুনে বিজ্ঞানীরাও অবাক— হয়তো সংরক্ষণের ধরন, কম আর্দ্রতা এবং বার্গারের রাসায়নিক উপাদান একে পচতে দেয়নি।
বিজ্ঞানের চোখে রহস্য
ফুড সায়েন্স অনুযায়ী, ম্যাকডোনাল্ডসের মতো ফাস্টফুডে লবণ, চিনি ও প্রিজারভেটিভের পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে জীবাণুর বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। আবার শুষ্ক পরিবেশে আর্দ্রতা না থাকায় পচন প্রক্রিয়াও শুরু হয় না। তাই দীর্ঘদিন পরও এমন খাবার ‘অক্ষত’ থেকে যায়।
বিশ্বের প্রাচীনতম বার্গার
এই বার্গারটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো অক্ষত ফাস্টফুড হিসেবে আলোচিত। কেসি ও নিটস আজও সেটি সংরক্ষণ করে রেখেছেন এক বিশেষ বাক্সে— সময়ের এক অদ্ভুত সাক্ষ্য হিসেবে।
বার্গার থেকে শিক্ষা
এই গল্প শুধু বিস্ময়ের নয়, বরং খাবার সংরক্ষণ ও রাসায়নিক প্রক্রিয়া নিয়ে ভাবনারও। আমরা যা খাই, সেটি কতটা ‘প্রাকৃতিক’— এই প্রশ্নই যেন ফেলে দেয় এক টুকরো পুরোনো বার্গার।