Tuesday 25 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘রিভেঞ্জ ড্রেস’-এ ফিরে এলেন মানবিকতার চিরকালীন রাজকন্যা ডায়না

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
২৫ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:১৬

প্যারিস– সেই শহর, যা বিশ্বের কোটি মানুষের কাছে প্রেম, সৌন্দর্য আর শিল্পের গন্তব্য। কিন্তু একই শহরের একটি রাত ইতিহাসে চিরদগ্ধ হয়ে আছে এক মর্মান্তিক ঘটনার কারণে— ১৯৯৭ সালের আগস্টের সড়ক দুর্ঘটনা, যার পরেই থেমে যায় ব্রিটিশ রাজবধূ প্রিন্সেস ডায়ানার জীবন। প্রায় তিন দশক পর, যেন সেই পথেই ফিরে এলেন তিনি— এইবার মোমে গড়া, তবু প্রতীকীভাবে আরও জীবন্ত, আরও প্রভাবশালী।

ফ্রান্সের বিখ্যাত গ্রেভিন মোম জাদুঘর বৃহস্পতিবার উন্মোচন করেছে তাদের নতুন আকর্ষণ— প্রিন্সেস ডায়ানার মূর্তি। শুধু কোনো রাজকীয় পোশাক নয়, ডায়ানাকে দেখা যাচ্ছে তার সেই খ্যাতিমান ‘রিভেঞ্জ ড্রেস’–এ; কালো রঙের গ্ল্যামারাস অফ-শোল্ডার গাউন, যা তিনি পরেছিলেন ১৯৯৪ সালে, স্বামী প্রিন্স চার্লসের পরকীয়ার খবর প্রকাশ্যে আসার পর। পোশাক শিল্পী ক্রিস্টিনা স্টাম্বোলিয়ানের তৈরি সেই পোশাক শুধু ফ্যাশন– স্টেটমেন্টই ছিল না, ছিল নীরব প্রতিবাদের ভাষা— এক নারীর আত্মসম্মান, শক্তি আর স্বাধীনতার ঘোষণা।

বিজ্ঞাপন

প্যারিসের গ্রেভিন জাদুঘর দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের মূর্তি দিয়ে ভরপুর। রয়েছেন ব্রিটেনের বর্তমান রাজা চার্লস তৃতীয় ও প্রয়াত রানি এলিজাবেথ দ্বিতীয়ও। কিন্তু চার্লস– ডায়ানার দাম্পত্য কাহিনি বিশ্ব রাজনীতি ও রাজপরিবারের ইতিহাসে এতটাই গভীর প্রভাব রেখে গেছে যে দর্শনার্থীরা বহুদিন ধরেই প্রশ্ন করছিলেন— ডায়ানা কোথায়? অবশেষে সেই শূন্যতা পূরণ হয়েছে।

জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানায়, “প্যারিসে তার মর্মান্তিক মৃত্যুর প্রায় ২৮ বছর পরও ডায়ানা বিশ্ব সংস্কৃতির অন্যতম প্রভাবশালী চরিত্র। তার মানবিকতা, পোশাক–রুচি ও স্বাধীনচেতা ব্যক্তিত্ব এখনো মানুষকে অনুপ্রাণিত করে। তাকে সম্মান জানাতেই এই উদ্যোগ।”

২০ নভেম্বর মোমমূর্তির উন্মোচনের পর থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ নিবিষ্ট হয়ে তাকিয়ে থাকছেন সেই চোখের দিকে— যেখানে মোমের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ফুটে উঠেছে এক রাজকন্যার কোমলতা, দৃঢ়তা আর অদ্ভুত এক বিষণ্নতা।

এই মূর্তি যেন স্মরণ করিয়ে দেয়— ডায়ানা ছিলেন শুধু একজন রানি হওয়ার সম্ভাবনাময়ী নারী নন; তিনি ছিলেন স্টাইল আইকন, মানবতার দূত, এবং রাজকীয় সীমারেখা ভেঙে সাধারণ মানুষের কাছে সবচেয়ে কাছের রাজবধূ। তার হাসি, তার সংগ্রাম, তার প্রতিবাদ— সব মিলিয়ে তিনি বিশ্বজুড়ে আজও ‘জনতার রাজকন্যা’।

প্যারিসে তার উপস্থিতি এবার নতুন অর্থে ফিরে এসেছে— একটি শহর, যে তাকে হারিয়েছিল, আজ তাকে আবার বুকে টেনে নিয়েছে সম্মান, স্মৃতি আর ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক হিসেবে।

সারাবাংলা/এফএন/এএসজি